জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য ফারজানা ইসলামের সঙ্গে টাকা ভাগাভাগির বিষয়ে ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে সংগঠনটির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সংবাদ প্রকাশ করেছে গণমাধ্যমও। কে বা কারা রেকর্ড করেছেন বা ছড়িয়ে দিয়েছেন, তথ্য সূত্র জানা যায়নি। এধরণের অডিও’র ক্ষেত্রে তা সাধারণত জানা যায়ও না। কিন্তু থেমে নেই আলোচনা-সমালোচনা।
এই অডিও’র কথোপকথন সত্য হলে, উপাচার্য যাদের টাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ এসেছে, তাদেরই একজন টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করছেন।
রাব্বানী-সাদ্দামের ওই কথোপকথন থেকে জানা যায় যে, উপাচার্যের বাসবভনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল রানা, সাধারণ সম্পাদক এসএম আবু সুফিয়ান চঞ্চল, সহ-সভাপতি তাজসহ সাদ্দাম নিজেই উপস্থিত ছিলেন।
সেদিন জাহাঙ্গীরনগর ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে শোভন-রাব্বানীর বিরুদ্ধে একটি প্রেসরিলিজ দেওয়া হয়েছে বলে রাব্বানীকে জানান সাদ্দাম।
সাদ্দামের কাছ থেকে পুরো বিষয়ের বর্ণনা জানতে চাইলে রাব্বানীকে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাম দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে সমঝোতায় গেছে। বৈঠকে বিচার বিভাগীয় তদন্ত বাদে প্রশাসন বাকি সব দাবি মেনে নিয়েছে এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের ব্যাপারে দাবি মানবে কী না, তিনদিন সময় দিয়েছে।
সেসময় রাব্বানী জাবি উপাচার্যের প্রসঙ্গ টেনে বলেন যে, উপাচার্য বলেছেন যে তারা (ছাত্রলীগ) আন্দোলন করাচ্ছেন। তবে কারা আন্দোলন করছে তা জানেন না বলেও জানান রাব্বানী।
তখন সাদ্দাম বলেন, উপাচার্য ছাত্রলীগের ওপর দিয়ে সবকিছু করে নিজের পরিবারকে রক্ষা করতে চাইছেন।
কথোপকথনের এক পর্যায়ে টাকা ভাগবাটোয়ারা প্রসঙ্গে রাব্বানীকে সাদ্দাম জানান, উপাচার্যের সঙ্গে তাদের বনিবনা হয়েছে এবং হলে টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
রাব্বানীর সঙ্গে সাদ্দামের কথোপকথন থেকে জানা যায় যে, জাবি ছাত্রলীগকে এক কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকার ব্যাপারে জুয়েল ও চঞ্চলের সঙ্গে আলাদা বনিবনা হতে পারে বলেও জানান সাদ্দাম।
রাব্বানী যখন ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা দেওয়ার কথা শুনছেন বলে জানান, তখন সাদ্দাম বলেন যে- তিনি বাকি ৬০ লাখ টাকার ব্যাপারে জানেন না। তবে জুয়েলকে ৫০ লাখ, চঞ্চলকে ২৫ লাখ এবং তাকে ২৫ লাখ টাকা করে উপাচার্য নিজেই ভাগ করে দিয়েছেন বলে জানান সাদ্দাম।
এসময় সাদ্দাম আরও জানান যে, তাদেরকে না জানিয়ে বাকি ৬০ লাখ টাকা জুয়েল ও চঞ্চলকে দেওয়া হতে পারে।
তবে এসব ব্যাপারে উপাচার্য কেনো তার নাম জড়ালেন সে ব্যাপারে কোনো ধারণা নেই বলেও জানান রাব্বানী।
রাব্বানী-সাদ্দামের কথোপকথন থেকে আরও জানা যায়, উপাচার্য নিজেকে এবং তার পরিবারকে রক্ষা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে নালিশ দিয়েছেন বলে মনে করেন রাব্বানী।
উপাচার্যের স্বামী, ছেলে, ব্যক্তিগত সহকারী সানোয়ার, ব্যক্তিগত গাড়িচালক নাসির জাবি উন্নয়ন প্রকল্পের টেকনিক্যাল কমিটিতে ছিলেন এবং তারা আগে থেকেই নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পাওয়া ছয়টি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন বলেও জানান সাদ্দাম।
তাছাড়া সাদ্দামের ভাষ্যে আরও জানা যায় যে, শিডিউল বিক্রির সময় উপাচার্য ইচ্ছে করেই হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি হয়েছিলেন।
এই ফাঁস হওয়া অডিও বিষয়ে জানা যায়, রাব্বানী ফোন করেছিলেন অন্তরকে। টাকা ভাগের প্রসঙ্গে অন্তর ফোন ধরিয়ে দেন সাদ্দামকে। সাদ্দাম টাকা ভাগাভাগির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
অন্তরের মোবাইলে কথোপকথনের অডিও ফাঁস হওয়ায় জাবি প্রক্টর অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ-উল হাসান ফোন করে অন্তরকে প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়েছেন। বিষয়টি অন্তর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খোলা চিঠি লিখে জানিয়েছেন।
NB:This post is collected from https://www.thedailystar.net
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা