ফাইল ছবি।
শফিকুল ইসলাম
আগামী শনিবার (৩০ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সম্মেলন। ইতোমধ্যে এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নেতৃত্বের বাছাই শুরু করেছে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।
সম্মেলনকে সফল করতে শেষ মুহুর্তে কেন্দ্রীয় নেতারাও সার্বক্ষণিক চোখ-কান খোলা রেখে সর্তকতার সাথে কাজ করছেন। একই সাথে রাজধানীর উত্তর-দক্ষিণ দুই শাখাই গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে শোভা পাচ্ছে নেতাদের ছবি সম্বলিত রঙবেরঙের ব্যানার-ফেস্টুন ও পোস্টার। পাড়া-মহল্লার ছোট-বড় চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সড়ক-মহাসড়কের পাশে গড়ে উঠা হোটেল রেস্তোরাঁয়, অফিস-আদালত, দলীয় কার্যালয়সহ সব জায়গাতেই একটাই আলোচনা।
এবার পুরনো কমিটি কি বহাল থাকবে, নাকি নেতৃত্ব পরিবর্তন হবে। আর পরিবর্তন হলে কারা আসছেন প্রাচ্যের রাজধানীখাত ঢাকা মহানগর দুই অংশে নতুন কমিটিতে। তবে যাই হোক ঢাকা মহানগর দক্ষিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহে আলম মুরাদ কোনো অপকর্ম করেনি, তাই তাকে হয়তো আবারো একইপদে রাখা হতে পারে। সেক্ষেত্রে পরিবর্তন আসতে পারে সভাপতি পদে।
সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যেই ঢাকা মহানগর উত্তর-দেশের বর্তমান কমিটির নেতাদের সাংগঠনিক দক্ষতা যাচাই বাছাই করে নেতৃত্ব পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। ফলে মহানগরের ত্যাগী, অভিজ্ঞ ও ক্লিন ইমেজের নেতারা আশায় বুক বেধে ব্যাপক গণসংযোগে নেমে পড়েছেন। তবে পুরানো নেতাদের না রাখার পক্ষে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিন আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে রাজধানীজুড়ে শোভা পাচ্ছে শত শত পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড। কোথাও কোথাও সড়ক-ফুটপাতে সুবিশাল তোরণ।
এছাড়াও কোনো ওয়ার্ড-থানা কিংবা মহানগরের কোনো পদ-পদবি নেই এমন অনেকেই নিজেদের পরিচিত করতে পোস্টার-ফেস্টুন করেছেন। এসব ব্যানার-পোস্টারকে ছাপিয়ে খোদ আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যেই আলোচনার বিষয় বস্তু হয়ে উঠেছে অনেকেই। তাদের আসল উদ্দেশ্য আত্মপ্রচার। সরকারি দলটির অন্যতম ভ্যানগার্ড হিসেবে পরিচিত ঢাকা মহানগর দক্ষিন আওয়ামী লীগের ৩০নভেম্বর সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নগরজুড়েই এখন নেতাকর্মীদের পোস্টার-ফেস্টুনে চলছে আত্মপ্রচারের প্রতিযোগিতা।
রোববার রাজধানীর ২৩বঙ্গবন্ধু এভিনিউ থেকে শুরু করে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার, যাত্রাবাড়ী-গাবতলী, মিরপুর-১, মিরপুর-১০, আগারগাঁও, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, ফার্মগেট, আজিমপুর, মহাখালী, গুলশান, বাড্ডা, তেজগাঁও, মগবাজার, রমনা, মতিঝিল এলাকা ঘুরে পোস্টার-ফেস্টুনের এ চিত্র দেখা গেছে। এদিকে, মহানগর উত্তর-দক্ষিণের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে নিজের নাম প্রচার করছেন অনেকেই। ঢাকা উত্তরের সভাপতি প্রাথী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছেন-বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা এম এ কাদের খান, সহ-সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, আসলামুল হক।
একই সাথে অবিভক্ত ঢাকা মহানগর কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে রাখা হতে পারে। সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য বর্তমান কমিটির দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-সম্পাদক হাবিব হাসান, এসএম মান্নান কচি, দপ্তর সম্পাদক এম সাইফুল্লাহ সাইফুল, অর্থ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা ওয়াকিল উদ্দিন, সদস্য শফিকুল ইসলাম বাছেকের নাম আলোচনায় রয়েছে।
আরও পড়ুন : উন্নত বাংলাদেশ গড়ার জন্য দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করবে সরকার : প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বর্তমান সভাপতি আবুল হাসনাতকে বাদ দিয়ে এ পদে আলোচনায় আছেন দক্ষিণের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম, নুরুল আমি রুহুল, সহ-সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আবুল বাশারের নাম শোনা যাচ্ছে। দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকনও আলোচনায় রয়েছেন।
তবে বিগত বছরগুলোতে ঢাকা মহানগর দক্ষিন আওয়ামী লীগের সকল গ্রুপিং ভেঙ্গে দিয়ে শুধুমাত্র শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে নেতাকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করা, দলীয় প্রতিটি কর্মসূচিকে সফলভাবে রুপ দেয়া,গুজবপ্রতিরোধে সর্বদায় সর্তক থেকে জনসচেতনাসৃষ্টি করা,বিএনপি-জামায়াতের সরকারবিরোধী সকল কর্মসূচি প্রতিরোধ করাসহ দলের সকল কাজ দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করায় বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মো.শাহে আলম মুরাদকে আবারো স্বপদে বহাল রাখা হতে পারে।
এছাড়াও সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় আছেন বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, কাউন্সিলর গোলাম আশরাফ তালুকদার, সহ-সভাপতি আওলাদ হোসেন এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আখতার হোসেন ও সাবেক ছাত্রনেতা গোলাম সারওয়ার কবীর, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাকে সভাপতি এফ এম শরিফুল ইসলাম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য জানান, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা আগের মতো নেই। ফলে আগের ধারাবাহিকতায় নেতৃত্বে গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় নেতাদের উপস্থিতি নেই। তাই শূন্যতা পুরণ করতে বিকল্প নেতৃত্বের সন্ধান করা হচ্ছে। তবে সব কিছু নির্ভর করছে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপর।
আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্ণেল (অব.) ফারুক খান বলেন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পরিবর্তন আসবে। কারণ দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারেননি। দুই অংশের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী অনেকেই তার সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। তাদের মধ্যে থেকে যোগ্যতাসম্পন্ন নেতারাই আসবেন।
# সাংবাদিক ।
ফেসবুক :
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা