বিদেশ থেকে পণ্য বা সেবা কিনতে আন্তর্জাতিক কার্ডে অনলাইন ট্রানজেকশন অথরাইজেশন ফরম বা ওটিএএফ পূরণের বাধ্যবাধকতা তুলে দেয়া হয়েছে।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেইঞ্জ পলিসি বিভাগ হতে এক সার্কুলার জারি করে এই বাধ্যবাধকতা তুলে দেয়া হয়।
তবে ব্যাংকগুলোকে গ্রাহকের তথ্য যাচাই (কেওয়াইসি) করাসহ এই আন্তর্জাতিক কার্ডে অনলাইন ক্যাসিনো ও গেইম, বিদেশে লটারি, ক্রিপটোকারেন্সি ও বিদেশি শেয়ারবাজারের লেনদেন, ফরেক্স ব্যবসা, দেশে তৈরি পণ্য কেনাকাটায় লেনদেন যেন না করা হয় সেটি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
এর আগে নভেম্বরের ১৪ তারিখ এক সার্কুলারে আন্তর্জাতিক কার্ডে লেনদেনে ওটিএএফ পূরণ করে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে জমা দেয়ার পর তা যাচাই শেষে ব্যাংক অনুমোদন দিলে তবেই অনলাইনে অর্থ পরিশোধ করা যাবে, এমন নির্দেশনা জারি করেছিলো বাংলাদেশ ব্যাংক।
অনলাইনে অবৈধ লেনদেন, জুয়াসহ বিভিন্ন আর্থিক অপরাধ ঠেকাতে এমন নির্দেশনা জারি করলেও এতে ভোগান্তিতে পড়ে দেশের ই-কমার্স, ডিজিটাল মার্কেটিং প্রতিষ্ঠান, অনলাইন ট্রাভেল প্রতিষ্ঠানসহ নানা ধরনের প্রতিষ্ঠান ।
বেশি বেকায়দায় পড়েছেন তথ্যপ্রযুক্তি খাত সংশ্লিষ্টরা, কেননা আন্তর্জাতিক কার্ডের মাধ্যমে তাদের ডোমেইন কেনা, সার্ভার বিল পরিশোধ, অ্যাপ কেনাসহ বিভিন্ন সেবার জন্য বৈদেশিক মুদ্রায় কেনাকাটা করতে হয়। এছাড়া বিশেষ বিড়ম্বনায় পড়েন ফিল্যান্সররা। ।
রোববার সকালে উদ্ভুত বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের উধর্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে বেসিস। এতে অংশ নেন ১১টি ব্যাংকের হেড অফ কার্ডস বা রিটেল কর্মকর্তারা।
বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর জানান, আন্তর্জাতিক কার্ডে অনলাইন লেনদেনের অপরাধ ঠেকানোর যে উদ্দেশ্যে ওটিএএফ পূরণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল তার জন্যে বিকল্প একটি সমাধান দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংককে। ফলে এখন আন্তর্জাতিক কার্ডে অনলাইন লেনদেনে ওটিএএফ পূরণের বাধ্যবাধকতা তুলে দিয়েছে তারা।
এর আগে শুক্রবার দেশের মধ্যে আন্তর্জাতিক কার্ড লেনদেনের জটিলতার বিষয়টি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নজরে আসায় তা শিথিল করার উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
কার্ডে লেনদেনের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নজরে আসায় তিনি এটির সমাধানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বলে জানান পলক। এমন পরিস্থিতিতে বিষয়টির দ্রুত সুরাহা হবে বলে এক ফেইসবুক পোস্টে আশা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
‘এ বিষয়টি আর্কিটেক্ট অফ ডিজিটাল বাংলাদেশ, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ভাইয়ের নজরে আসে এবং তিনি এটি দ্রুত সমাধান করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর কে নির্দেশনা প্রদান করেন।
আশা করছি ফ্রিল্যান্সারদের কল্যাণে এবং আইটি সেক্টরের প্রসারে খুব অল্প সময়ের মধ্যে এই কড়াকড়ি শিথিল করা হবে।’
তার পোস্টের পর অনেকেই এ পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়ে মন্তব্য করেছেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার জারি করে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ঘরে বসে পণ্য কেনার সুবিধা চালু করে ক্রেডিট ও প্রি-পেইড কার্ডে।
এতদিন একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থে এমন কেনাকাটা করা গেলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই নির্দেশনার পর সম্প্রতি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে তার গ্রাহকদের জানানো হয় যে এমন সুবিধা আর দেয়া যাচ্ছে না।
বিষয়টি নিয়ে বেসিস সাত দিন আগেও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করে। ওই বৈঠকে ব্যাংকগুলোর এমন পদক্ষেপ বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণে কার্যকরী ভূমিকা না রেখে বরং ব্যবসায়িক পরিবেশ নষ্ট করে উদ্যোক্তাদের কার্যক্রম ব্যাহত করবে বলে তুলে ধরেন বেসিস প্রতিনিধিরা।
একই সঙ্গে ডিজিটাল বাংলাদেশের চালিকা শক্তি এই প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবসাগুলোকে পর্যায়ক্রমে বন্ধ হয়ে যেতে বাধ্য করবে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য হুমকিস্বরূপ বলেও তুলে ধরেন তারা।
পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল বেসিসের প্রস্তাবনা শোনেন। ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করে প্রস্তাব বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে তখন জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর। টেক শহর।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা