হাঁটি হাঁটি পা পা করে ৬৭ বছরে এসে পৌঁছাল ‘দৈনিক ইত্তেফাক’। ১৯৫৩ সালের ২৪ ডিসেম্ব্বর ‘সাপ্তাহিক ইত্তেফাক’ পত্রিকার বিলুপ্তি ঘটিয়ে ‘দৈনিক ইত্তেফাক’ নামে প্রকাশিত হয়।
শুরুতে এটি টিকাটুলীর প্যারামাউন্ট প্রেস থেকে ছাপা হতো। এটি মূলত রাজনৈতিক দলের পত্রিকা হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও অল্প সময়ের মধ্যে তা গণমানুষের অধিকারের পত্রিকায় রূপ নেয়। যদি বইকে বলা হয় ‘জ্ঞানের ভান্ডার’ তাহলে পত্রিকা হবে সেই জ্ঞানের উত্স।
পত্রিকার মাধ্যমে জ্ঞানের পরিধি বিস্তৃত ও সমৃদ্ধ হয়। সমসাময়িক দেশ-বিদেশের সকল তথ্য আমরা পত্রিকাতেই পেয়ে যাই। আর সময়কে জয় করে এই পত্রিকাটি হয়ে উঠেছে সমাজের প্রতিচ্ছবি। শুধু সমাজ বললে ভুল হবে তা এখন সমাজ, রাষ্ট্রের ঊর্ধ্বে বিশ্বের প্রতিচ্ছবি।
মানিক মিয়া ১৯৫৩ সালে ‘দৈনিক ইত্তেফাক’ প্রকাশ করেন। মানিক মিয়ার একটা কলাম ছিল ‘রাজনৈতিক মঞ্চ’, বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে। বাংলার মানুষের অধিকার, শোষণ, বঞ্চনা স্থান পাওয়ায় শিক্ষিত মহলে বেশ সাড়া জাগায়। স্বাধীনতাসংগ্রামের অন্যতম হাতিয়ার হয়ে ওঠে।
১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট জয়ী করার মতো সাহসী ভূমিকা রাখে। ১৯৬১ সালে সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ করার জন্যে সামরিক শাসক আইয়ুব খান ‘প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন্স’ অ্যাক্ট আইন জারি করে অনেক দিন প্রচারণা বন্ধ রাখে, মানিক মিয়াকে জেলে নেওয়া হয়।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনী ইত্তেফাক অফিস পুড়িয়ে ফেললেও কিছু দিন পর আবার চালু হয়। ১৯৭৫ সালের ১৭ জুন ইত্তেফাক পত্রিকা জাতীয়করণ করা হয়।
বর্তমানের ইত্তেফাক নানান দিকে বিস্তৃত। দেশ-বিদেশ, শিল্প-সাহিত্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য, বিজ্ঞান, খেলাধুলা, মতামত প্রভৃতি বিষয়ের খবরাখবর সুন্দর ও সাবলীলভাবে ছাপা হচ্ছে।
তরুণ শিক্ষার্থীরা নতুন নতুন ধারণা পোষণ করছে; প্রযুক্তিনির্ভর তথ্য নিয়ে উদ্যোক্তা হচ্ছে। পুরোনো ধ্যানধারণা ত্যাগ করে সমাজ পরিবর্তনের নতুন রূপ খুঁজে বেড়াচ্ছে।
যানজট, সড়ক দুর্ঘটনা, বাল্যবিবাহ, গুম-হত্যা, ধর্ষণ, শিশু ও নারীশিক্ষা, বয়স্কদের সম্মান প্রদর্শন, নৈতিকতা প্রভৃতি সমাজসচেতনমূলক কর্মকাণ্ডে একদল শিক্ষিত মহল ইত্তেফাকের সহায়তা নিচ্ছে।
সাংবাদিকতার মূল লক্ষ্যই হচ্ছে সময়ের দাবি মেটানো। সেই দিক থেকে দৈনিক ইত্তেফাক তার প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই সময়ের দাবি মিটিয়ে এসেছে।
সহজ করে বললে, মানুষের অধিকরের কথা বলে এসেছে। আজ এত বছর পরে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার স্বপ্ন-লালিত যে বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি, দৈনিক ইত্তেফাক সেই জাতি-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছিল।
Like & Share our Facebook Page: Facebook
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা