করোনা ভাইরাস সংক্রমন পরিস্থিতিতে করণিয় বিষয়ে গার্মেন্টস শ্রমিকদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা সৃষ্টি এবং রানা প্লাজা ধসের ৭ম বার্ষিকী স্মরণে কর্মসূচী নির্ধারণে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নির্বাচীত সদস্যদের সভা শুক্রবার (২০ মার্চ) দুপুর ১২-০০ টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আহসান হাবিব বুলবুল এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়।
উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি খালেকুজ্জামান লিপন, সাংগঠনিক সম্পাদক সৌমিত্র কুমার দাস, দপ্তর সম্পাদক হাসনাত কবির, রুহুল আমিন সোহাগ, আল আমিন হাওলাদার শ্রাবণ, মোহাম্মদ সোহেল, রিয়াদ তাফসি, মোহাম্মদ মোফাজ্জল, মোহাম্মদ সাইফুল প্রমুখ।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমনে উদ্ভুত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অনেক শিল্প মালিক বিভিন্ন কৌশলে শ্রমিকদের প্রতি দায়িত্ব অস্বীকার এবং তাদের অধিকার সংকোচনের প্রচেষ্টা চালাতে পারে। ইতিমধ্যে অনেক শ্রমিককে সম্পুর্ণ অন্যায়ভাবে শ্রম আইনের ২০ ধারার অপব্যবহার করে ছাঁটাইয়ের নোটিশ দেয়া হয়েছে। নেতৃবৃন্দ এই ধরণের অপতৎপরতা বন্ধের আহবান জানিয়ে বলেন পোষাক শিল্পে শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের দোহায় দিয়ে গার্মেন্টস মালিকরা বছরের পর বছর ধরে রাষ্ট্রের কাছ খেকে হাজার হাজার কোটি টাকার সুবিধা নিচ্ছে।
ফলে বর্তমান পরিস্থিতির দোহায় দিয়ে শ্রমিকদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরিবর্তে তাদের চাকুরিচ্যূত করার যেকোন প্রচেষ্টা প্রতারণার শামিল। নেতৃবৃন্দ প্রতিটি কারখানায় কর্মস্থলে প্রবেশ এবং কর্মস্থল ত্যাগের সময় শ্রমিকদের করোনা ভাইরাস সংক্রমন পরীক্ষা করতে এবং সংক্রমিত শ্রমিকের চিকিৎসা এবং চিকিৎসাকালিন সময়ে নিরাপদ আবাসন নিশ্চিত করতে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার দাবি জানান। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন কোন কারখানা ছুটি ঘোষণা করতে চাইলে সংশ্লিষ্ট কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানাসহ তথ্য ডাটাবেজ কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দিতে হবে, কারাখানা খোলার এবং শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধের প্রক্রিয়া সুনির্দিষ্ট করতে হবে।
সভায় সকল শ্রমিকের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নি¤œলিখিত ৭ দফা দাবিতে কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়-
কর্মস্থলে প্রবেশ এবং কর্মস্থল ত্যাগের সময় প্রতিটি শ্রমিকের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা এবং রাষ্ট্রিয় উদ্যেগে করোনা ভাইরাস সংক্রমিত শ্রমিকের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা রানা প্লাজা ধসের দিন ২৪ এপ্রিলকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্মেন্টস শ্রমিক শোক দিবস ঘোষণা শ্রম আইন সংশোধন করে কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবহেলার জন্য মালিকের সর্বচ্চ শাস্তির বিধান করা শ্রম আইনের অগণতান্ত্রিক সংশোধনী বাতিল করে কর্মস্থলে নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের হার নির্ধারণের জন্য শ্রম আইনের ১৫১ ধারা পুণরায় সংশোধন করে “ মারাত্মক দুর্ঘটনা আইন ১৮৫৫” এর আলোকে নতুন আইন প্রনয়ন করা কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা, পুর্নবাসন ও কাজে ফেরার নিশ্চয়তা বিধান করা রানা প্লাজা মালিকের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে শ্রমিক কলোনি নির্মাণ এবং প্রতিটি শিল্পাঞ্চলে শ্রমজীবীদের জন্য হাসপাতাল ও প্রতিটি কারকানায় স্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপন কর ছাঁটাই-নির্যাতনসহ সকল অপতৎপরতা এবং শ্রম আইনের অপব্যবহার বন্ধ করাসহ ৭ দফা দাবিতে নিম্নলিখিত কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়-
× ২৬ মার্চ, বৃহস্পতিবার, সকাল থেকে প্রতিটি শিল্পাঞ্চলে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করনিয় বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচার কার্যক্রম শুরু × ০৩ এপ্রিল, শুক্রবার সকাল ১০টা; জাতীয় প্রেস ক্লাবের সম্মুখে সমাবেশ ও মিছিল। × ১৭ এপ্রিল, শুক্রবার বিকাল ৩টা নারায়ণগঞ্জ শহীদ মিনারে সমাবেশ ও মিছিল। × ২৪ এপ্রিল, শুক্রবার সকাল ৮টা; সকল গার্মেন্টস শিল্পাঞ্চলে কালো ব্যাজ ধারণ এবং জুরাইন কবরস্থান ও রানা প্লাজার স্থানে অস্থায়ী শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শ্রমিক সমাবেশ × ২৪ এপ্রিল, শুক্রবার বিকাল ৪টা; নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এবং গাজিপুর চৌরাস্তায় শ্রমিক সমাবেশ।
করোনা পরিসংখ্যান এর লাইভ আপডেট দেখুন
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা