অনলাইন ডেস্ক
ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলকারী বাস ও মিনিবাসের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটার ভাড়া যথাক্রমে ১ টাকা ৭০ পয়সার স্থলে ২ টাকা ১৫ পয়সা ও ১ টাকা ৬০ পয়সার স্থলে ২ টাকা ৫ পয়সা করা হয়েছে। বাস ও মিনিবাসের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ভাড়া যথাক্রমে ৭ টাকার স্থলে ১০ টাকা ও ৫ টাকার স্থলে ৮ টাকা করা হয়েছে।
ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কোঅর্ডিনেশন অথরিটির (ডিটিসিএ) আওতাধীন জেলার (নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ ও ঢাকা জেলা) ভেতরে চলাচলকারী বাস ও মিনিবাস উভয় ক্ষেত্রে একজন যাত্রীর জন্য প্রতি কিলোমিটার ১ টাকা ৬০ পয়সার স্থলে ২ টাকা ৫ পয়সা করা হয়েছে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রস্তুতকারক বা বিআরটিএ থেকে অনুমোদিত আসন সংখ্যা কমিয়ে আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য বাস/মিনিবাসের আসন সংখ্যা পুনর্বিন্যাস করা হলে আনুপাতিকভাবে ভাড়ার হার নির্ধারিত হবে। সেক্ষেত্রে রুট পারমিট অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ/যাত্রী ও পণ্য পরিবহন কমিটি) থেকে আনুপাতিকভাবে ভাড়ার হার অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে। এ ভাড়া বৃদ্ধি গ্যাস, অকটেন ও পেট্রোল চালিত যানবাহনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।
এতে আরও বলা হয়, ডিজেল চালিত বাস ও মিনিবাসের ভাড়া নির্ধারণ সংক্রান্ত এর আগের জারি করা সকল প্রজ্ঞাপন বা আদেশ বাতিল করা হলো। জনস্বার্থে জারি করা এ ভাড়ার হার ৮ নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে।
এর আগে বিকেল ৫টায় পরিবহন মালিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার জানান, ডিজেলচালিত বাসের ভাড়া সোমবার (৮ নভেম্বর) থেকে বাড়ছে। দূরপাল্লায় প্রতি কিলোমিটারে তা হবে ১ টাকা ৮০ পয়সা। আর ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে প্রতি কিলোমিটারে বেড়ে হচ্ছে দুই টাকা ১৫ পয়সা।
তিনি জানান, সোমবার থেকে নতুন ভাড়ার হার কার্যকর হবে। এজন্য আজ প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। ঢাকায় মিনিবাসের সর্বনিম্ন ভাড়া হচ্ছে ৮ টাকা। আর বড় বাসের সর্বনিম্ন ভাড়া হচ্ছে ১০ টাকা।
এদিকে ডিজেলচালিত বাসের ভাড়া বাড়ানো হলেও সিএনজিচালিত বাস ও মিনিবাসের আগের ভাড়াই কার্যকর রয়েছে। অন্যদিকে, ভাড়া বাড়ানোর দাবি মেনে নেওয়ার পর থেকে যাত্রীবাহী পরিবহনের অঘোষিত ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হলেও পণ্যবাহী ট্রাকের ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের দাবি, জ্বালানি তেলের দাম না কমলে ট্রাক চালানো হবে না।
পরিষদের আহ্বায়ক রুস্তম আলী খান জানান, জ্বালানি তেলের দাম না কমা পর্যন্ত এ ধর্মঘট অব্যাহত রাখবেন তারা। বিআরটিএ সদর দপ্তরে ভাড়া পুনর্নির্ধারণের বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে তারা অংশ নেননি। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ কাভার্ড ভ্যান ট্রাক প্রাইম মুভার পণ্য পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মকবুল আহমেদ বলেন, আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করব না। তেলের দাম কমলেই ধর্মঘট প্রত্যাহার করব।
প্রসঙ্গত, গত ৩ নভেম্বর রাতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় সরকার। লিটারপ্রতি ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানো হয় ১৫ টাকা করে। ফলে ৬৫ টাকা থেকে এক লাফে ডিজেলের লিটারপ্রতি দাম হয় ৮০ টাকা। বাড়তি দামে ডিজেল কিনতে হলে বর্তমান ভাড়ায় গাড়ি চালানো সম্ভব নয়- এমন যুক্তি দেখিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে প্রথমে পণবাহী পরিবহন ধর্মঘটে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। পরে বাস মালিকরাও গাড়ি চালানো বন্ধ করে দেন। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে মালিক সমিতি কোনো ধর্মঘটের ডাক দেয়নি। অঘোষিত এই ধর্মঘটে সারা দেশে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে।
সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বিআরটিএর কাছে ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয় বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে। বিআরটিএ বৃহস্পতি, শুক্র, শনি- তিনদিন কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে মালিক সমিতির সঙ্গে বৈঠক ডাকে রোববার (৭ নভেম্বর)। বাস মালিকরা ভাড়া না বাড়ানো পর্যন্ত রাস্তায় গাড়ি না নামানোর সিদ্ধান্তে অটল থাকেন।
অবশেষে রোববারসহ প্রায় চার দিনের ভোগান্তি শেষে মালিকপক্ষের দাবি মেনে বাসের ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বিআরটিএ। বৈঠক থেকে বেরিয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা