প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের সৃষ্টি চীনের ল্যাবেই হয়েছিল বলে নতুনভাবে দাবি তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও ইরান। দেশগুলো বলছে, করোনা কোনও ভাইরাস নয়, এটা চীনের উহানে ভাইরোলজি ল্যাবে তৈরি মারাত্মক জৈব রাসায়নিক বোমা।
যদিও চীনের পক্ষ থেকে বরাবরই এমন অভিযোগ অস্বীকার করা হচ্ছে। দেশটি এসব অভিযোগকে ‘ষড়যন্ত্র’ আখ্যা দিচ্ছে।
করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের উহানকে ধরা হলেও এর সৃষ্টি নিয়ে শুরু থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে পরস্পরবিরোধী পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ছিল।
এবার নতুন করে সামনে আনা এক প্রমাণে দেখা যাচ্ছে, চীনের উহানের ল্যাব থেকে ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। যেটাকে এখন অস্বীকার করার তেমন উপায়ও নেই।
এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য ব্লিজ। সেখানে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিককালে সামনে আসা বেশ কয়েকটি নতুন প্রমাণ এই ইঙ্গিত দেয় যে, করোনাভাইরাসটি উহানের এই ভাইরোলজি ল্যাবেই তৈরি করা হয়েছিল।
গত শুক্রবার এ বিষয়ে ন্যাশনাল রিভিউয়ের সিনিয়র সাংবাদিক জিম জেরাঘাটির একটি দীর্ঘ নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। জেরাঘাটি করোনা নিয়ে একটি ডকুমেনটারি তৈরির জন্য চলচ্চিত্র নির্মাতা ও ইউটিউবার ম্যাথু টাইয়ের সঙ্গে অনেকদিন ধরেই চীনে অবস্থান করছেন। করোনার উৎপত্তি নিয়ে তার করা বিশদ তদন্তের পর সম্প্রতি ইউটিউবে তিনি যেসব ভিডিও আপলোড করেছেন তাতে ভাইরাসটি উৎস শনাক্ত করা হয়েছে।
আরেকটি বিষয় লক্ষ্যণীয় যে, গত বছরের শেষের দিকে উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি কর্তৃক দুটি পদে চাকরির বিজ্ঞাপন দেয়। গেল বছরের ১৮ নভেম্বর ল্যাবটির একটি বিজ্ঞাপনে বিজ্ঞানীদের ‘করোনাভাইরাস এবং বাদুড়ের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করতে’ অনুরোধ করা হয়েছিল।
চাকরির অফারটিতে লিখা ছিল- ‘বাদুড়কে গবেষণামূলক বিষয় হিসেবে গ্রহণ করে আমি মলিকুলার মেকানিজমের মাধ্যমে এমন সব প্রক্রিয়ার উত্তর দেব যা দীর্ঘকাল ধরে কোনও রোগ ছাড়াই ইবোলা এবং সার্স সম্পর্কিত করোনভাইরাসের সঙ্গে সহাবস্থান করতে পারে এবং এর সাথে এটি বেশি উড়তে পারবে এবং দীর্ঘদিন বেঁচে থাকবে।
ভাইরাস, ইমিউনোলজি, সেল জীববিজ্ঞান এবং একাধিক ওমিক্স মানব এবং অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য তুলনা করতে ব্যবহৃত হয়।
এর ঠিক এক মাস পর ২৪ ডিসেম্বর ল্যাবটি আরও একটি কাজের সূচনা করে। যেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভাইরাস বহনকারী বাদুড়ের প্যাথোজেনিক বায়োলজির ওপর দীর্ঘমেয়াদি গবেষণাটি মানব ও প্রাণিসম্পদের বড় বড় নতুন সংক্রামক রোগের বাহক হিসেবে বাদুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বলে উল্লেখ করা হয়। যেমন- সার্স, এসএডিএস, প্রচুর পরিমাণে নতুন ব্যাট ও দুর্যোগপূর্ণ নতুন ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে।
ম্যাথু টাই নিজেও দাবি করেছেন, আমরা একটি নতুন ও ভয়ানক ভাইরাস আবিষ্কার করেছি। এর সঙ্গে মোকাবিলার জন্য লোক নিয়োগ করতে চাই।
২৪ ডিসেম্বরের দ্বিতীয় চাকরির বিজ্ঞাপনটি প্রকাশের সময় উহানে ‘রহস্যময় নিউমোনিয়া’ প্রাদুর্ভাব চলছিল। এর এক সপ্তাহ থেকে সেখানে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার বিষয়টি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে জানিয়েছিল চীন সরকার।
এদিকে গেল মঙ্গলবার ফক্স নিউজের সঞ্চালক টাকের কার্লসন তার করা প্রাইমটাইম শো’তে জিম জেরাঘাটির প্রকাশিত ভিডিওর আকর্ষণীয় একটি অংশ তুলে ধরেন এবং সেখানে ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ চীন প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রকাশিত একটি গবেষণামূলক প্রবন্ধ তুলে ধরা হয়।
https://youtu.be/X03DeM0EldI
ওই ‘গবেষণাপত্র : ২০১৯-এন কোভি করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য উৎস’ শিরোনামে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়, ভাইরাসটি সম্ভবত এমন একটি প্রাণীয় থেকে এসেছিল যেটা ঘোড়ামুখো বাদুড়ের মতো দেখতে।
কিন্তু কার্লসন নিশ্চিত করে বলছেন, উহান শহরের ৯০০ কিলোমিটারের মধ্যে বাদুড়ের কোনও অস্তিত্ব নেই। এছাড়া উহানের যে সামুদ্রিক বাজারে এই বিশেষ বাদুড় বিক্রি করা হয়েছিল বলে দাবি উঠছে সেটারও কোনও সত্যতা নেই।
করোনা পরিসংখ্যান এর লাইভ আপডেট দেখুন
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা