ক্রিকেট দুনিয়ায় নক্ষত্রপতন। চলে গেলেন পাকিস্তানের স্পিন বিস্ময় আব্দুল কাদির। তার ১৬ বছরের ক্রিকেট জীবনে যেমন রয়েছে সাফল্যের অনন্য নজির, আবার তেমনই রয়েছে ব্যর্থতার নিদর্শন। আবার নিজের দেশের ক্রিকেটারদের অপকর্ম নিয়ে সত্য বচন উচ্চারণ করতে দ্বিধা করেননি তিনি। শুক্রবার রাতে ৬৩ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে গেছেন কাদির। এবার দেখে নেওয়া যাক তাঁর বিষয়ে কিছু জানা-অজানা তথ্য।
১৯৫৫ সালে পাকিস্তানের লাহোরে জন্মগ্রহণ করেন কাদির। পুরো নাম আব্দুল কাদির খান। ১৯৭৫-৭৬ মৌসুমে পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রথম খেলতে আসেন তিনি। হাবিব ব্যাঙ্ক লিমিটেডের হয়ে শুরু হয় ক্রিকেট সফর। ১৯৭৭ সালে ঘরের মাঠ লাহোরেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেন। ড্র হয়ে যাওয়া ম্যাচে সেই ভাবে ছাপ ফেলতে পারেননি তিনি। ২২ বছরের কাদিরের প্রথম শিকার ইংল্যান্ডের বব উইলিস।
ভারতের কাছে অবশ্য আব্দুল কাদিরের নামের সঙ্গেই উঠে আসে ভারতের ব্যাটিং লিজেন্ড শচীন টেন্ডুলকারের নাম। ১৯৮৯ সালে শচীনের প্রথম পাকিস্তান সফরে বৃষ্টির জন্য ভেস্তে যাওয়া একটি একদিনের ম্যাচ খেলা হয় ২০ ওভার। সেই ম্যাচের আগে ১৬ বছরের শচীনকে খেলা শুরুর আগে স্লেজিং করেছিলেন কাদির। ভারতীয় কিংবদন্তি দিয়েছিলেন ব্যাট দিয়েই এর জবাব দিয়েছিলেন। কাদিরের এক ওভারে ৪ ছক্কা মেরে শচীন বুঝিয়ে দিয়েছিলেন ইট ছুড়লে, পাটকেল খেতেই হবে। তৎকালীন বিশ্ব ক্রিকেটের সেরা স্পিনারকে ওই আক্রমণ জানান দিয়েছিল, বিশ্ব ক্রিকেটকে শাসন করতে নতুন রাজা এসে গেছেন।
বর্ণময় ক্যারিয়ারে কাদির খেলেছেন ৬৭টি টেস্ট এবং ১০৪টি ওয়ানডে। তাঁর শিকার করেছেন ২৩৬টি টেস্ট উইকেট এবং ১৩২টি ওয়ানডে উইকেট। টেস্টে ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন ১৫ বার। পাঁচবার ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন। টেস্টে তাঁর সেরা বোলিং ৫৬ রানে ৯ উইকেট। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯৮৭ সালে লাহোরের গদ্দাফি স্টেডিয়ামে এই রেকর্ড করেন তিনি। একদিনের ক্রিকেটে সেরা বোলিং করেন ১৯৮৩ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ৪৪ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট শিকার করেন তিনি।
বিশ্ব ক্রিকেটে কাদিরই প্রথম রিস্ট স্পিনার। তাঁর লেগ ব্রেক এবং গুগলি ত্রাস সৃষ্টি করত ব্যাটসম্যানদের মনে। তার সঙ্গে ছিল তাঁর অদ্ভুত বোলিং অ্যাকশন। অনেকে নাচের সঙ্গেও তুলনা করেছেন সেই বোলিং অ্যাকশনের। কাদিরের আরও এক ক্ষমতা তাঁকে বাকি বোলারদের থেকে আলাদা করে দেয়। তিনি এক ওভারের ৬ টি বল ৬ রকমভাবে করতে পারতেন। যার মধ্যে গুগলি করতেন দুই রকমের। পাকিস্তানের অধিনায়ক ছিলেন পাঁচটি টেস্টে। যদিও সেই স্মৃতি সুখের ছিল না। পাঁচটির মধ্যে চারটি টেস্টেই হেরে যায় পাকিস্তান।
১৯৯০ সালে ঘরের মাঠে উইন্ডিজের বিপক্সে টেস্ট থেকে অবসর নেওয়ার পর ১৯৯৩ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান কাদির। খেলোয়াড় হিসেবে বিতর্কে না জড়ালেও ২০০৪ সালে ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় সৃষ্টি হয় বিতর্ক। পাকিস্তান টেলিভিশনের (পিটিভি) হয়ে ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা সবাই জানি সব পাকিস্তানি পেস বোলাররা বল বিকৃতি করে।’ তাঁর এই বক্তব্য চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। তাঁর সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে দেয় সেই টিভি চ্যানেল। ২০০৮ সালে জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক হলেও ভারতের বিপক্ষে ওই সিরিজ বাতিল হয়ে যায়।
NB:This post is copied from kalerkantho
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা