অনলাইন ডেস্ক
দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির দ্রুত ইতিবাচক পরিবর্তনে এবং মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এই অবশ্য করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় কর্মকৌশল নির্ধারণে বসেন অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। বেশ কিছু সংযোজন- বিয়োজনের পর সোমবার এটি চূড়ান্ত করা হয়।
যে ৯টি কর্মপন্থা চূড়ান্ত করা হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে- ১. আইইডিসিআরের ভূমিকার ওপর জোর দেয়া। এ ক্ষেত্রে আইইডিসিআর কোভিড-১৯ এর একটি রেফারেন্স ল্যাবরেটরি হিসেবে কাজ করবে; কোভিড-১৯ পরীক্ষাগার কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেবে; পরীক্ষাগারগুলোর জন্য একটি বাহ্যিক মানের নিশ্চয়তা বিধান করবে।
দেশব্যাপী ‘কন্টাক্ট ট্রেসিং’ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। তাছাড়া কোভিড-১৯ মহামারী সংক্রান্ত নজরদারি; তথ্য বিশ্লেষণ; প্রত্যাশা, সংক্রমণ পদ্ধতি, ক্লিনিক্যাল পরিচালনা, নীতিগত সিদ্ধান্ত ইত্যাদির জন্য বিভিন্ন ধরনের বিশ্লেষণ পরিচালনা করবে প্রতিষ্ঠানটি।
২. নমুনা সংগ্রহ ও পরিবহন বাড়াতে সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থাসমূহ যৌথভাবে কাজ করবে।
৩. আরটি-পিসিআর ল্যাব ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য স্বাস্থ্য খাতের অভ্যন্তরে ও বাইরে উভয়ই সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থাসমূহ একত্র করা।
৪. প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহের নিশ্চয়তা, যেমন- নমুনা সংগ্রহের কিট, পরিবহন ব্যবস্থা, নিষ্কাশন কিট, পরীক্ষার কিট, পরীক্ষাগার রি-এজেন্ট, পিপিই ইত্যাদি।
৫. অতিরিক্ত মানবসম্পদের জন্য সহায়তা প্রদান করা।
৬. সরঞ্জাম এবং ল্যাব আনুষঙ্গিকের জন্য সমর্থন প্রদান।
৭. কোভিড-১৯ পরীক্ষাগার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান এবং ডেটা এন্ট্রি, ডেটা মানের এবং সম্পূর্ণতা, ডেটা বিশ্লেষণ ও ডেটা প্রকাশ এবং প্রশাসনিক উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা এবং নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ব্যবহার।
৮. প্রকল্প পরিচালনা, সমন্বয়, তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ করা এবং প্রতিদিন সমস্যা সমাধানের জন্য একটি অত্যন্ত গতিশীল সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা। ৯. অন্যান্য যে কোনো প্রাসঙ্গিক ক্রিয়কলাপ নিশ্চিত করা।
সংশ্লিষ্টরা এক্ষেত্রে আইইডিসিআরের কর্মকাণ্ড সুনির্দিষ্টকরণ করেছে। করোনা নিয়ন্ত্রণ আইইডিসিআর দেশের কোভিড-১৯ রেফারেন্স ল্যাবরেটরি হিসেবে কাজ করবে।
এটি আরটি-পিসিআর পরীক্ষার জন্য এবং পরে বাংলাদেশে প্রবর্তিত হলে অ্যান্টিজেন/অ্যান্টিবডি পরীক্ষার মানদণ্ড স্থাপন করবে। কোভিড-১৯ নেটওয়ার্ক ল্যাবরেটরিগুলোর যে কোনো প্রাপ্ত ফলাফলের কোনো অস্পষ্টতা বা বিভ্রান্তি থাকলে, আইইডিসিআর স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরামর্শে পরামর্শ এবং নীতিনির্দেশিকা সরবরাহ করবে।
এমনকি নতুন পরীক্ষাগার স্থাপনে আইইডিসিআর সহায়তা করবে। কোভিড-১৯ ল্যাবরেটরি নেটওয়ার্কের দ্রুত সম্প্রসারণে আইইডিসিআর প্রয়োজনীয় ল্যাবরেটরি কর্মী ও কর্মীদের জন্য যেখানে প্রয়োজন সেখানে ফ্রেসার এবং রিফ্রেসারদের প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা তৈরি করবে এবং সরবরাহ করবে।
কোভিড-১৯ পরীক্ষাগারগুলোর জন্য একটি বাহ্যিক গুণমান আশ্বাস সংস্থা হিসাবে পরিবেশন করবে। আইইডিসিআর, একটি রুটিন পদ্ধতি হিসাবে, প্রতিটি পরীক্ষাগারের ১ শতাংশ ইতিবাচক এবং নেতিবাচক নমুনা পরীক্ষা করবে।
আইইডিসিআর সময়ে সময়ে অজানা কোভিড-১৯ সংক্রান্ত ইতিবাচক এবং নেতিবাচক নমুনা বিভিন্ন গবেষণাগারে প্রেরণ করতে পারে এবং তাদের পরীক্ষা করার জন্য এবং আইইডিসিআরকে পুনরায় রিপোর্ট করতে হবে। আইইডিসিআর গুণমানের পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ল্যাবরেটরির কাছ থেকে নমুনা চাইতে পারে।
এভাবে আইইডিসিআর সেই পরীক্ষাগারগুলোর পরীক্ষার মানকে বৈধতা দিতে পারবে। আইইডিসিআর অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক মানের আশ্বাসের অন্যান্য পদ্ধতিও অনুসন্ধান করতে পারে এবং পরীক্ষাগারগুলো পরীক্ষার মান বজায় রাখছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য সেগুলো প্রয়োগ করবে।
আইইডিসিআর নেটওয়ার্ক ল্যাবরেটরিগুলোর ডেটা হাব হিসাবে কাজ করবে। এছাড়া নীতি গাইডেন্সির তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাখ্যা এবং বিকাশের জন্য ডেটা বিশ্লেষণের জন্য দায়বদ্ধ থাকবে প্রতিষ্ঠানটি।
যেহেতু আইইডিসিআর রোগ নজরদারি, প্রাদুর্ভাব তদন্ত এবং প্রতিক্রিয়া জারি করার জন্য নির্ধারিত প্রতিষ্ঠান; তাই এটি নজরদারির কেন্দ্রবিন্দু হবে। কোভিড-১৯ এর সম্প্রসারণ বোঝার জন্য মহামারী সংক্রান্ত নজরদারি করবে। এ জাতীয় নজরদারিগুলোর জন্য পরীক্ষাগারে প্রয়োজনীয় সহায়তা সরবরাহ করবে।
তাছাড়া আইইডিসিআর একটি মহামারী গবেষণা সংস্থা। সুতরাং, আইইডিসিআরের কাছ থেকে আশা করা হচ্ছে যে তারা কোভিড-১৯ সম্পর্কিত জরিপ এবং গবেষণা করবে। সংগৃহীত ডেটা আরও বিশ্লেষণের জন্য ডেটার উত্তম উৎস হতে পারে। আইইডিসিআর সম্ভাব্যভাবে ডেটা সংগ্রহ করতে পারে।
সমীক্ষা এবং গবেষণার তালিকায় অন্যদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে, (ক) জনসংখ্যার বিশ্লেষণ; (খ) রোগগুলোর সূত্রপাতের ভিত্তিতে এবং ভৌগোলিক অঞ্চল অনুসারে জাতীয় এবং স্থানীয় উভয়ই নমুনা সংগ্রহের তারিখের ভিত্তিতে প্রতিদিনের মহামারী সংক্রান্ত বাঁক; (গ) সময়ের সিরিজ প্রজেকশন; (ঘ) মামলার মৃত্যুর সাথে সম্পর্কিত কারণসমূহ; (ঙ) হাসপাতাল পরিচালনা, চিকিৎসা এবং ফলাফল; (চ) কীভাবে এবং কেন সমস্ত খাতে স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহকারী এবং অন্যান্য কোভিড-১৯ কর্মক্ষেত্রে সংক্রমিত হচ্ছে;
(ছ) জীবিকা নির্বাহের বিরুদ্ধে সাধারণ নিষেধাজ্ঞাগুলো- সুবিধা এবং ঝুঁকি; (জ) কোন কর্মক্ষেত্রগুলো অন্যের চেয়ে নিরাপদ এবং কোনো অর্থনৈতিক কার্যক্রম শীঘ্রই এবং কীভাবে শুরু করা যেতে পারে; (ঝ) স্থানীয়ভাবে তৈরি কন্টেন্ট জোন (লকডাউন) এবং কীভাবে নির্মূল করতে পারে; (ঞ) বাংলাদেশে কোভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণের জন্য সাধারণ আচরণগুলো কী কী;
(ট) মৃত্যু পর্যালোচনা ইত্যাদি সমীক্ষা এবং গবেষণার দীর্ঘ তালিকা থাকতে পারে। আইইডিসিআর পরীক্ষাগার গবেষণা নমুনা পরীক্ষার জন্য ব্যবহার করা হবে।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ যুগান্তরকে বলেন, আমরা বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে করোনা নিয়ন্ত্রণে আরও গতিশীল ভূমিকা কিভাবে রাখা যায় সে বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। আমরা আশা করছি এখন থেকে করোনা পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা আরও সহজসাধ্য হবে।
fblsk
করোনা পরিসংখ্যান এর লাইভ আপডেট দেখুন
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা