গত ২৪ ঘন্টায় ময়মনসিংহে একজন ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত, তবুও শঙ্কামুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই
তাসকিনা ইয়াসমিন
গত ২৪ ঘন্টায় ময়মনসিংহে একজন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছে। এরপরও ডেঙ্গু প্রতিরোধে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার ( ২৯ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপাররেশন্স সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার এতথ্য জানান।
ডা. আয়শা আক্তার
তিনি জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ময়মনসিংহে ১ জন ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত হয়েছে। এছাড়া দেশের আর কোথাও ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায়নি।
তিনি জানান, ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে ১৯৩ জন। এদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছে ১৭৫ জন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৮ জন। ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১১ জন। অন্যান্য বিভাগে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ভর্তিরোগীর সংখ্যা ০২ জন। রোগতত্ত্ব, এখন পর্যন্ত এ বছরে ডেঙ্গু সন্দেহে কোন মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায় নাই।
ডা. আয়শা আক্তার বলেন, ডেঙ্গু মাঝখানে শুন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। কিন্তু ডেঙ্গু আসলে সারাবছরের রোগ। যেমন- গত ২ বছর ধরে আমরা দেখে আসছি প্রত্যেক মাসেই ডেঙ্গু ছিল। কোন মাস জিরো যায়নি। দিন জিরাে গেছে। যেমন আজকে ঢাকার মধ্যে ডেঙ্গু রোগী জিরো, এইরকম জিরো অনেকদিনই ছিল কিন্তু মাস জিরো যায়নি। সারা বাংলাদেশে যেহেতু ডেঙ্গু আছে তাই এখন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আসলেও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন কার্যক্রম এগুলোর কোনটাই আমরা বন্ধ করব না। আমাদের সারাবছরই ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যক্রম চলবে।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু নেই বলে, আমরা নিশ্চিত হয়ে বসে থাকতে পারব না। প্রত্যেকটা যায়গায় এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের মতো যায়গাতেও ডেঙ্গু সবসময় থাকে। তবে, সেই দেশগুলো জানুয়ারি মাস থেকে এলার্ট থাকে। শুরু থেকেই পরিষ্কার করা, রাস্তাঘাট পরিষ্কার রাখা, ডেঙ্গুর লার্ভা ধ্বংস করা। প্রত্যেকটা ডেভেলপ কান্ট্রি কিন্তু সারা বছর সচেতন থাকে। কার্যক্রমগুলি যদি শুরু থেকে চালানো হয় তাহলে কিন্তু জুন-জুলাইয়ের দিকে মশার বংশবিস্তারের সময়ে কিন্তু ডেঙ্গু হওয়ার সংখ্যাটা কিন্তু কমে আসে।
ডেঙ্গু নিয়ে সবসময় সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়ে আয়শা আক্তার বলেন, ডেঙ্গু যেন না হয় এজন্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা, ঘরবাড়ি রাস্তাঘাটে পানি জমতে না দেওয়া, সিটি কর্পোরেশনের কাজ যেটা লার্ভাগুলো ধ্বংস করা। এডাল্ট মশা যেগুলো এগুলো ধ্বংস করার জন্য ওষুধ ছিটানো, আবার, আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগের যে কার্যক্রম সেগুলোও চলমান রাখা। আমরা গত সপ্তাহেও ডেঙ্গু নিয়ে মিটিং করেছি। ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা বিভিন্ন সেক্টরে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। সবাই মিলেই কার্যক্রম চালাতে হবে। একেবারে যে আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে বলে শঙ্কামুক্ত হয়ে বসে থাকব তা না। ডেঙ্গু নিয়ে আমাদের কাজ করতেই হবে, সারাবছর সবসময়। এখন যদি এমনও হয় যে, নীল যাচ্ছে আমার পুরো মাসটা। তারপরও আমার পিক সিজনে বাড়তে পারে এই চিন্তা নিয়ে সবাইকে সচেতন করার কাজগুলো আমাদের করে যেতেই হবে। নাগরিক যদি সচেতন থাকে, আগের মতো বাসা-বাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে তাহলে জুন-জুলাইতে দেখা যাবে যে ডেঙ্গু কম হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুম জানায়, ২০১৯ সালে সারাদেশে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৩শ ৫৪ জন। এদেরমধ্যে ১৪৮ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। এদিকে, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটে (আইইডিসিআর) এর কাছে ২০১৯ সালে ডেঙ্গুসন্দেহে ২৬৬ টি মৃত্যুর তথ্য প্রেরিত হয়েছে। এরমধ্যে আইইডিসিআর ২৩৪ টি মৃত্যু পর্যালোচনা সমাপ্ত করে ১৬৬ টি মৃত্যু ডেঙ্গুজনিত বলে নিশ্চিত করেছে।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা