অনলাইন ডেস্ক
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে কৃষিতে ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “সারা দেশে এক লাখ ৭৬ হাজার সাত হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটাকে আমরা এখনও টাকার অঙ্কে কনভার্ট করতে পারিনি।” তবে বোরো ধানের মত প্রধান ফসলের খুব বেশি ক্ষতি হয়নি জানিয়ে রাজ্জাক বলেন, “৭/৮ দিন আগে এই ঝড় হলে কৃষিতে আরও বেশি ক্ষতি হত। যতটুকু ক্ষতি হবে বলে আমরা ধারণা করেছিলাম তার থেকেও কম ক্ষতি হয়েছে।”
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি না হলেও আম, লিচু, কলা, সবজি, তিল এবং ‘অল্প কিছু’ বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির চূড়ান্ত হিসাব নিরূপণের কাজ চলছে।
“ইতোমধ্যে হাওরের শতভাগ, উপকূলীয় অঞ্চলের ১৭ জেলায় ৯৬ শতাংশ এবং সারা দেশে ৭২ শতাংশ বোরো ধান কাটা হয়েছে। ফলে যে ক্ষতি হয়েছে তা খাদ্য উৎপাদনে তেমন প্রভাব পড়বে না।”
প্রাথমিক প্রতিবেদন থেকে ফল ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতির কিছু তথ্যও মন্ত্রী তুল ধরেন।
• ৪৭ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধানের ১০ শতাংশ নষ্ট হয়েছে • ৩ হাজার ২৮৪ হেক্টর জমির ভুট্টার ৫ শতাংশ নষ্ট হয়েছে • ৩৪ হাজার ১৩৯ হেক্টর জমির পাটের ৫ শতাংশ নষ্ট হয়েছে • ২ হাজার ৩৩৩ হেক্টর পানের বরজের ১৫ শতাংশ নষ্ট হয়েছে • ৪১ হাজার ৯৬৭ হেক্টর জমির সবজির ২৫ শতাংশ নষ্ট হয়েছে • এক হাজার ৫৭৫ হেক্টর জমির চিনাবাদামের ২০ শতাংশ নষ্ট হয়েছে • ১১ হাজার ৫০২ হেক্টর জমির তিলের ২০ শতাংশ নষ্ট হয়েছে • ৭ হাজার ৩৮৪ হেক্টর জমির আমের ১০ শতাংশ নষ্ট হয়েছে • ৪৭৩ হেক্টর জমির লিচুর ৫ শতাংশ নষ্ট হয়েছে • ৬ হাজার ৬০৬ হেক্টর জমির কলার ১০ শতাংশ নষ্ট হয়েছে • ১২৯৭ হেক্টর জমির পেঁপের ৫০ শতাংশ নষ্ট হয়েছে • ৩ হাজার ৩০৬ হেক্টর জমির মরিচের ৩০ শতাংশ নষ্ট হয়েছে • ৬৪০ হেক্টর জমির সয়াবিনের ৫০ শতাংশ নষ্ট হয়েছে • ৭ হাজার ৯৭৩ হেক্টর জমির মুগডালের ৫০ শতাংশ নষ্ট হয়েছে • ৬ হাজার ৫৩২৮ হেক্টর জমির আউশ ধানের ক্ষতি হয়েছে
মন্ত্রী বলেন, সাতক্ষীরা জেলায় ৬০-৭০ শতাংশ আম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় ঝড়ে পড়া আম জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে কিনে তা ত্রাণ হিসেবে দুস্থদের মাঝে বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
“এতে একদিকে যেমন আম চাষীরা কিছুটা আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবেন, অন্যদিকে দুঃস্থ ও অসহায় জনগণের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে।” উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তরা ব্লকে ব্লকে গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করবেন জানিয়ে রাজ্জাক বলেন, আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা করছেন।
“টাকার অংকে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে কৃষকদের ক্ষতি পোষানোর ব্যবস্থা করা হবে, তাদের প্রণোদনা দেওয়া হবে।” কৃষিমন্ত্রী জানান, প্রণোদনা হিসেবে ক্ষতিগ্রস্তদের বিনামূল্যে সার, বীজ ও নগদ সহায়তা দেওয়া হবে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক, ফল ও পান চাষীদের ৪ শতাংশ সুদে কৃষি ঋণের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পান বুধবার দুপুরের পর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আঘাত হানে। পরে রাতে এ ঝড় প্রবেশ করে বাংলাদেশে। ঝড়ের মধ্যে প্রবল বাতাসে বহু গাছপালা ভেঙে পড়ে, ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েন সোয়া দুই কোটি গ্রাহক। দেশের ৪৬টি জেলার ওপর দিয়ে এই ঝড় বয়ে গেলেও গত ১৫ মে থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করায় কৃষিতে ‘খুব বেশি ক্ষতি’ হয়নি বলে মন্তব্য করেন কৃষিমন্ত্রী।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা