অনলাইন ডেস্ক
জানা গেছে, শনিবার সকালে গ্রাহকরা এনজিওর মালিক ডলারের সন্ধান না পেয়ে তার বাবা আব্দুল হাকিমের কাছে যায়। তার কাছে ছেলের সন্ধান ও টাকা দাবি করলে কিছুই জানেন না বলে জানান আব্দুল হাকিম। এ সময় নারী গ্রাহকদের হেনস্তার শিকার হন তিনি। তাকে মারধর করে বিবস্ত্র করে গ্রাহকরা।সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত আব্দুল হাকিমকে আটকে রাখে গ্রাহকরা। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্যের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাকে। বিকেলে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাকে উদ্ধার করে বাসায় পাঠায়।
গ্রাহক, স্থানীয় বাসিন্দা ও মাঠকর্মী সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সাল থেকে সমাজসেবার নিবন্ধন নিয়ে অবৈধভাবে ক্ষুদ্র ঋণের কার্যক্রম পরিচালনা করছে কনফিডেন্টস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড। ৪ মাস আগে থেকে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে আসেন না মাঠকর্মীরা। বর্তমানে তালা দেওয়া রয়েছে অফিসে।
এনজিওর গ্রাহক হেনা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, অনেক কষ্ট করে মানুষের বাড়িতে কাজ করে টাকাগুলো জমিয়েছিলাম। একদিন মাঠকর্মী সুমি বাড়িতে এসে টাকাগুলো এনজিওতে রাখার জন্য বলে। কয়েকবার তারা আমার বাড়িতে আসে। পরে টাকাগুলো এনজিওতে রাখি। কিন্তু এখন দরকারের সময় টাকা দিতে নানা রকম টালবাহানা করছে। অফিস বন্ধ করে মালিক পালিয়েছে। এনজিওর মালিক ডলারের বাড়িতে গেলে তার পরিবারের লোকজন উল্টো আমাদেরকেই নানা রকম হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আরেক গ্রাহক বলেন, বাবার বাড়ি থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া কিছু জমি বিক্রি করে পাওয়া ৪ লাখ টাকা জমা করেছিলাম ২ বছর আগে। গত ৬ মাস ধরে টাকার জন্য ঘুরছি। আজকাল পরশু বলে বারবার ঘোরাচ্ছে। এমনকি এনজিও মালিক ডলারের বাড়িতে গেলে উল্টো আমাদের পুলিশে ভয় দেখায়। তাই বাধ্য হয়েই মালিকের বাবাকে এমন হেনস্তা করা হয়েছে। এখন আমরা কী করব, কোথায় যাব? আমার জীবনের সব শেষ হয়ে গেছে। অনেক কষ্টের জমানো টাকা হারিয়ে আমার স্বামী দিশেহারা হয়ে গেছে।
কানসাট ইউনিয়নের রাঘুপুর গ্রামের আনারুলের স্ত্রী উজালা বেগম বলেন, আমের বাগান বিক্রির আড়াই লাখ টাকা রেখেছিলাম এনজিওতে। এরপর এখন নিজের দরকারের সময় ৬ মাস থেকে টাকা উত্তোলনের জন্য ঘুরছি। একটা টাকাও দেয় না। একই গ্রামের সাহিদা বেগম গত দুই বছর আগে গরু বিক্রি করে ৬০ হাজার টাকা জমা রেখেছেন। তিনি টাকা পাওয়ার আশায় বার বার ঘুরছেন।
হেনস্তার শিকার এনজিও মালিক ডলার আলীর বাবা আব্দুল হাকিম মুঠোফোনে ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ছেলে কোথায় আছে আমরাও জানি না। বর্তমানে সে দেউলিয়া হয়ে গেছে। গ্রাহকরা তার সন্ধান জানতে চাইলে আমি জানি না বলার পর আমার ওপর হামলা করে। বাজারের মধ্যে আমাকে টানাহেঁচড়ার কারণে শরীরের কাপড় খুলে যায়।
এ বিষয়ে কানসাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেফাউল মূলক বলেন, কয়েকজন গ্রাহক একাধিকবার এ বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছেন। তবে এনজিও মালিক না থাকায় এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে আজ সকালে গ্রাহকরা তার বাড়িতে গিয়ে তার বাবাকে ধরেছিল বলে শুনেছি।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল হায়াত মুঠোফোনে ঢাকা পোস্টকে বলেন, কনফিডেন্টস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের বিরুদ্ধে গ্রাহকরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা