বাংলাদেশ বিমানের ‘ময়ূরপঙ্খী’ উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টার ঘটনায় করা মামলায় চিত্রনায়িকা শামসুন নাহার শিমলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম দামপাড়া পুলিশ লাইনসে সংস্থাটির কার্যালয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
উড়োজাহাজ ছিনতাই করতে গিয়ে কমান্ডো অভিযানে নিহত হন শিমলার দ্বিতীয় স্বামী পলাশ আহমেদ। কেন, কী কারণে ছিনতাই করতে চেয়েছিলেন সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শিমলা সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিয়ের পর মনে হয়েছিল পলাশের মানসিক সমস্যা আছে। তাই ডিভোর্স দিই।’ তিনি বলেন, কেন বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা করতে গেছেন, বলতে পারছেন না।
বিমান ছিনতাই চেষ্টার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলাটি তদন্ত করছেন কাউন্টার টেররিজম ইউনিট চট্টগ্রামের পরিদর্শক রাজেস বড়ুয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে নায়িকা শিমলার সঙ্গে পলাশের কীভাবে কখন পরিচয় হয়। বিয়ে, তালাকসহ দুজনের সম্পর্ক কেমন ছিল জানতে চাওয়া হয়। পাওয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করা হবে। পলাশ কোনো জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত ছিলেন কিনা তাও জানতে চাওয়া হয়। উত্তরে শিমলা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান। হতাশা থেকে পলাশ এই কাজ করতে পারেন বলে শিমলার ধারণা। তবে কী কারণে হতাশা তা জানাতে পারেননি।
চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ময়ূরপঙ্খী উড়োজাহাজটির (বিজি-১৪৭ ফ্লাইট) ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিকেল ৫টা ৫ মিনিটে ছেড়ে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পরই উড়োজাহাজটি ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে। প্রায় ২ ঘণ্টার টান টান উত্তেজনার পর উড়োজাহাজ ছিনতাইচেষ্টার অবসান ঘটে। কমান্ডো অভিযানে ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী ব্যক্তি নিহত হন। পরে র্যাব জানায় নিহত ব্যক্তির নাম মো. পলাশ আহমেদ। বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানার পিরিজপুরে। বাবার নাম পিয়ার জাহান সরদার। পরদিন সন্ত্রাসবিরোধী আইনে এবং বিমান-নিরাপত্তা বিরোধী অপরাধ দমন আইনে মামলা করে তা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, উড়োজাহাজে থাকা এক তরুণ বোমাসদৃশ বস্তু ও অস্ত্র দেখিয়ে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন। তাঁর কিছু দাবিদাওয়ার কথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে শোনানোর জন্য উড়োজাহাজের ক্রুদের বলেন। একপর্যায়ে পটকা-জাতীয় বস্তুর বিস্ফোরণ ঘটান। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া না হলে বিমানটি ধ্বংসের হুমকি দেন পলাশ। দুষ্কৃতকারী বোমাসদৃশ বস্তু দেখিয়ে বিমানের ককপিটে ঢুকতে চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁর কাছে বোমা ও অস্ত্রসদৃশ বস্তু দেখা যায়। পরে বিমানটি চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। যাত্রী ও ক্রুদের নিরাপদে জরুরি নির্গমন পথ দিয়ে নামানো হয়। ইতিমধ্যে বিমানটি ছিনতাইয়ের খবর দেওয়া হলে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো এসে উপস্থিত হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আহত ওই তরুণকে বিমান থেকে নামানো হয়। পরে দেখা যায় তিনি মারা গেছেন।
পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ফরেনসিক পরীক্ষায় জানা যায়, পলাশের হাতে থাকা সেদিনের পিস্তলটি ছিল দেশে তৈরি প্লাস্টিকের খেলনা। গত ২৪ মার্চ কাউন্টার টেররিজমের একটি দল পলাশের বাবা পিয়ার জাহান, মা রেনু বেগম, চাচা দ্বীন ইসলামসহ আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীসহ ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
NB: This post is copied from prothomalo.com
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা