অনলাইন ডেস্ক
এটা সরকারি হিসাবের বাইরে। এদের উপসর্গ ছিল, কিন্তু পরীক্ষা করাতে না পারায় করোনা নিশ্চিত হয়নি। করোনা সংক্রমণ নিশ্চিত করতে, দেশে চিকিৎসাষেবা পেতে বেশ দুরুহ। রোগীর স্বজনরা হাসপাতালের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন।
কিন্তু পরীক্ষাও করাতে পারেননি, পাননি চিকিৎসাও।এ ধরনের রোগীর অধিকাংশই অশেষ কষ্ট ভোগ করে ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন। এরপর তাদের দেহে কভিড-১৯’র সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়া গেছে।বিশেষজ্ঞদের মতে, উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর কথা বলা মানে এক প্রকার দায় এড়ানোর চেষ্টা করা।
কারণ উপসর্গ নিয়ে যাদের মৃত্যু হয়েছে, তারা মূলত করোনায় মারা গেছেন। যখন মহামারী বিরাজ করে, তখন উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু- এ কথা বলার কোনো যৌক্তিকতা থাকে না। উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু প্রসঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মন্তব্য হল- তারা মূলত এই রোগেই মারা গেছেন।
তবে উপসর্গগুলো পর্যালোচনা করে একজন চিকিৎসককে এ মন্তব্য করতে হবে।গবেষণায় দেখা গেছে, উপসর্গ নিয়ে মৃতদের মধ্যে ৮৮ জনের (২৩ ভাগ) কোনো রকম নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি, ২৯৮ জনের (৭৭ ভাগ) নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়েছিল।
এই ২৯৮টি নমুনার মধ্যে ২৬৫টি (৮৯ ভাগ) সংগৃহীত হয়েছে মৃত্যুর পরে। আর মাত্র ৩৩টি নমুনা (১১ ভাগ) সংগৃহীত হয়েছে মৃত্যুর আগে।অর্থাৎ ৩৮৬ জনের মধ্যে মাত্র ৩৩ জনের (৮.৬ ভাগ) থেকে জীবিত অবস্থায় নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়।
এই রোগীদের ১৩.৯৩ ভাগের মৃত্যু হয় ভর্তি হওয়ার মাত্র ১ ঘণ্টার মধ্যে। ৬ ঘণ্টার মধ্যে (কিন্তু ১ ঘণ্টার বেশি) মৃত্যু হয় ২১.৩১ ভাগ রোগী, ৬ ঘণ্টা থেকে ১২ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হয় ২২.১৩ ভাগ, আর ১২ ঘণ্টা থেকে ১ দিনের মধ্যে মৃত্যু হয় ২৩.৭৭ ভাগ।
অর্থাৎ হাসপাতালের করোনা বা আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তির প্রথম দিনেই মারা গেছেন ৮১.১ ভাগ রোগী, আর ১ থেকে ২ দিনের মধ্যে মৃত্যু হয় ১০.৬৬ ভাগ।উপসর্গ নিয়ে মৃতদের মধ্যে ১৪ জনকে (৩.৯০ ভাগ) বাসার বাইরে রাস্তার ধারে, মসজিদে, বাজারে, উপকূলে, চা বাগানে, বাসার সামনে, হাসপাতালের বাইরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
ক্ষেত্রবিশেষ লাশ দীর্ঘ সময় ওভাবেই পড়ে ছিল। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে লাশ উদ্ধারের আগে কেউই মৃত দেহের কাছেও যায়নি। অথচ একটু উদ্যোগ নেয়া হলে তাদের শেষ সময়টা অন্যরকম হতে পারত।গত ৮ মার্চ থেকে ১৩ মে পর্যন্ত উপসর্গ নিয়ে ৯২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ (সিজিএস)।
ইউএনডিপির আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ পিস অবজারভেটরি এবং সিজিএস ১৩ মে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এরপর ১ জুন পর্যন্ত আরও অর্ধশত মানুষ মারা গেছেন উপসর্গ নিয়ে। জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টের বাইরেও যেসব লক্ষণ দেখা গেছে সেগুলো হচ্ছে- সর্দি, ডায়রিয়া, গলাব্যথা, ঠাণ্ডা, বুকে ব্যথা, বমি, মাথাব্যথা, শরীরে ব্যথা, খিঁচুনি, পেটব্যথা, আমাশয় ও কানে ব্যথা, নাক দিয়ে রক্তপাত।
মৃত ৩৪৫ জনের মধ্যে ২৬৮ জনেরই জ্বর ছিল, ২৩৫ জনের ছিল শ্বাসকষ্ট, ১৩৮ জনের ছিল সর্দির লক্ষণ ছিল। জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও সর্দি- এই চার লক্ষণের কমপক্ষে দুটি ছিল ২৪৬ জনের, কমপক্ষে তিনটি ছিল ১৪৯ জনের।
fblsk
করোনা পরিসংখ্যান এর লাইভ আপডেট দেখুন
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা