আইন লঙ্ঘণকারী চলচ্চিত্রসমূহকে জাতীয় পুরস্কার প্রদান করায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে তামাকবিরোধী জোট। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সংগঠনটি থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ৭ নভেম্বর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। এ বছর ২০১৭ ও ২০১৮ সালে চলচ্চিত্র শিল্পে অবদানের জন্য ২৮টি বিভাগে বিশিষ্ট শিল্পী ও কলাকূশলীকে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ প্রদানের ঘোষণা করেছে তথ্য মন্ত্রণালয়। ২০১৭ সালের সেরা ছবির পুরস্কার পাচ্ছে দীপংকর দীপন পরিচালিত ‘ঢাকা অ্যাটাক’ চলচ্চিত্র। এ চলচ্চিত্র নির্মানে তামাক কোম্পানি সহায়তা করেছে। এছাড়া ২০১৮ সালে চলচ্চিত্রের শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী প্রধান চরিত্রের জন্য জয়া আহসান (দেবী চলচ্ছিত্র) মনোনীত হয়েছেন। জয়া আহসান একজন স্বনামধন্য, গুণী অভিনেত্রী হলেও যে চলচ্চিত্রটির (দেবী) জন্য মনোনয়ন প্রদান করা হয়েছে সেটিও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘণের দায়ে নানাভাবে বির্তকিত ও সমালোচিত।
আরও পড়ুন : সিরাজগঞ্জের ট্রেন দুর্ঘটনা তদন্তে শহিদুল ইসলামকে প্রধান করে চার সদস্যের কমিটি গঠন
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আর্ন্তজাতিক পর্যায়েও সিনেমায় ধূমপানের দৃশ্য দেখানোর জন্য তামাক কোম্পানির দ্বারা বিপুল অর্থ ব্যয় করার উদাহরণ রয়েছে। যা পরোক্ষভাবে তামাক কোম্পানির এক ধরনের প্রচারণা কৌশল। ২০০৪ এবং ২০০৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত হিন্দি চলচ্চিত্রের উপর পরিচালিত বার্নিং ব্রেইন সোসাইটি কর্তৃক পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, এ সময়ে মুক্তিপ্রাপ্ত ৮৯ ভাগ চলচ্চিত্রে তামাকের ব্যবহার দেখানো হয়েছে। ৬৭ ভাগ চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্রকে ধূমপান করতে দেখা গেছে। ৪১ ভাগ চলচ্চিত্রে তামাকের ব্র্যান্ড দেখানো হয়েছে।
‘ঢাকা অ্যাটাক’ চলচ্চিত্র ও সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত জয়া আহসান প্রযোজিত ‘দেবী’ চলচ্চিত্রটিতে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ও সংশ্লিষ্ট বিধিমালার নির্দেশনাগুলো মানা হয়নি। ‘দেবী’ সিনেমায় মিসির আলির চরিত্রটি অত্যন্ত জনপ্রিয় কিশোর ও তরুণদের কাছে। চরিত্রটিকে অপ্রয়োজনে অসংখ্যবার ধূমপানের দৃশ্য দেখানো হয়েছে| সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)এর তথ্যানুসারে, চলচ্চিত্রে ধূমপানের দৃশ্য যুবদের উপর নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে ২০১০ সাল থেকে ১৩ বা ততোধিক বয়সের জন্য নির্মিত সিনেমায় তামাক সংক্রান্ত ঘটনাগুলো জনস্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বাংলাদেশে চলচ্চিত্র অঙ্গনের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি। তামাক কোম্পানির প্রণোদনাপ্রাপ্ত এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘণকারী চলচিত্রগুলোকে জাতীয় পুরস্কার প্রদান করা হলে, প্রধানমন্ত্রীর ২০৪০ সালের মধ্যে ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার প্রত্যয় বাস্তবায়ন বাধাপ্রাপ্ত হবে। এ ধরনের দৃষ্টান্ত অন্যদেরকেও আইন লঙ্ঘণে উৎসাহী করে তুলবে।
সরকারের তামাক নিয়ন্ত্রণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী এমন দুটি চলচ্চিত্র ও কলাকূশলীদেরকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য মনোনীত করায় বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছে। সেই সাথে আগামী দিনে এ ধরনের চলচ্চিত্রগুলোকে পুরস্কার প্রদান থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানাচ্ছে।
ফেসবুক পেজ :
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা