অনলাইন ডেস্ক
রোববার (১২ জানুয়ারি) সচিবালয়ে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের সীমানা নির্ধারণ ও উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে আমাদের এ পর্যন্ত মোট চারটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এসবের মধ্যে একটি ছিল ১৯৭৫ সালের। চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশের সীমানার ১৫০ গজের মধ্যে কেউ কোনো প্রতিরক্ষা কিংবা ডিফেন্স পটেনশিয়ালিটির জিনিস রাখতে পারবে না। এছাড়া শূন্যরেখা থেকে ১৫০ গজের মধ্যে কোনো উন্নয়নমূলক কাজ করতে গেলে একে অপরের থেকে সম্মতি নিতে হবে। সম্মতি ছাড়া তারা এ কাজটি করতে পারবে না।
‘ভারত কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ ও তাদের মধ্যে বিদ্যমান চার হাজার ১৫৬ কিলোমিটার সীমান্তের মধ্যে তিন হাজার ২৭১ কিলোমিটারে এরই মধ্যে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে। বাকি ৮৮৫ কিলোমিটার আছে। বিগত সরকারের আমলের ২০১০ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে কতগুলো অসম কাজ, যেগুলো ভারতের করা ঠিক হয়নি, কিন্তু তখনকার সরকার তাদের কতগুলো সুযোগ দিয়েছিল। এসব সুযোগের মধ্যে ১৬০টি স্থানে তারা একই লেয়ারওয়ালা কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে, তারপরে ৭৮টি স্থানে আরও ঝামেলা রয়েছে।’
তিনি বলেন, সম্প্রতি সীমান্তের কয়েকটি স্থানে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে বিএসএফ ও বিজিবির মধ্যে আলোচনা হয়েছে। বিজিবি শক্ত অবস্থান নেওয়ায় তারা সীমান্তে বেড়া নির্মাণকাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, কিছু কিছু জায়গায় আগের সরকার লিখিত দিয়ে গেছে যে এটা তারা করতে পারবেন, যেগুলো তাদের দেওয়া উচিত হয়নি। এর মধ্যে বড় সমস্যা দেখা দিয়েছে, তিন বিঘা করিডরের ওখানে।
‘১৯৭৪ সালে যে বেরুবারি চুক্তি হয়েছিল, তখন ওটা দিয়ে দিয়েছি, আমাদের পার্লামেন্টেও সেটা প্রস্তুত ছিল। আর ভারত আমাদের এই পথটা দেওয়ার কথা ছিল, ওখানে যাওয়ার করিডরটা। ওটা সারাজীবনের জন্য আমাদেরই থাকবে। আমরা দিয়ে দিলেও তারা পার্লামেন্টে সেটা ডিফাই করেনি। জায়গাটা আমাদের দেয়নি। আগে তারা এক ঘণ্টা খুলত, একটা ঘণ্টা বন্ধ করত, তারপরে ছয় ঘণ্টা খুলত, ছয় ঘণ্টা বন্ধ থাকত, রাতে পুরোটাই বন্ধ থাকত।’
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ২০১০ সালে একটা চুক্তি করা হয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল, এটা পুরোটা সমসময় খোলা থাকবে, আমরা ব্যবহার করতে পারব। কিন্তু এটির বদলে একটি বিরাট ঝামেলা করা হয়েছে। আঙ্গরপোতা ও দহগ্রামের জিরো লাইন থেকে যে ১৫০ গজ দূরে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কথা, সেটা তারা করতে পারবে। এজন্য এখানে বড় ধরনের একটা সমস্যা হয়েছে।
আর বিজিবির সঙ্গে আমাদের জনগণ শক্ত অবস্থান নেওয়ায় অন্যান্য জায়গা থেকে তারা কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। এ জন্য আমি বিজিবি ও বাংলাদেশের জনগণকে অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি সাংবাদিকদেরও ধন্যবাদ জানাই, তারা কাজটি ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন— বলেন তিনি।
বর্তমানে সীমান্তে ভারতীয়দের কাজ বন্ধ রয়েছে বলেও জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, তিন বিঘা করিডর, নওগাঁর পত্নিতলা, লালমনিরহাট সীমান্ত—যে কয়েকটি জায়গায় তারা কাজ শুরু করেছিল, সবগুলোই বন্ধ রয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আগামী মাসে ডিজি পর্যায়ের একটা বৈঠক আছে। সেখানে এ বিষয়ে আলোচনা হবে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে যাতে এটা বন্ধ করা যায়।
অসম চুক্তিগুলো বাদ দেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ জন্যই ফেব্রুয়ারিতে আলোচনা হবে। আর আমরা একটি চিঠি দেব, যাতে অসম চুক্তিগুলো বাদ দেওয়া যায়।
এতে সমস্যার সমাধান হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, অবশ্যই সমস্যার সমাধান হবে। সমস্যা একটি শব্দ, সমাধানও একটি শব্দ।
সাতক্ষীরার কাকডাঙ্গা গ্রামে মাঝে সোনাই নদীতে তারা (ভারত) নাইটভিশন ক্যামেরা বসিয়েছে। সুরক্ষা বেড়া দিয়েছে। এ বিষয়ে আপনাদের জানানো হয়েছে কি না, প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, নদীর মাঝপথে সীমান্ত। ওদের পাড়ে একটা ঝামেলা করেছে। কিছু জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া স্থাপনের সুযোগ থাকলেও তারা করেনি। আবার কোথাও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন নাইটভিশন ক্যামেরা বসিয়েছে। যদিও তাদের এলাকায় বসিয়েছে, কিন্তু সেটা উচিত হয়নি।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা