গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আহসান হাবিব বুলবুল এবং সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ গার্মেন্টস কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারের দায়িত্বশীলদের মধ্যে সমন্বয়হীনতার নিন্দা জানিয়েছেন।
তারা গণপরিবহন বন্ধ থাকা অবস্হায় স্বাস্হ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ না নিয়ে কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া স্বেচ্ছাচারি মালিকদের শাস্তি এবং অবর্ণনীয় কষ্ট করে কাজে যোগ দিতে শিল্পাঞ্চলে পৌঁছানো শ্রমিকদের খাদ্য, বাসস্হান, চিকিৎসা সুরক্ষা এবং পথিমধ্যে অবস্হানকারী শ্রমিকদের নিরাপদে গন্তব্যস্হলে পৌঁছে দেওয়ার দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমিকদের সস্তা শ্রমে উৎপাদিত পণ্যের বিনিময়ে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা আর কর্মসংস্হানের বৃহৎ খাত এই অজুহাতে রাস্ট্রের কাছ থেকে বছরের পর বছর ধরে সুবিধা নিয়ে গার্মেন্টস মালিকরা ফুলেফেপে উঠলেও বাংলাদেশের গার্মেন্টস মালিকদের কাছে কখনোই শ্রমিকদের জীবনের গুরুত্ব ছিলনা। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের এই চরম ঝুঁকিপূর্ণ মুহুর্তেও গার্মেন্টস মালিকদের সেই চরিত্রের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।
সরকার ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটির ঘোষণা দুই দিন আগে জানালেও মালিকরা গণপরিবহন বন্ধ হওয়ার পূর্বে গার্মেন্টস ছুটি ঘোষণা করেনি আবার অঘোষিত লকডাউনের এই সময়ে শ্রমিকদের থাকা-খাওয়ার নিরাপত্তার জন্য তাদের মার্চ মাসের মজুরি পরিশোধ না করেই ২৮ মার্চ থেকে কারখানা ছুটি ঘোষণা করে। হাতে টাকা না থাকায় খাদ্য নিরাপত্তাহিনতার কারনেই শ্রমিকরা গনপরিবহণ বন্ধ থাকা অবস্হায় কষ্ট করে গ্রামে যেতে বাধ্য হয়।
এই অবস্হায় সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির মেয়াদ ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হলেও সরকারের দায়িত্বশীলদের মধ্যে সমন্বয়হীনতার সুযোগ নিয়ে স্বাস্হ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ ছাড়া এবং গণপরিবহন বন্ধ থাকা সত্ত্বেও গার্মেন্টস মালিকরা চরম স্বেচ্ছাচারিভাবে ৫ এপি&্রল থেকে কারখানা চালু রাখার সিদ্ধান্ত থেকে সড়ে না আসায় এবং শ্রমিকদের মার্চ মাসের মজুরি পরিশোধ না করায় লক্ষ লক্ষ শ্রমিককে অবর্ণনীয় কষ্ট শিকার করে মাইলে পর মাইল রাস্তা পায়ে হেটে শিল্পাঞ্চলে আসতে হয়।
৪ এপ্রিল রাত্রে বিজিএমইএ সভাপতির গার্মেন্টস কারখানার ছুটি ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করার ঘোষণা আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পোষাক শ্রমিকদের ঢাকায় প্রবেশ করতে না দেওয়ার জন্য পুলিশের প্রতি নির্দেশ দেশের অর্থনৈতিক যোদ্ধা এই গার্মেন্টস শ্রমিকদের সাথে চরম প্রহসন।
মালিকের স্বেচ্ছাচারিতা আর সঙ্গরোধের নামে পুলিশের দায়িত্বহীন হয়রানিমূলক আচরণ এই গার্মেন্টস শ্রমিকদের চরম নিরাপত্তাহিনতার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। আবার করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধের ছুটির সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণীর মালিক শ্রমিক ছাঁটাই এবং শ্রমিকদের প্রাপ্য পাওনা আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছে। নেতৃবৃন্দ, স্বেচ্ছাচারি ও সুযোগসন্ধানি এই সমস্ত মালিকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্হা গ্রহণের আহবান জানান এবং শিল্পাঞ্চলে পৌঁছানো শ্রমিকদের খাদ্য, বাসস্হান, চিকিৎসা সুরক্ষা এবং পথিমধ্যে অবস্হানকারী শ্রমিকদের নিরাপদে গন্তব্যস্হলে পৌঁছে দেওয়ার দাবি জানান।
নেতৃবৃন্দ আরও বরেন, বিজিএমইএ সভাপতি তার বক্তব্যে শ্রমিকদের মার্চ মাসের মজুরি পরিশোধ এবং শ্রমিক ছাঁটাই না করার কথা বলেছেন অথচ বাস্তবচিত্র তার সম্পুর্ণ বিপরীত। আজকেও অনেক কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাইয়ের চেষ্টা করা হয়েছে, প্রাপ্য মজুরি পরিশোধ করা হয়নি। এই প্রতারণামূলক আচরণ বন্ধ করা না হলে যে অস্হিতিশীলতা তৈরী হবে তার দায় মালিকদের বহন করতে হবে বলে নেতৃবৃন্দ সাবধানবাণী উচ্চারণ করেন।
করোনা পরিসংখ্যান এর লাইভ আপডেট দেখুন
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা