অনলাইন ডেস্ক
গত সোমবার যে পুলিশ সদস্য কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় মারা গেছেন, তিনি ট্রাফিক পুলিশ সদস্য। তার নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস ‘নেগেটিভ’ আসায় ফের পরীক্ষা করা হচ্ছে।
ঢাকায় কর্মরত মহানগর ট্রাফিক বিভাগের (উত্তর) যুগ্ম কমিশনার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের প্রতিদিন ধুলোবালি, যানবাহনের ধোঁয়া হজম করতে হয়। আর এ কারণে তাদের অধিকাংশের ফুসফুসের সমস্যা থাকে। শ্বাসকষ্টে ভোগেন।”
চট্টগ্রাম নগরীতে যে চার পুলিশ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তারাও ট্রাফিক পুলিশ সদস্য।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার মাহবুবুর রহমান বলেন, আক্রান্তদের মধ্যে ট্রাফিক পুলিশ সদস্য বেশি, কারণ তাদের দীর্ঘ সময় ধুলোবালির মধ্যে রাস্তায় থাকতে হয়।
রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতাল থেকে জানা যায়, আক্রান্তের মধ্যে অধিকাংশই কনস্টেবল পর্যায়ের সদস্য।
এই হাসপাতালে থাকা ৫২ কোভড-১৯ রোগীর মধ্যে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তা রয়েছেন। তিনি ভালো হওয়ার পথে। আর পরিদর্শক এবং এএসআই পর্যায়ের কয়েকজন আছেন।
তারা বলেন, “আমাদের ভালো হওয়া শুরু হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে এখানে চিকিৎসাধীন সবাই ভালো হয়ে যাবেন।”
সাধারণ মানুষ বর্তমান পরিস্থিতিতে নিয়ম মেনে চললে, সচেতন হলে সবার সঙ্গে পুলিশ সদস্যরাও ঝুঁকিমুক্ত থাকবেন।
পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলছেন, ৫২ শনাক্ত হওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি হলেও আরও শতাধিক পুলিশ সদস্য কোয়ারেন্টিনে আছেন। কেউ নিজ বাসায়, থানা-ফঁড়িতে বা রাজারবাগ পুলিশ লাইনে।
কনস্টেবল বেশি আক্রান্ত হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তারা বলছেন, এই পুলিশ সদস্যদের সরাসরি সাধারণ মানুষের কাছে যেতে হচ্ছে। এখন কেউ গাড়ি নিয়ে নামলে তাকে থামিয়ে কাছে গিয়ে কথা বলার কাজটি একজন ট্রাফিক কনস্টেবলকেই করতে হয়।
“আর এ কারণে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে তারাই সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে থাকে। ফলে সমস্যায় তাদের বেশি পড়তে হচ্ছে,” বলেন ঢাকার ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা রাজ্জাক।
রাজধানীতে কর্মরত ট্রাফিক পুলিশের এক পরিদর্শক বলেন, প্রায় ১২ বছর ধরে তিনি ঢাকায় আছেন, তিনি শ্বাসকষ্টে ভুগছেন।
তিনি বলেন, তার পরিচিত যে কয়জন কনস্টেবল আছেন, তারা সবাই কম বেশি অ্যাজমার রোগী। এরোগ নিয়েই তাদের ‘ডিউটি’ করতে হচ্ছে।
শ্যামলী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বক্ষব্যাধি হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আবু রায়হান বলেন, বায়ুদূষণ তথা পরিবেশ দূষণই শ্বাসকষ্ট বা অ্যাজমা রোগের অন্যতম প্রধান কারণ। আর এসব রোগ যার থাকবে, তার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি।
এই পরিস্থিতি মাথায় রেখে ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ প্রতিদিনের পালায় কিছু পরিবর্তন আনার চিন্তা-ভাবনা করছেন বলে জানান।
তিনি বলেন, “একটি নির্ধারিত সময়ের বাইরে কোনো ট্রাফিক পুলিশ সদস্যকে যেন রাস্তায় থাকতে না হয় এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ে অবসরও কাটাতে পারে, তার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা হচ্ছে এই ডিউটি রোস্টারে।”
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, করোনাভাইরাস মহামারীর এই পরিস্থিতিতে পুলিশ সদস্যদের ঝুঁকির বিষয়টি তাদের মাথায় রয়েছে, “কনস্টেবলরাই মূলত সাধারণ মানুষের সাথে মিশে প্রধান দায়িত্ব পালন করে থাকে। ফলে তাদের ঝুঁকি বেশি।
“বর্তমান পরিস্থিতিতে যতটুকু সম্ভব নিরাপদ দূরত্বে থেকে দায়িত্ব পালন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সাথে তাদের মাঝে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সামগ্রী সরবরাহ করা হয়েছে।”fblsk
করোনা পরিসংখ্যান এর লাইভ আপডেট দেখুন
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা