গুজব রটানোর অভিযোগে ১০টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ২৫টি ইউটিউব লিঙ্ক ও ৬০টি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। আজ বুধবার বেলা ১১টায় পুলিশ সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
তবে বন্ধ করে দেয়া অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক অ্যাকাউন্টগুলোর নাম জানাননি তিনি। সম্প্রতি পদ্মা সেতু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের গুজবের জেরে গণপিটুনিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন অনেকে।
আজ সেই গণপিটুনির ঘটনার বিষয়ে আইজিপি বলেন, সারাদেশে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন আট জন, যাদের কেউই ছেলেধরা বা শিশু অপহরণকারী ছিলেন না। এমনকি যারা গণপিটুনিতে আহত হয়েছেন, তাদের কারও বিরুদ্ধে ছেলেধরা বা শিশু অপহরণের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এখন পর্যন্ত গুজব ও গণপিটুনির অভিযোগে ৩১টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ১০৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত ১৮ জুলাইয়ের একটি ঘটনা উল্লেখ করে জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, নেত্রকোণায় রবিন নামে এক ব্যক্তির কাছে সজীব নামের এক ছেলের কাটা মাথা পাওয়া যায়। পরে গণপিটুনিতে রবিন নিহত হয়েছেন। মাদকাসক্ত রবিন তার স্ত্রীকেও একাধিকবার হত্যার চেষ্টা করেছিলেন, এ কারণে তার স্ত্রী চলে গেছে। নিহত শিশু সজীবের মরদেহ ময়নাতদন্তে দেখা গেছে, তাকে বলৎকার করা হয়েছিল। পারিপার্শ্বিক সব ঘটনা বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হওয়া গেছে, বলৎকার করার সময় প্রতিরোধ বা জানাজানির ভয়ে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সজীবকে খুন করা হয়েছিল।
দেশবাসীর উদ্দেশ্যে আইজিপি বলেন, সাভারে এবং নারায়ণগঞ্জে দুইজন বুদ্ধি ও বাক প্রতিবন্ধীকে পিটিয়ে মারা হলো। বাড্ডায় এক মাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হলো। আমি দেশবাসীকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, এটি গুজব এবং স্রেফ গুজব। কোনো ঘটনাতে ছেলেধরার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার থেকে দেশজুড়ে সচেতনতা সপ্তাহ পালন করা হবে। সপ্তাহজুড়ে পুলিশের প্রতিটি সদস্য সব স্টেক হোল্ডারদের কাছে যাবেন। প্রশিক্ষিত সদস্যরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাবেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলবেন।
গণপিটুনি দিয়ে যারা মানুষ হত্যা করছে এবং গুজব ছড়াচ্ছে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না হুঁশিয়ার করে পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, গুজবে বিভ্রান্ত হয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে আপনি কিন্তু হত্যা মামলার আসামি হয়ে যাচ্ছেন। হত্যা মামলার আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হয়ে থাকে। যেখানেই থাকুন না কেন, আমরা আপনাকে খুঁজে বের করবো এবং কঠোর শাস্তির জন্য আইনের হাতে তুলে দেবো। সুতরাং কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। আইজিপি বলেন, কেউ যদি এরকম ঘটনা (ছেলেধরা) দেখতে পান বা জানতে পারেন, কাউকে যদি সন্দেহ হয়- আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করবেন। অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাবে। পুলিশ প্রধান আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রাকে রুখে দিতে স্বার্থান্বেষী একটি মহল এসব গুজব উসকে দিচ্ছে। তারা দেশে অস্থিরতা সৃষ্টিতে অন্য উপায়ে ব্যর্থ হয়ে এ পথ বেছে নিয়েছে। আমরা তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।
ইতোমধ্যে গ্রেফতার হওয়া অনেকেই সরকারবিরোধী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। এমনকি দুবাই থেকে এক ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছেন, তিনি সরকারবিরোধী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। আমরা তাকেও শনাক্ত করেছি। সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের ডিজি, ঢাকা মহানগর পুলিশ ও সদর দপ্তরের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
NB:This post is copied from dailyictnews.com
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা