ভারত-শাসিত জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে স্বাধীনতা-পরবর্তী ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সংবিধানে ৩৭০ ধারা অন্তর্ভূক্ত করে ১৯৪৯ সালে। এর ফলে জম্মু-কাশ্মীরের ভারতীয় অংশ পায় বিশেষ মর্যাদা। সেই ৭০ বছরের ‘ঐতিহ্য’-কে তুড়ি মেরে তুলে দিলো ব্যাপক ভোটে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত বিজেপি সরকার।
১৯৪৭ সালে দেশভাগের মধ্য দিয়ে জন্ম নেয় স্বাধীন ভারত ও পাকিস্তান নামের পৃথক রাষ্ট্র। কিন্তু, জম্মু-কাশ্মীরের অধিকাংশ জনগণ মুসলমান হলেও রাজ্যটির হিন্দু রাজা হরি সিং ভারতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, পাকিস্তানি সেনা অভিযান ও স্থানীয় কাশ্মীরী গোত্রপতিদের হরি সিং বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনের প্রেক্ষিতে।
১৯৪৮ সালে জাতিসংঘে কাশ্মীর ইস্যু উত্থাপিত হলে সেখানে কাশ্মীরীদের ভারত অথবা পাকিস্তানে যোগ দেওয়ার বিষয়ে গণভোট অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কিন্তু, সেই গণভোট আজো অনুষ্ঠিত হয়নি। জম্মু-কাশ্মীরের ভারতীয় অংশের জন্যে দিল্লি সরকার বেছে নেয় ‘বিশেষ সুবিধা’ দেওয়ার পথ।
সেই বিশেষ সুবিধার প্রেক্ষিতে জম্মু-কাশ্মীর ভারত ইউনিয়নের অংশ হয়েও ছিলো অন্য রাজ্যগুলো থেকে আলাদা। গতকাল (৫ আগস্ট) অনেকটা আকস্মিকভাবেই সেই বিশেষ সুবিধা সম্বলিত ৩৭০ ধারা বিলুপ্তির ঘোষণা দেন দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শুধু তাই নয়, জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ লাদাখ অঞ্চলকে আলাদা করে ‘জম্মু-কাশ্মীর’ এবং ‘লাদাখ’ নামে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
সেই ঘোষণাটি আকস্মিক হলেও এর পেছনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছিলো দীর্ঘ ও ব্যাপক প্রস্তুতি। ভারতীয় দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে আজ (৬ আগস্ট) জানা যায়, ৩৭০ ধারা তুলে দেওয়ার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জম্মু-কাশ্মীরে পাঠানো হয়েছিলো ২ হাজার স্যাটেলাইট ফোন, ড্রোন ও ৩৫ হাজার বাড়তি সেনা সদস্য। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো সাধারণ মোবাইল ফোন সংযোগ ও ইন্টারনেট সেবা।
মোদি সরকার নিশ্চিত ছিলো যে এমন ঘোষণার পর আবার বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠতে পারে জম্মু-কাশ্মীর। গ্রেপ্তার করা হয়েছে রাজ্যের দুই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ন্যাশনাল কনফারেন্স প্রধান ওমর আবদুল্লাহ এবং পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির মেহবুবা মুফতিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিকদলগুলোর শীর্ষ নেতাদের। কিন্তু, বিজেপির সাবেক রাজনৈতিক মিত্র ও জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা যখন বলেন, “কাশ্মীরে ভারতের আগ্রাসন চলছে” তখন তার বক্তব্যে সেই অঞ্চলের প্রকৃত চিত্রের একটা আভাস পাওয়া যায়।
NB:This post is copied from thedailystar.net
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা