এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত ৯১ জন গর্ভবতী মা সেবার অধীনে আছেন, ৭৫ গর্ভবতী মা সন্তান প্রসব করেছেন, ৬৯ শিশুকে এইচআইভি সংক্রমণ থেকে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে, বাকী শিশুরা পরীক্ষার অপেক্ষায় আছে।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় একটি সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানে একথা বলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা, কনক কান্তি বড়ুয়া। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রতিবছর বিশ্ব এইডস দিবস পালন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. মিল্টন হলে এ আলোচনার আয়োজন করা হয়।
এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় “এইডস নির্মূলে প্রয়োজন জনগণের অংশগ্রহণ”। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক (ন্যাশনাল এইডস এসটিডি কন্ট্রোল) আমিনুল ইসলাম মিয়া। আরো উপস্থিত ছিলেন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ, অবস এন্ড গাইনী বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. তৃপ্তি রাণী দাস, সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সালেহা বেগম চৌধুরী, ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সী, অধ্যাপক ডা. বেগম নাসরিন, ডা. মেরিনা আক্তার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিচালক (হাসপাতাল) ও সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক ব্রিগে. জেনারেল ডা. এ কে মাহবুবুল হক। পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পরিচালক ডা. মোঃ নাজমুল করিম মানিক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেছেন, এইচআইভিতে আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয়ে সংশ্লিষ্ট সকল মানুষকে রেপিড টেস্টের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। এইচআইভিতে বা এইডস-এ আক্রান্তদের মুত্যুহার শূন্যের কোটায় নিতে আসতে আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
উপাচার্য বলেন, দেশে এইচআইভিতে আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশে চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রথম ও প্রধান পোস্ট গ্রাজুয়েট বিশ্ববিদ্যালয় যেখান থেকে বিভিন্ন বিভাগের মাধ্যমে রোগীদের কম্প্রিহেনসিভ স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা হয়।
১৯৮৯ সালে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগে বাংলাদেশে প্রথম এইচআইভি সনাক্ত করা হয় এবং বর্তমানে তা অব্যাহত আছে। ২০১৩ সালের আগ পর্যন্ত সরকারী স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত গর্ভবতী মায়েদের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল না।
বাংলাদেশে সরকারী পর্যায়ে প্রথম বারের মতো গত ১৬ মে ২০১৩ইং থেকে এইচআইভি আক্রান্ত গর্ভবতী মায়েদের সেবা প্রদান অবস্ এন্ড গাইনী বিভাগের মাধ্যমে এই বিশ্ববিদ্যালয় শুরু করেছে এবং এ সেবা অব্যাহত ভাবে চলছে। এই পর্যন্ত মোট ৯১ জন গর্ভবতী মা এই সেবার অধীনে আছেন।
২৯ হাজার ৮ শত ৯২ জান গর্ভবতী মায়েদেরকে পরীক্ষায় মাধ্যমে ৯১ জনের এইচআইভি পজেটিভ পাওয়া যায়। ৭৫ জন এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত গর্ভবতী মা সন্তান প্রসব করেছেন। তাঁদের মধ্যে দেশে নতুন ৬৯ জন শিশুকে এইচআইভি সংক্রমণ থেকে প্রতিরোধ বা রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। বাকী শিশুরা পরীক্ষার অপেক্ষায় আছে। এরই ধারাবাহিকতায় এইচআইভিতে আক্রান্ত সকল রোগীদের জন্য অত্র বিশ্ববিদ্যালয় সেবার পরিধি বৃদ্ধি করেছে, যা স্ট্রেনদেনিং অফ পিএমটিসিটি সার্ভিসেস (Strengthening of PMTCT Services in Selected Public Hospitals of Dhaka Division, Bangladesh, Bangabandhu Sheikh Mujib Medical University (BSMMU) নামে এই বছরে শুরু হয়েছে।
অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সেবামূলক কার্যক্রমটি জাতীয় এইডস এবং এসটিডি (STD) প্রোগ্রাম ও ইউনিসেফের সহযোগিতায় পরিচালিত হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ২০১৭ সালের অক্টোবর মাস থেকে এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বিনামুল্যে এআরভি প্রদান ও সকল রোগের যথাযথ চিকিৎসা সেবার পথ উন্মুক্ত হয়েছে। অত্র বিশ্ববিদ্যালয় হতে সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী এআরভি নিচ্ছেন। গত ২৫ শে নভেম্বর পর্যন্ত মোট ১২৫৯ জন রোগী এআরভি নিয়েছেন। তাদের সকল পরীক্ষা ও চিকিৎস সেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে এবং এই সেবাও অব্যাহতভাবে চলছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়- বাংলাদেশ সরকারের সাথে এবারের স্লোগান “এইডস নির্মূলে প্রয়োজন; জনগণের অংশগ্রহণ”-এর সাথে একাত্ততা ঘোষণা করে এইচআইভি আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্য সেবার বিভিন্ন দিক উন্মোচন করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অন্য বক্তারা এইচআইভি প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা