অনলাইন ডেস্ক
রাজধানী ঢাকার প্রতিদিনের তীব্র যানজটে অতিষ্ট নগরবাসীদের জন্য এটা নিশ্চিতই সুখবর। ২০১১ সালে চুক্তি সইয়ের এক যুগ পরে আলোর মুখ দেখল ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে।
তীব্র যানজটকে পাশ কাটিয়ে কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত মাত্র ১২ মিনিটে পৌঁছতে পারবেন যাত্রীরা। মূল এক্সপ্রেসওয়েতে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার এবং র্যাম্পে ৪০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চলতে পারবে।
প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, প্রথম ধাপে ফার্মগেট পর্যন্ত চালু হলেও আগামী জুনে দ্বিতীয় ধাপে মালিবাগ, খিলগাঁও, কমলাপুর হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত বাকি অংশ চালুর কথা রয়েছে। তখন এক্সপ্রেসওয়ের পুরোপুরি সুবিধা পাবেন নগরবাসী। ফলে বাঁচবে যাতায়াতের সময়, কমবে দুর্ভোগ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, উদ্বোধনের পর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলেও এতে সবাই চলাচল করতে পারবে না। পথচারী, মোটরসাইকেল, থ্রি-হুইলার, রিকশা, অটোরিকশাসহ তিন চাকার গাড়ি এতে উঠতে পারবে না। এক্সপ্রেসওয়ে’তে কেবলমাত্র চলতে চার চাকা কিংবা এর অধিক চাকার বাস, ট্রাক ও প্রাইভেট কার। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভও রয়েছে।
এজন্য ওইসব গাড়িকে নির্দিষ্ট হারে টোল গুণতে হবে। চার ক্যাটাগরিতে টোল আদায় হবে। ১৬ সিটের কম প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, পিকআপ ও তিন টনের কম হালকা ট্রাককে ৮০ টাকা, বাস ও মিনিবাস (১৬ সিট বা তার বেশি) ১৬০ টাকা, মাঝারি ট্রাক (৬ চাকা পর্যন্ত) ৩২০ টাকা এবং ভারি ট্রাক বা ট্রেইলরে (৬ চাকার বেশি) ৪০০ টাকা টোল দিতে হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রকল্পটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ভিত্তিতে নির্মাণ করা হচ্ছে। এ কারণে টোলের টাকা থেকে নির্মাণ ব্যয় তোলা হবে।
এক্সপ্রেসওয়েতে দ্রুতগতিতে ও নিরাপদে যাতে গাড়ি চলাচল করতে পারে, সেজন্য দুই ও তিন চাকার গাড়ি চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা এলিভিটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এএইচএমএস আকতার।
বর্তমানে মূল এক্সপ্রেসওয়ে ৬০ কিলোমিটার গতিতে বিরতিহীনভাবে গাড়ি চলবে জানিয়ে তিনি বলেন, দুই ও তিন চাকার গাড়ি চলাচলের সুযোগ দেওয়া হলে দ্রুতগতিতে অন্যান্য গাড়ি চলতে পারবে না। মিশ্র গাড়ি চলাচলের কারণে দুর্ঘটনা ঘটবে। ওই আশঙ্কা থেকে দুই ও তিন চাকার গাড়ি চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়নি। মানুষ অভ্যস্ত হয়ে গেলে ৮০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে।
তবে যেসব স্থানে গাড়ি নামবে, সেসব পয়েন্টে যানজটের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রসঙ্গত, এ প্রকল্পের প্রথম চুক্তি সই করা হয় ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি। ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদি প্রকল্পের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ১৫ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে সংশোধিত চুক্তি সই করে।থাইল্যান্ড ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইটালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড ৫১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে প্রকল্পটিতে। তাছাড়া চায়না ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান শোনডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনোমিক গ্র্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ ৩৪ শতাংশ ও সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন লিমিটেড ১৫ শতাংশ যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হচ্ছে এ প্রকল্পটি। প্রকল্পের মূল দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিমক ৭৬ কিলোমিটার। আর র্যাম্পসহ মোট দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।
প্রকল্পের মোট ব্যয় ৮৯৪০ কোটি টাকা ধরা হলেও বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকায়।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা