অনলাইন ডেস্ক
প্রায় মাসব্যাপী বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে বুঁদ হয়ে ছিলো কোটি কোটি চোখ। মাঠে কিংবা মাঠের বাইরে বিশ্ব ফুটবলের রোমাঞ্চকর লড়াই উপভোগ করেছে দর্শকরা। দুর্দান্ত ড্রিবলিং, চোখ ধাঁধানো গোল, হাসি, কান্না সব কিছুই ছিলো কাতার বিশ্বকাপ ফুটবলের সেমিফাইনাল পর্যন্ত। ৬৩ ম্যাচ শেষে এখন অপেক্ষা স্বপ্নের ফাইনালের। বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল নিয়ে শুধু আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের খেলোয়াড়রাই রোমাঞ্চিত নন, ফাইনাল উত্তেজনার অপেক্ষা বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি দর্শকও।
কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামেই এবারের বিশ্বকাপে নিজেদের অভিযান শুরু হয়েছিলো আর্জেন্টিনার। ফাইনাল দিয়ে শেষও হবে এই মাঠেই। ফাইনালের মহারণেরজন্য নিজেদের সেরা প্রস্তুতিটাই নিয়েছে দু’বারের সাবেক চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচ বাদ দিলে, সেমিফাইনাল পর্যন্ত প্রতিটি ম্যাচেই লাতিন ফুটবলের সৌন্দর্য উপভোগ করেছে ভক্তরা। কোটি কোটি ভক্তের হৃদয় জুড়িয়েছে মেসি, ডি মারিয়া, আলাভারেজদের শৈল্পিক ফুটবল। ৩৬ বছর আগে ১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনা সবশেষ বিশ্বকাপ ফুটবলের সোনালী ট্রফিটি জিতেছিলো। সেই ট্রফি জয়ের নায়ক দিয়েগো ম্যারাডোনা এখন অনন্তলোকের বাসিন্দা। সেখান থেকেই হয়তো এবারের ফাইনালে দিয়েগো আর্জেন্টিনা দলকে শুভ কামনা জানাবেন।
ফাইনালের আগে আর্জেন্টিনা দলের জন্য স্বস্তির খবর ইনজুরি কাটিয়ে ফিট হয়ে উঠেছেন অভিজ্ঞ ডি মারিয়া। কার্ড নিষেধাজ্ঞা শেষে মাঠে ফিরবেন অ্যাকুইনা, যিনি প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগের উপর চাপ প্রয়োগ করতে পারেন। ফাইনালের জন্য আর্জেন্টিনাকে দু’টি ফরমেশনে তৈরী করছেন কোচ স্কালোনি। প্রতিপক্ষের খেলার ধরণ বুঝে ম্যাচ চলাকালীনই কৌশল পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে আর্জেন্টিনার। গত কয়েকটি বিশ্বকাপের তুলনায় আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগ এবং গোল কিপিং যথেষ্ট শক্তিশালী। আর আক্রমণভাগে মেসি, আলাভারেজরা আর্জেন্টিনাকে ৩৬ বছরের শিরোপা খরা কাটাতে পারবেন বলেই আশাবাদী দলটির সমর্থকরা। বিশ্বকাপ ফুটবলে নিজের শেষ ম্যাচটিলিওনেল মেসিও স্মরণীয় করে রাখতে চাইবেন সেটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। তাই স্বপ্নের ফাইনালে নিজেকে উজার করে দিতে চান মেসি।
শিল্প, সাহিত্যের দেশ বলা হয় ফ্রান্সকে। তবে ফুটবলেও তারা বেশ খ্যতি কুড়িয়েছে। দলটির ঝুলিতে রয়েছে দু’টি বিশ্বকাপ, ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ। সবশেষ রাশিয়া বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন দল ফ্রান্স। গত আসরে ফ্রান্সের তরুণ দলটির গতিময় ফুটবলে গোটা বিশ্ব মুগ্ধ হয়েছিলো। এবার সেই তরুণ দলটি আরো পরিপক্ক হয়ে এসেছে কাতারে। গ্র“প পর্বে একটি ম্যাচ ছাড়া বাকি সবগুলোতেই নিজেদের সেরাটা খেলতে দেখা গেছে ফরাসীদের। ফ্রান্স দলে রয়েছেন এমবাপে, জিরুদ, দেম্বেলে, গ্রিজম্যানের মতো খেলোয়াড়। যারা জ্বলে উঠতে পারলে যে কোন প্রতিপক্ষ তছনছ হয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে এমবাপের গতি যে কোন দলের জন্য বিপজ্জনক। তাকে আটকানোর জন্য প্রতিপক্ষ কোচেরা একাধিক কৌশল নিয়ে থাকেন।
তবে ফাইনালের আগে ফ্রান্স দলের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়ের অসুস্থতা। ফাইনালে তাদের মাঠে নামানো নিয়ে চিন্তায় আছেন কোচ দিঁদিয়ের দেশম। অধিনায়ক হিসেবে ৯৮ এবং কোচ হিসেবে দেশম বিশ্বকাপ জিতেছেন ২০১৮ সালে। টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ ট্রফি জেতার সামনে দাঁড়িয়ে ফরাসীরা। সবুজ মাঠে নিজেদের সেরাটা খেলে বিশ্বকাপ ফুটবলের সোনালী ট্রফি ঘরে তুলতে মুখিয়ে আছে দলটি। মেসি, ডি পল, অ্যাকুইনা, ডি মারিয়াদের আটকাতে পরিকল্পনা সাজিয়েছেন দেশম। ৩৬ বছরের শিরোপা খরা কাটিয়ে আর্জেন্টিনা না, টানা দ্বিতীয়বার ফ্রান্স বিশ্বসেরা হয়, সেটা দেখার অপেক্ষায় ফুটবল ভক্তরা।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা