অনলাইন ডেস্ক
১৯৭৫ সালের রক্তঝরা সেই ১৫ আগস্ট এবার এসেছে এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। দিবসটিকে ঘিরে জাতীয় শোক দিবস পালনে নেই কোনো রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি। বাতিল হয়ে গেছে সরকারি ছুটিও। স্বাধীনতার স্থপতি, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজ ৪৯তম শাহাদতবার্ষিকী। দিনটিকে ঘিরে এবার রাজনীতিতেও ছড়িয়েছে উত্তেজনা।
সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এ দিবসটি জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হতো। কিন্তু রাষ্ট্রীয়ভাবে বাতিল করা না হলেও এবার এ দিবসটিতে নেই কোনো সরকারি কর্মসূচি। গত মঙ্গলবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে দিবসটিতে সরকারি ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং পরে প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়। তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে স্বাধীনতা ঘোষণার পর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে এসে রাষ্ট্র ও সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোর রাতে সেনাবাহিনীর কতিপয় সদস্য ধানমন্ডির বাসভবনে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। এই দিন তাদের হাতে একে একে প্রাণ হারান বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেলসহ পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ড থেকে রেহাই পাননি বঙ্গবন্ধুর অনুজ শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত এবং তার ছেলে আরিফ ও সুকান্তবাবু, মেয়ে বেবি, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শেখ ফজলুল হক মনি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি এবং আবদুল নাঈম খান রিন্টু ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও ঘনিষ্ঠজন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে রক্ষা পান। এরপর থেকেই প্রতি বছর দিনটিকে শোক দিবস হিসেবে পালন করে আসছে আওয়ামী লীগ ও দলটির সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন।