অনলাইন ডেস্ক
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কর্মশালাটির উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, আমাদের এই বিভাগের একটা ইনোভেশন ফান্ড আছে তার মধ্য থেকেই আমরা প্রভা অরোরাকে কিছুটা সহযোগিতা দিয়েছি। কাজটা অনেক বড়, কিন্তু কাজটা শুরু হয়েছে। যেহেতু অনেক বড় কাজ একটা কোলাবোরেটিভ ওয়েতে পার্টনারশিপের মাধ্যমে যদি করা যায়, তাহলে একটা মেগা প্লাটফর্মে এটা পরিণত হতে পারে। আশার কথা যে যেহেতু পরিবেশবান্ধব বিষয় এটা এবং পরিবেশ অধিদফতরও এখানে সম্পৃক্ত হয়েছে। এ সময় অ্যাপটি ডেভেলপমেন্টের পরে আরও একবার একটি কর্মশালা আয়োজন করার পরামর্শ প্রদান করেন তিনি। সবার কথা বলার মাধ্যমে অ্যাপটি আরও সুন্দর হবে এবং তিনি এই উদ্যোগের জন্য আন্তরিকভাবে শুভকামনাও জানান।
প্রভা অরোরার প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিধান চন্দ্র পালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালাতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদফতরের ঢাকা মহানগর কার্যালয়ের পরিচালক (উপসচিব) মোহাম্মদ মামুন মিয়া, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান এবং স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নওজিয়া ইয়াসমিন। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রভা অরোরা’র নীতি-কৌশল ও গবেষণা উপদেষ্টা ডা. আফতাব উদ্দিন।
সভাপতির বক্তব্যে বিধান চন্দ্র পাল বলেন, জলবায়ু নিয়ে কথা আসলেই প্রাসঙ্গিকভাবে কার্বন নিঃসরণের কথা আসে। বাংলাদেশ নিঃসরণ খুব কম করছে তারপরও অন্যদের জন্য উদাহরণ সৃষ্টি করার সুযোগ আমাদের আছে। একইসঙ্গে নিজেদের পরিমাণটাও নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে রাখাটা জরুরি হবে। এজন্য কার্বন নিঃসরণ ট্র্যাকিং অ্যাপ সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। প্রটোটাইপের ওপর এই কর্মশালার মাধ্যমে প্রধান স্টেকহোল্ডারদের মতামত নিয়ে যদি এই অ্যাপটি তৈরি করা হয়, তাহলে এই প্রয়াসটি আরও সমৃদ্ধ ও সবার ব্যবহারের উপযোগী হবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি। তিনি বলেন, আমরা দেশীয় প্রেক্ষাপট ও দেশীয় সক্ষমতাকে বিবেচনায় রেখেই এই অ্যাপটি তৈরি করতে চাই। তাই সম্পর্কিত বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করে এই উদ্যোগটি ফলপ্রসূ করে তুলতে আমরা সচেষ্ট বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আমরা এমন একটি অ্যাপ তৈরি করতে চাই যে অ্যাপটি যারাই ব্যবহার করবেন তারাই উপকৃত হবেন। আর এটি দীর্ঘকালব্যাপী প্লে স্টোরে জায়গা করে রাখবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
একেক এলাকার একেক ধরনের কার্বন এমিশন আছে। সেই জিনিসটা মাথায় রাখতে হবে। ফলে স্থানভেদে এই এমিশনের মাত্রা আলাদা হতে পারে উল্লেখ করে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ মামুন মিয়া কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি ইলেক্ট্রনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে অন্তর্ভুক্ত করা, এসিসহ বিভিন্ন প্রোডাক্ট যেগুলো কার্বন এমিশন বেশি করে থাকে সে সকল প্রোডিউসারদেরও মতামত সচেতনতার অবস্থান থেকে গ্রহণ করার পরামর্শ দেন। অ্যাপটি একটি পর্যায়ে গেলে সার্টিফিকেট ও রেভিনিউ জেনারেশনের বিষয়ও এতে যুক্ত করা যেতে পারে বলেও এ সময় তিনি মন্তব্য করেন।
বিশেষ অতিথি অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান বলেন, আমরা এই উদ্যোগে অনেকগুলো ব্যাপারে কন্ট্রিবিউট করতে পারি কিংবা পার্টনার হতে পারি। পুরাকৌশল বিভাগ দেশের ইনফ্রাসট্রাকচারে কন্ট্রিবিউট করছে এবং ইনফ্রাসট্রাকচার কার্বন এমিশনে একটা বিরাট কন্ট্রিবিউশন রাখে। প্রসঙ্গত তিনি সিমেন্ট কার্বনের সবচেয়ে বড় কন্ট্রিবিউটর বলেও এ সময় উল্লেখ করেন।
এই উদ্যোগে যে ক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রয়োজন বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করার অঙ্গীকার ঘোষণা করে বিশেষ অতিথি অধ্যাপক ডা. নওজিয়া ইয়াসমিন বলেন, সম্ভব সাধ্যমতো ক্ষেত্রে অবশ্যই আমরা সহযোগিতা করবো। কারণ আমরা আমাদের কার্বন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে রাখতে চাই, আমাদের চারপাশের পরিবেশকে ভালো রাখতে চাই।
কর্মশালায় অ্যাপটি তৈরি করার অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যে সকল অ্যাপ রয়েছে সেগুলো পর্যালোচনা করে তার একটি মূল্যায়ন উপস্থাপন করা হয়। বাংলাদেশের আঙ্গিক বিবেচনায় রেখে বিশেষ এই অ্যাপটির উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা তুলে ধরা হয় এবং পুরো সিস্টেমের একটি Prototype উপস্থাপন করে সে সম্পর্কে প্রধান স্টেকহোল্ডারদের মতামত নেওয়া হয়। প্রভা অরোরা‘র পক্ষ থেকে এই উপস্থাপনাগুলো উপস্থাপন করেন মুহাম্মদ সাদমান জহুর, খন্দকার ফারমিনা শাম্মি, মো: হাবিবুর রহমান হাবিব এবং মাহিনূর নাজীয়া ফারাহ।
প্রসঙ্গত, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অর্থায়ন ও সার্বিক সহযোগিতায় প্রভা অরোরা পরিবেশ সুরক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার নিমিত্তে কার্বন নিঃসরণ পরিমাপ বিষয়ক বিশেষ উদ্ভাবনী ও সচেতনতামূলক প্রকল্পের আওতায় কার্বন নিঃসরণ পরিমাপের (ট্র্যাকিং) জন্য এই বিশেষ অ্যাপটি তৈরি করবে।
কর্মশালায় আয়োজক প্রতিষ্ঠান ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিনিধিদের বাইরে এটুআই, পরিবেশ অধিদফতর, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর, ইউএনএফপিএ, নেদারল্যান্ডস অ্যাম্বেসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বুয়েট, স্টেট ইউনিভার্সিটি, সেভরন বাংলাদেশ, ওয়েভ ফাউন্ডেশন, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, এসওএস চিলড্রেন্স ভিলেজেস ইন্টারন্যাশনাল, এফআইভিডিবিসহ কর্মশালায় জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার লক্ষ্যে কাজ করছেন এমন এনজিওসমূহের প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লেষিত বিভাগের প্রতিনিধি, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও অ্যাম্বেসির প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী ও তরুণ সমাজের প্রতিনিধি এবং মিডিয়া প্রতিনিধিসহ প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন ক্ষেত্রের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থেকে তাদের গুরুত্বপূর্ণ অভিমত তুলে ধরেন।
কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন- ড. মো। হাফিজুর রহমান, তৌফিকুর রহমান, ড. মো। নুরুল হুদা, ড. কামরান উল বাসেদ, ড. মো। মিজানূর রহমান, শেখ জাহিদুর রহমান, সৈয়দ আশরাফ, Jens Kleijburg, ডালিয়া দাস, রুবিনা ইয়াসমিন, মো। রুবেল মাহমুদ, সামিউল হাসান সজীব প্রমুখ।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা