কিশোরগঞ্জের হাওর অধ্যুষিত উপজেলা মিঠামইনে ইতালি ফেরত শেখ হোসাইন মো. ইকবাল নামের ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। রবিবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ১৩ মার্চ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ তুলে লাইভ বক্তব্য ভাইরাল করেন। এক লাখ টাকা চাঁদা না দিলে পুলিশ তাকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে তালিকাভূক্ত করবে বলে হুমকি দেয়া হয়। পুলিশের তদন্তে এ অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ হলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সূত্র জানায়, রবিবার মিঠামইন থানার এসআই নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে শেখ হোসাইন মো. ইকবালসহ দুজনের নামে মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় অজ্ঞাত আরও কয়েকজন জড়িত থাকতে পারেন বলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় উল্লেখ রয়েছে। মামলার পরই তাকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ দাবি করেছে, মূলত হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্য চাপ দিলে হোসাইন মো. ইকবাল ক্ষিপ্ত হয়ে ফেসবুকে পুলিশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নামেন।
সোমবার বিকেলে জেলা পুলিশ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠার পর ১৯মার্চ বিষয়টি তদন্ত করতে নির্দেশ দেয়া হয়। অষ্টগ্রাম সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আজিজুল হক সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টির তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে পুলিশের চাঁদা দাবির ঘটনা মিথ্যা বলে প্রমানিত হয়। পুলিশের ভাবমূর্তি ও কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই এমন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করা হয় বলে পুলিশ মনে করছে। এ কারণে পুলিশ তার বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নেয়। তাকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় কারা জড়িত, কি কারণে তিনি এ ভিডিও ছেড়েছেন তার তদন্ত হচ্ছে।’
স্থানীয় সূত্র জানায়, মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া গ্রামের বাসিন্দা শেখ হোসাইন মো. ইকবাল আট বছর ইতালির রোমে ছিলেন। গত ৭মার্চ তিনি গ্রামের বাড়িতে আসেন। তাকে বিমানবন্দর থেকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি নির্দেশনা না মেনে প্রতিদিন ঘাগড়া বাজারে আড্ডা দেওয়াসহ লোকজনের সঙ্গে মেলামেশা করছিলেন। খবর পেয়ে ১৩মার্চ বিকেলে মিঠামইন থানার এসআই নজরুল ইসলাম ও কিরণ চন্দ্র মন্ডলের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘাগড়া বাজারে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পায়। তখন ইতালি ফেরত হোসাইন মো. ইকবালকে নিজের বাড়িতে আলাদা একটি কক্ষে ১৪দিন কোয়ারেন্টিন শেষ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান করতে বলা হয়। কিন্তু তিনি পুলিশের নির্দেশনা শুনে বাড়ি থেকে বের হয়ে পুলিশের সঙ্গেই হাত মেলানোর চেষ্টা করেন। তখন পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের হুমকি দিয়ে চলে যায়। পুলিশ প্রবাসীর স্ত্রী মোছা. বিউটিকেও বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করে। এদিন ঘাগড়া বাজারে করোনাভাইরাস বিষয়ে একটি সচেতনতামূলক সভা করে পুলিশ।
মিঠামইন থানার ওসি মো. জাকির রব্বানি বলেন,’পুলিশর সাথে বাকবিতণ্ডার রাতেই ইকবাল তার একটি লাইভ বক্তব্য ফেসবুকে আপলোড করেন। এতে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে পুলিশ নাকি তার তার কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছে এমন অভিযোগ করেন। তাছাড়া পুলিশের ইমেজ নষ্টের জন্য আরও বিভিন্ন অভিযোগ তোলেন। তার এই অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে।’
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা