ক্যাবের ফলে এই ধরনের লক্ষাধিক মানুষের সুবিধা হবে। অমিত শাহর আশ্বাস, এই বিলের ফলে ভারতীয় মুসলমানদের শঙ্কার কোনও কারণ নেই।
তুমুল অশান্তির আবহেই শেষ পর্যন্ত বুধবার ভারতের রাজ্যসভায়ও পাস হয়ে গেল নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (ক্যাব)। এদিন রাজ্যসভায় ক্যাব পেশ করেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
গত সোমবার লোকসভায় পাস হয় এই বিল। এদিকে, ক্যাবের তীব্র বিরোধিতা জানিয়ে এদিন রাজ্যসভায় সোচ্চার হয় বিরোধীরা। অন্যদিকে, ক্যাব বিরোধী আন্দোলনে রীতিমতো জ্বলছে আসাম, ত্রিপুরার মতো উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি। পরিস্থিতি সামলাতে সে রাজ্যে সেনা পাঠানো হয়েছে।
‘এটা একটা ঐতিহাসিক দিন’ বলে টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
বিল নিয়ে আলোচনার শুরুতেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তান ও বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ২০ শতাংশ ধর্মীয় সংখ্যালঘুর হার কমেছে। হতে পারে তারা নিহত বা ভারতে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। এদেশে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের অবস্থা ভয়াবহ। ক্যাবের ফলে এই ধরনের লক্ষাধিক মানুষের সুবিধা হবে।’ তাঁর আশ্বাস, ‘এই বিলের ফলে ভারতীয় মুসলমানদের শঙ্কার কোনও কারণ নেই।’
রাজ্যসভায় ক্ষমতাসীন বিজেপি ও বিরোধীদলগুলোর মধ্যে জোর বিতর্কের পর ভোটাভুটিতে ১২৫টি ভোট পড়েছে বিলের পক্ষে। বিপক্ষে ভোট পড়েছে ১০৫টি। এবার রাষ্ট্রপতি সই করলেই এই বিল আইনে পরিণত হবে। যা একটি অনুষ্ঠানিকতা মাত্র।
নাগরিকত্ব বিল: প্রত্যাহারে হাজারো বুদ্ধিজীবীর সই, উলঙ্গ হয়ে প্রতিবাদ
মূলত বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে শরণার্থী হিসেবে যাওয়া ছয়টি ধর্ম বিশ্বাসী মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়ার লক্ষ্যেই এই বিল তোলা হয়। এই তালিকা থেকে মুসলমানদের বাদ দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলো হচ্ছে—হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ ও পার্সি মতাদর্শে বিশ্বাসী মানুষ।
১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে ভারতের নাগরিকত্বের আবেদন করার আগে ১১ বছর দেশটিতে থাকার শর্ত উল্লেখ করা হয়েছিল। এই সুযোগ মুসলমানদের জন্যও অবারিত ছিল।
নতুন প্রস্তাবে সেই সময় কমিয়ে পাঁচ বছর করা হয়েছে। সেই হিসাবে প্রতিবেশী দেশ থেকে ২০১৪ সালের আগে যাওয়া এসব মতাদর্শে বিশ্বাসী লোকজনকে নাগরিকত্ব দিতে চায় ভারত। সেই লক্ষ্যে বিলটি গত সোমবার লোকসভায় তোলা হয়। প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় পাস হয়।
রাজ্যসভায় কংগ্রেস সাংসদ আনন্দ শর্মা বলেন, ‘এই বিল দেশের সংবিধানের ভিত্তির উপর আঘত। যে বিল আপনারা পেশ করেছেন তা ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের উপর আক্রমণ। বিল সংবিধান ও গণতন্ত্র বিরোধী। নৈতিকতার বিচারে এই বিল মেনে নেওয়া যায় না।’
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধীতায় রাজ্যসভায় সরব হন তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন। ক্যাবকে ‘বাঙালি ও সংবিধান বিরোধী’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা দেশে ক্যাব ও এনআরসি লাগু করতে দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি। ইন্ডিয়ান এক্রপ্রেস।
Like & Share our Facebook Page: Facebook