অনলাইন ডেস্ক
কবির ভাষায়, ‘আকাশভরা সূর্যতারা/বিশ্বভরা প্রাণ…’। সেই বিশ্বভরা প্রাণের উচ্ছ্বাসে গভীর শ্রদ্ধায় আজ বাঙালি স্মরণ করবে কবিগুরুকে তাঁরই লেখা গানে, কবিতায়, নাটকে…। নতুন চিন্তনে ও হৃদয়ের সুকুমার অনুভূতির প্রকাশে অনুভব করবে তাঁর প্রাসঙ্গিকতা। রবীন্দ্রনাথ আমাদের বাইশে শ্রাবণ। রবীন্দ্রনাথ আমাদের পঁচিশে বৈশাখ। বাংলা ক্যালেন্ডারের দু’টো স্মরণীয় দিন। বাইশে শ্রাবণ কবির প্রয়াণতিথি, পঁচিশে বৈশাখ জন্মতিথি। ১২৬৮ বঙ্গাব্দের এই দিনে (৭ মে, ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দ) কলকাতায় জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে ক্ষণজন্মা এই মানুষটির জন্ম হয়।
দেশে বর্তমানে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে কবির জন্মদিন উপলক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে তেমন কোনো আয়োজন হচ্ছে না। তবে সরকারি ও বেসরকারি বেতার-টেলিভিশনে কবি স্মরণে বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করা হবে।
ছায়ানট রবীন্দ্রনাথের এবারের জন্মদিনে ‘ধর নির্ভর গান’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানটি প্রচার হবে শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায়। ছায়ানটের ফেসবুক গ্রুপ ও ইউটিউব চ্যানেলে এটি প্রচার করা হবে।
জন্মদিনের আড়ম্বর নিয়ে কবি নিজেই ১৩৪৩ সালে প্রবাসী পত্রিকায় লিখেছিলেন, ‘খ্যাতির কলবরমুখর প্রাঙ্গণে আমার জন্মদিনের যে আসন পাতা রয়েছে সেখানে স্থান নিতে আমার মন যায় না। আজ আমার প্রয়োজনে স্তব্দতায় শান্তিতে।’ বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয়ের শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি, গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন এবং ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় তার ‘অভিলাষ’ কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। মাত্র ১৭ বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ ব্যারিস্টারি পড়তে ইংল্যান্ডে যান। কিন্তু সাহিত্যচর্চার প্রতি অধিক আগ্রহের কারণে তার আর ব্যারিস্টারি হয়নি। ১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
রবীন্দ্রনাথ ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, কথাশিল্পী, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার, সংগীত রচয়িতা, সুর¯্রষ্টা, গায়ক, চিত্রশিল্পী, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। সৃষ্টিশীলতার সমান্তরালে তিনি ধর্ম, দর্শন, রাজনীতি ও সমাজভাবনা সমানভাবেই চালিয়ে গেছেন। বিশ্বভারতী তাঁর বিপুল কর্মকান্ডের একটি প্রধান কীর্তি। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। তার ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ এবং অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয় এবং সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫ টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে ভ্রমণকাহিনীর এক বিশাল ভান্ডার।
৮ বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। ১৮৭৮ সালে ব্যারিস্টারি পড়ার উদ্দেশ্যে তিনি ইংল্যান্ড যান। সেখানে তিনি ব্রাইটনের একটি পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন এবং পরে ১৮৭৯ সালে লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজে আইনবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন।
প্রায় দেড় বছর ইংল্যান্ডে কাটিয়ে ১৮৮০ সালে কোনো ডিগ্রি না নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। ১৮৮৩ সালের ভবতারিণীর সঙ্গে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিবাহিত জীবনে ভবতারিণীর নামকরণ হয়েছিল মৃণালিনী দেবী। জীবনের পাশাপাশি চলতে থাকে তার সাহিত্যচর্চা। ১৮৯১ সাল থেকে বাবার আদেশে নদিয়া, পাবনা, রাজশাহী ও উড়িষ্যার জমিদারি তদারকি শুরু করেন রবীন্দ্রনাথ। কুষ্টিয়ার শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে তিনি দীর্ঘসময় পার করেন।
১৯০১ সালে রবীন্দ্রনাথ সপরিবারে শিলাইদহ ছেড়ে চলে আসেন বীরভূম জেলার বোলপুর শহরের উপকণ্ঠে শান্তিনিকেতনে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পৌঁছে দিয়েছেন বিকাশের চূড়ান্ত সোপানে। বাংলা ভাষার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথকে গুরুদেব, কবিগুরু ও বিশ্বকবি উপাধিতে ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় ও মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়েছে।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা