করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে সরকার নির্দেশিত সামাজিক দূরত্ব অর্থাৎ ঘরের থাকার বিষয়টি অনেকেই মেনে চলছে না। এ অবস্থায় ‘ঘরে থাকবেন, না-কি কবরে থাকবেন’ নিজেদেরই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) বিদায়ী মহাপরিচালক (ডিজি) ও পুলিশের নবনিযুক্ত মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ।
সোমবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে র্যাব ডিজি হিসেবে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে বিদায়ী অনলাইন ব্রিফিংয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
বেনজীর আহমেদ বলেন, সরকার নির্দেশিত সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নাগরিক দায়িত্ব। এটি বাস্তবায়নে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বলপ্রয়োগের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নিজেকে, পরিবারকে ও দেশকে রক্ষার স্বার্থে নিজেরা শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করা। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার এ কথা বলা সত্ত্বেও অনেকেই তা লঙ্ঘন করছেন। এখন বলব, আপনি ঘরে থাকবেন, না-কি কবরে যাবেন, এই সিদ্ধান্তটা আপনার।
সবাই ঘরে থাকবেন আর কেউ কেউ বাইরে থাকবেন এটা হতে দেওয়া হবে না। নূন্যতম প্রয়োজনে বাইরে যাওয়া, আড্ডা দেওয়া, অনর্থক ঘোরাঘুরি থেকে সবাইকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানান তিনি।
তিনি বলেন, অনেকেই গভীর রাতে কিংবা ভোরে নৌকায় বা নানা উপায়ে যাতায়াতের চেষ্টা করছেন। এগুলো করতে দেওয়া হবে না। যে যেখানে আছেন, সেখানেই থাকুন। সে স্থান ত্যাগ করে অন্য কোথাও যাওয়ার চিন্তাও মাথায় আনবেন না।
র্যাবের বিদায়ী মহাপরিচালক বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের হুমকি এখন ধনী-গরিব সবার জন্য সমান। তাই সর্বসাধারণের জন্য অনুরোধ থাকবে এই ক্রাইসিসের মধ্যে নিজের কথা ভাবুন, দেশের কথা ভাবুন, পরিবারের কথা ভাবুন, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন। এই দায়িত্ব কেবল একার নয়, সবার।
ত্রাণ বিতরণে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে বাড়ি গিয়ে ত্রাণ পৌঁছে দিতে পারেন। খোলাবাজার বিক্রির (ওএমএস) চালের ক্ষেত্রেও আমাদের আগে থেকে জানাবেন যেন সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়। এছাড়া, ব্যত্তিগত উদ্যোগে কেউ বা কোনো প্রতিষ্ঠান ত্রাণ দিতে চাইলে পুলিশের সহায়তা নিতে পারেন।
ত্রাণ চুরি বা অনিয়ম কোনোক্রমেই সহ্য করা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ত্রাণ সংশ্লিষ্ট যে কোনো অব্যবস্থাপনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শূন্য সহিষ্ণুতার কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সেই নির্দেশনা পালন আমাদের কর্তব্য। তাই যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। তাৎক্ষণিকভাবে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হবে।
বেনজীর আহমেদ বলেন, আমি ঢাকা মহানগর পুলিশে দীর্ঘদিন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। প্রধানমন্ত্রী আমাকে একটি ক্রান্তিকালে র্যাব মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্বভার দিয়েছিলেন। আমি বিগত পাঁচ বছর তিন মাস মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। এই সময়ে র্যাবকে জনগণের আস্থার জায়গাতে নিয়ে যেতে পেরেছি।
নিজের দায়িত্ব পালনকালে র্যাবের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সফলতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সুন্দরবন এখন দস্যুমুক্ত। হলি আর্টিজান পরবর্তী সময়ে আমরা জঙ্গিগোষ্ঠীকে পরাস্ত করতে পেরেছি। র্যাব এখন একটি হাইলি অপারেশনাল ফোর্স। প্রতিনিয়ত র্যাবের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করেছি। আশা করব আগামীতে যিনি দায়িত্বে আসবেন, তিনিও একই ধারা অব্যাহত রাখবেন। এছাড়া পুলিশপ্রধান হিসেবে এক্ষেত্রে যতটুকু সাহায্য করার, তা আমি করব।
বেনজীর আহমেদ বলেন, আগামীকাল বাংলা নববর্ষ। এবারের নববর্ষের মেজাজ একেবারেই ভিন্ন। করোনার ক্রাইসিস মুহূর্তে আমি সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করছি এবং সামাজিক তথা শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে অনুরোধ করছি।
করোনা পরিসংখ্যান এর লাইভ আপডেট দেখুন
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা