পর্ব - ১
আনন্দ আর কষ্টে মোড়ানো বিজয় দিবস!
তাসকিনা ইয়াসমিন
মুক্তিযুদ্ধটা আমাদের যেভাবে শুরু হয়েছে, সেই সময়টা নিয়ে ধারণা পাওয়া দরকার। এটা বলতেই হবে যে মুক্তিযুদ্ধটা খুব মানে আগাম প্রস্তুতি নিয়ে যেভাবে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় বা বা শুরু হতে পারত সেভাবে তো হয়নি। কারণ মুক্তিযুদ্ধ যখন ৭০ সালে নির্বাচন হয়েছে তখন তো মুক্তিযুদ্ধ হওয়ার কথা সাধারণভাবেই ছিল না। তখন তো একটা পাকিস্তানের সামরিক শাসন চলছে সামরিক সরকার একটা নির্বাচন দিয়েছে । প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের ২৪ বছরে সারা পাকিস্তানভিত্তিক নির্বাচন যে নির্বাচনে সাধারণ মানুষ ভোট দিচ্ছে এবং আর একটা বৈশিষ্ট ছিল যে আমাদের প্রতিনিধিত্ব প্রথমবারের মতো ছিল জনসংখ্যাভিত্তিক প্রতিনিধিত্ব। অর্থাৎ আমাদের জনসংখ্যা বেশি ছিল আমরা ৫৬ ভাগ, পশ্চিম পাকিস্তান ছিল ৪৪ ভাগ জনসংখ্যা। অতএব, প্রতিনিধির সংখ্যাও আমাদের বেশি ছিল। ওই অনুপাতে। এইটা পাকিস্তানে স্বীকৃত ছিল না। এর আগে এই সংখ্যা সাম্যতার বিরুদ্ধে আমাদেরকে লড়াই করতে হয়েছে। ৬ দফা, সায়ত্তশাসন ইত্যাদির লড়াই ছয় দফাতো এসেছে ৬৬ সালে। তার আগে থেকেই সংখ্যা সাম্য এবং স্বায়ত্ত শাসনের সাধারণ দাবিতে যে সংগ্রাম, গণতন্ত্রের সংগ্রাম, সেটা চলে এসেছে। তো, ৭০ এর নির্বাচনটার ভিত্তিতে নির্বাচন হয়েছে, নির্বাচনের পরে যারা নির্বাচিত প্রতিনিধি তাদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর হবে। তারা পাকিস্তানের সংবিধান রচনা করবে এবং রাষ্ট্র পরিচালনা করবে এটাই কথা ছিল। কিন্তু সেটা হলো না। সেটা না হওয়ার কারণে তারা যখন এটা সংসদের প্রথম অধিবেশনটা ঢাকায় বসার কথা ছিল তো সেই অধিবেশনটাও বাতিল করে দিল। তখনই বোঝা গেল তাদের সামরিক শাসক এবং সামরিক শাসকের সাথে পাকিস্তানি যে রাজনীতিবিদদের কায়েমী স্বার্থবাদী যারা বাংলাদেশের তৎকালীন পূর্ব বাংলার মানুষের অধিকারের প্রতি যাদের কোন সম্মান বা শ্রদ্ধা বা তাদের অধিকারের প্রতি কোন স্বীকৃতি দেয়ার ইচ্ছা যাদের ছিল না তারা মোটামুটি একাট্টা হয়ে গেছে । এটা বোঝা গেল। তখন এখানে যে আন্দোলন সংগ্রাম চলছিল, সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতেই তো বলা যায় যে, নতুন ফেজটা শুরু হলাে। বেশ কিছু হত্যার ঘটনা ঘটল। অনেক যায়গায় অনেকে প্রাণ দিলেন এবং সেই প্রেক্ষাপটেই ৭ই মার্চের ভাষণ। ৭ই মার্চের সেই বিশাল সমাবেশ। তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাবেশ হলো। বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ভাষণ দিলেন। সেখানে তিনি বললেন এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। তো এটা থেকে একটা নির্দেশনা পাওয়া গেল। সেটাকে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা বা স্বাধীনতার ঘোষণা এটা বলা যাবে না। কিন্তু নির্দেশনাটা পাওয়া গেল যে, এখন লড়াইটা আসলে করতে হবে। সেখানে তিনি কয়েকটা শর্ত দিলেন ক্ষমতা হস্তান্তর, সামরিক শাসন প্রত্যাহার ইত্যাদি ইত্যাদি অনেকগুলো। বোঝা গেল যে এগুলো কোনটাই পূরণ হবার নয়। এই সামরিকজান্তা এবং শাসকরা সেটা মানবে না। এখন লড়াইটা চলে যাবে স্বাধীনতা বা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে। ২৫শে মার্চের আগে ইয়াহিয়া খানরা আসল। তারা সংলাপ করার জন্য আলাপ আলোচনার মাধ্যমে যাচ্ছিল। আসলে তারা সময়ক্ষেপণ করছিল। তাদের প্রস্তুতিটা বাড়ানো। যে আক্রমণ তারা করবে এখানে তারাও বুঝতে পারল যে এটা চরম পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে। সংঘর্ষের পরিস্থিতি, সংঘাতের পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে। সেটা আমাদের নেতৃত্ব কতটুকু বুঝেছিলেন তা আমরা এখন বুঝতে পারব না। কিন্তু তারা আলাপ আলোচনা করল। আলাপ আলোচনা ফেল করল যথারীতি। ২৫শে মার্চ মধ্যরাত থেকেই গণহত্যা শুরু হলো। বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হয়ে গেলেন। এই একটা অপ্রস্তুত মুক্তিযুদ্ধের মধ্যেও আমরা কিন্তু প্রতিরোধ গড়ে তুললাম। আমরা মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না। একটা নিরস্ত্র জাতি, একটি অত্যন্ত প্রবল এবং সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধটা করার চেষ্টা করল। প্রথম পর্যায়ে তো আমরা হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ মানুষের আত্মাহুতি ঢাকাসহ বিভিন্ন যায়গায় দেখলাম। কিন্তু তাতেও দেখা গেল ঢাকা ছাড়া বেশিরভাগ জেলাই কিন্তু আমরা মুক্ত করে ফেললাম কিন্তু সেটা আমরা রাখতে পারলাম না। কারণ আমাদের সেই প্রস্তুতি ছিলনা।
এক সপ্তাহ, দুই সপ্তাহ রাখতে পেরেছিলাম। তারপরে আবার তারা নিজেদেরকে সুসংগঠিত করে যখন আক্রমণ করল দেখা গেল যে, বেশিরভাগ কি প্রায় সব জেলা শহরগুলো তাদের দখলে চলে গেল। সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধটা প্রকৃতপক্ষে শুরু হলো। অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এরমধ্যে আমাদের প্রস্তুতি পর্বটা চলেছে। মুক্তিযুদ্ধের কাজটা চলেছে কয়েকটা পর্যায়ে। একটা পর্যায় হচ্ছে আমাদের যারা সশস্ত্র বাহিনীতে বাঙালি যারা ছিল, যেমন তখনকার ইপিআর, ইপিআরে যারা ছিল তারা আসলেন। পশ্চিম পাকিস্তানী পাঞ্জাবি বা পশ্চিম পাকিস্তানি যারা ছিল তাদেরকে নিরস্ত্র করে বা মোটামুটি সশস্ত্র সংঘাতের মধ্য দিয়ে তারা বেরিয়ে আসলেন। মেজর রফিকুল ইসলাম, মেজর আবু ওসমান চৌধুরী, উনারা তো সবাই ওই ধারা থেকেই এসেছেন। আরও ছিল রাজারবাগ পুলিশের হত্যাকাণ্ডের পরে পুলিশের বিভিন্ন যায়গায় যারা সশস্ত্র অস্ত্রশস্ত্র ছিল তারা এসেছিল। তাছাড়া আর আমাদের ছিল তরুণরা গ্রাম-গঞ্জের সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়েই হানাদারদারদের হাত থেকে উদ্ধার করার জন্য যারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিল তারা তখন সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ওপারে গিয়ে আমাদের ভারত সরকারের সহযোগিতায় তারা বিভিন্ন জায়গায় প্রশিক্ষণ নিয়ে তাদের মুক্তিযুদ্ধ করেছে। এইটা একটা স্তর অর্থাৎ যারা সশস্ত্র সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছে। আর একটা ভাগে যারা ছিলেন তারা সশস্ত্র সংগ্রাম করেননি কিন্তু এই সশস্ত্র সংগ্রামটাকে সংগঠিত করতে নানাভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছে। আর একটা পর্যায় ছিল আমাদের যে সশস্ত্র সংগ্রাম আমরা করতে পারতাম না যদি আমাদের রাজনৈতিক সমর্থন শুধু দেশে না দেশের বাইরে আন্তর্জাতিকভাবে রাজনৈতিক সমর্থন, যারা বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে আমাদের যারা নেতৃবৃন্দ যারা ছিলেন, তাজউদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম উনারা প্রবাসী সরকার গঠন করলেন। এই সরকার তখন রাজনৈতিক নেতৃত্ব তারা দিলেন। রাজনৈতিক মুখপাত্র তারা হলেন, রাজনৈতিক কারণ, এটার পিছনে যে অন্যায় অনাচার এটার চিত্রটা তারা তুলে ধরার জন্য উনারা কাজ করলেন। এটাও আর একটা দিক। এটা না থাকলে আমরা বিশ্ববাসীর কাছে যে সমর্থন পেয়েছিলাম সেটা আমরা পেতাম না। আর একটা পর্যায়ে কাজ হয়েছে যারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কিছু বুদ্ধিজীবী, কিছু ব্যক্তি, এই যে ব্র্যাকের আবেদ সাহেব মারা গেলেন তাদের একজন আমাদের বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী তৎকালীন ঢাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়র ভাইস চ্যান্সেলর এবং আরো অনেক বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন। প্রফেসর রেহমান সোবহান, প্রফেসর আনিসুর রহমান, জাফরুল্লাহ চৌধুরী এরা যারা বিভিন্ন জায়গায় বিদেশে ছিলেন, লণ্ডনে, আমেরিকায় বা বিভিন্ন শহরে তারা তাদের যোগাযোগ শুরু করলেন। বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে লবি করা শুরু করলেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে। এবং এটারই একটা পর্যায়ে আমাদের তৎকালীন পাকিস্তানের বিভিন্ন যে দূতাবাসগুলো ছিল, দূতাবাসে বাঙালি যারা কর্মকর্তা ছিল তারা তখন পাকিস্তান ত্যাগ করে বাংলাদেশী প্রবাসী সরকারের আনুগত্য গ্রহণ করল।
আর একটা পর্যায়ে ছিল আমাদের তো শরনার্থী এক কোটির উপরে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল। কিন্তু দেশের ভিতরে তো ৬ কোটি লোক রয়ে গেছে। তারা তো শরনার্থী হয়নাই। তারাও কিন্তু একটা বিরাট ভূমিকা পালন করেছে। মুক্তিযুদ্ধটা হয়েছে দেশে অতএব মুক্তিযোদ্ধাদের শেল্টার দেয়া, তাদেরকে নিরাপত্তা দেয়া, তাদেরকে পথ দেখিয়ে নিয়ে আসা, তাদেরকে তথ্য দিয়ে সাহায্য করা এখানে হানাদার বাহিনী কোথায় কি করছে, কিভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে, কি কি ষড়যন্ত্র করেছে, কোথায় হামলা করেছে এবং তাদের সম্পর্কিত এই তথ্যগুলো ভিতর থেকে দেয়া হতো। এখানে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এই কাজটা হয়েছে। এখানে যদিও নারীদের অল্প সংখ্যক নামই আমরা জানি যারা অংশগ্রহণ করেছে কিন্তু নাম না জানা অনেক নারী মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা আছে যেটা হয়ত ইতিহাসে কোনদিন আদৌ সেটা পাওয়া যাবে কিনা এটাও যথেষ্ট সন্দেহ আছে। কারণ এসব ইতিহাসতো সংরক্ষণ করা হয়নি। তো, এটা আর একটা পর্যায়।
এখন আমি আসি আমার কথায়। আমি একাত্তর সালে কিম্বা তার আগে রাজনৈতিকভাবে খুবই সক্রিয় ছিলাম। আমি সার্বক্ষণিকভাবেই আমি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকতাম। সাংবাদিকতাও ছিল। কিন্তু সেটা ছিল কিন্তু সেটা ছিল তুলনামূলকভাবে আমার কম সময়ের জন্যে। কিছু রিপোর্ট করা। কুষ্টিয়া শহরে তখন আমি থাকতাম। তো, সেই সুবাদে মুক্তিযুদ্ধের এই প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই আমি এর সঙ্গে যুক্ত। যদিও আমি আওয়ামীলীগের কর্মি ছিলাম না। আমি একটি বাম রাজনৈতিক দলের কর্মী হিসেবে তখন কাজ করেছি এবং প্রথমদিকে তাদের যে বর্বরতা সেটার বিরুদ্ধে যে প্রতিরোধ, সেখানে প্রতিরোধে আমি খুব একটা সামনের সারিতে ভূমিকা নেয়া সেটা আমার ছিল না কিন্তু প্রতিরোধের প্রতিটি পর্যায়ে কমবেশি আমার অংশগ্রহণ ছিল। যেহেতু বাম সংগঠনের সঙ্গে থাকার কারণে আওয়ামীলীগ ছিল মেজরিটি পার্টি। অবএব সবক্ষেত্রে তারাই সামনের কাতারে ভূমিকাটা নিয়েছে। অন্য কাউকে তারা স্পেস দেয়নি। আমি যেটা করেছিলাম বাম কর্মী হিসেবে, আমার তো বেশিরভাগ এলাকা ছিল শ্রমিক এলাকা, কৃষক এলাকা। আমি কৃষক এলাকায় গিয়ে আমি চেষ্টা করলাম যে, যুবকদেরকে নিয়ে কিভাবে মুক্তিযুদ্ধ করা যায়। কারণ যখন বুঝতে পারলাম মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া আমাদের প্রতিরোধের আর কোন উপায় নাই। তখন তাদের তো প্রশিক্ষণ দিতে হবে। তখন প্রশিক্ষণ পাওয়া কঠিন হয়ে গেল। কারণ আমাদের তো কারোর ই প্রশিক্ষণ পাওয়ার অভিজ্ঞতা নাই। কারণ আমাদের ছিল বাম কর্মীদের একটা জিনিস ছিল সেটা হচ্ছে আমাদের গেরিলা যুদ্ধের কিছু তাত্ত্বিক ধারণা ছিল। বিভিন্ন বইটই পড়ে। রাশিয়ার বই, চীনের বই, ভিয়েতনামের বই, মাও সেতুংয়ের, হোচিমিনের বা অন্যান্য যারা লেখক ছিলেন গেরিলা যুদ্ধ কিভাবে করতে হয়, গেরিলা যুদ্ধে কিভাবে হিট এন্ড রান হয়, এগুলোর সেখানোর জন্য কিছু ব্যবস্থা করলাম। জুন মাস পর্যন্ত আমার সিদ্ধান্ত ছিল, তখন বিশাল অংশ শরনার্থী কিন্তু চলে গেছে। আমি নিজেও অনেক শরনার্থী পরিবারকে বর্ডার পার হয়ে চলে যেতে আমি সাহায্য করেছি। যারা আমার পরিচিত ছিল। আমার সাহায্য তাদের দরকার ছিল। কাউকে হয়ত অর্ধেক পথ এগিয়ে দিয়েছি। কাউকে যোগাযোগটা করিয়ে দিয়েছি। এমনকি বর্ডারের কাছাকাছি গিয়ে আমি ফিরে এসেছি। এইরকম দুই তিনবার হয়েছে।
এই জুন মাসের মধ্যে কিন্তু আমি নিজে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আমি বর্ডার পার হবো না। আমি এখানে থেকে গেরিলা যুদ্ধের জন্যে কিছু যুবকদের তরুণদের সংগঠিত করব কিন্তু জুন মাস প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে দেখলাম যে আমি যেসব এলাকায় যাদের উপর ভরসা করে আমি এটা করতাম তাদেরই অধিকাংশ তখন শরনার্থী হয়ে চলে যাচ্ছে পরিবারসহ। তখন আমি নিজে খুব সেকি হয়ে গেলাম। তাহলে আমি এখানে থেকে কারে নিয়ে যুদ্ধ করব। কারণ আমি একা একা তো যুদ্ধ করতে পারব না। তখন আমি আমার সর্বশেষ আমার বন্ধু পরিবারের সাথে আমি আমার বর্ডার পার হয়ে চলে গেলাম। ওপার থেকে তখন কিছু কিছু খবর পেতাম কিন্তু সেটা তো সম্পূর্ণ খবর না। কিছু কিছু খন্ড খন্ড খবর পেতাম। ট্রেনিং হচ্ছে এইসব। আমি ভাবলাম যে, ওপারে গিয়ে তাহলে ট্রেনিং দিয়ে আমিও যুদ্ধে যাব। কিন্তু ওপারে যাওয়ার পরে আমার ঘটনা হচ্ছে যে আমি যে পরিবেশে প্রথমে তো গেলাম গিয়ে হাঁটা পথ ছাড়া তো অন্য কোন রাস্তা ছিলনা। প্রায় ৭০-৮০ মাইল রাস্তা হেঁটে বর্ডার পার হওয়া। যদিও বয়স কম ছিল। প্রায় ৩০-৩২ ঘন্টা লাগল। মাঝে মাঝে রেস্ট নিয়ে গেলাম। যখন ওপারে পৌঁছালাম তখন খুব টায়ার্ড। এক দুইদিন তো বিশ্রাম নিতে হলো। রানাঘাটে গেলাম। আমার বন্ধুর পরিবারের এক আত্মীয়র সুবাদে গিয়ে একটা স্কুলে প্রথম রাত কাটানো হলো। এবং ঐ পরের দিন সেই আত্মীয়র সহায়তায় একটা বাসা খুঁজে বের করা হলাে। বন্ধুর পরিবারের থাকার জন্য। সেই বাসায় গিয়ে আমরা উঠলাম পরের দিন। সেখানে থেকে পরের দিন আমি চলে গেলাম কলকাতা। কারণ কলকাতা গেলাম এই জন্যে যে বাম নেতাদের বাম কর্মীদের যোগাযোগ করার জন্যে আর কোন জায়গা ছিল না।
শনিবার দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশিত হবে।
# শামসুল হুদা, উন্নয়নকর্মী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি।
# সিনিয়র স্টাফ রিপাের্টার।
আরও পড়ুন : পর্ব- ৪, আমি স্বাধীন দেশ ও পতাকা দিতে পেরেছি কিন্তু গণমানুষের মুক্তি আসেনি : আবুল বাশার
আরও পড়ুন : পর্ব -৩ আমি স্বাধীন দেশ ও পতাকা দিতে পেরেছি কিন্তু গণমানুষের মুক্তি আসেনি : আবুল বাশার
আরও পড়ুন : পর্ব – ১ : আমি স্বাধীন দেশ ও পতাকা দিতে পেরেছি কিন্তু গণমানুষের মুক্তি আসেনি : আবুল বাশার
আরও পড়ুন : আসলে একাত্তর সালের সময়টা মুখের কথায় বর্ণনা করা অত্যন্ত কঠিন : কামাল আহমেদ
আরও পড়ুন : রাজাকার যখন নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে তখন খুব খারাপ লাগে : আব্দুস সামাদ তালুকদার
আরও পড়ুন : রক্ত স্রোতে পবিত্র হয়ে জন্ম নিয়েছে বাঙালি জাতির স্বাধীন বাসভূমি বাংলাদেশ : ডা. শরফুদ্দিন আহমেদ
আরও পড়ুন : আমাদের মতো মানুষের কাছে একাত্তরের স্মৃতি বিবিধ : আফসান চৌধুরী
আরও পড়ুন : একদিকে বিজয়ের উল্লাস, অন্যদিকে প্রিয় দুই শিক্ষকের মৃত্যু আমাকে বিধ্বস্ত করে ফেলেছিল : ডা. মাগদুমা নার্গিস রত্না
আরও পড়ুন : রেডিওতে পাক-সেনাদের আত্মসমর্পণের খবর শুনে আমরা বাকরুদ্ধ হয়ে যাই : সাইফুল ইসলাম
লালসবুজের কথা’র ফেসবুক পেজ :
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা