কুষ্টিয়ার রহিমপুরে ঢাকা-কুষ্টিয়া মহাসড়কের পাশে স্মরণ মৎসবীজ খামারে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ত্রয়োদশ ক্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল আর্ট ক্যাম্প ২০১৯। ক্যাম্প শুরু হয়েছে গত ২৫ ডিসেম্বর, আগামী ৩০ ডিসেম্বর উন্মুক্ত প্রদর্শনীর মাধ্যম এই আয়োজনের পর্দা নামতে যাচ্ছে । বাংলাদেশ সহ বিশ্বের ৪টি দেশের প্রায় বিশজন শিল্পী এই আন্তর্জাতিক আর্ট ক্যাম্পে অংশ নিচ্ছেন।
কিউরেটরের দায়িত্ব পালন করছেন ভারতের শিল্পী ও কিউরেটর সুরেশ কে. নায়ার। বাংলাদেশসহ রাশিয়া, জাপান ও ভারত এর শিল্পীরা এই ক্যাম্পে অংশ নিচ্ছেন। অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা হচ্ছেন : জাপানের রেইকোসি মিজু,তামিকো তাকাহাসি, রাশিয়ার লাভরেন্টি রেপিন, ভারতের আশিস রাঠোর, বালা গোপালান বেথুর, সুভাষ কুমার মাসকারা, উর্মিলা বানু, শিরিন শেখ এবং বাংলাদেশের জুয়েল চাকমা, জয়াবড়ুয়া, নাজমুল হোসেন নয়ন, এস এম রিয়াদ, সেমিনা ইশরাত, সুতপা বর্মন, পলি লায়লা, মুনতাসিব রহমান, শক্তি নোমান, সাদিয়া শারমিন এবং মো. সামিন শুভ।
২০০৭ সাল থেকে এই মাল্টি ডিসিপ্লিনারি আর্ট ক্যাম্পটি নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। কুষ্টিয়ায় এই আর্ট ক্যাম্পটির সূচনা হয়েছিল বিভিন্ন ধরনের শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের উদ্যোগে, শিল্পী ও গবেষক শাওন আকন্দের নেতৃত্বে এবং শিল্পী দেলোয়ার হোসেনের আন্তরিক সহযোগিতায়। এই ক্যাম্পে শিল্পীরা প্রধানত সাইট-স্পেসিফিক ও কন্সেপচুয়াল আর্টওয়ার্ক নিয়ে কাজ করছেন। শিল্প নির্মান উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে স্থানীয় বিবিধ উপাদান ও পারিপার্শিক প্রতিবেশ। স্থানীয় পরিবেশের সাথে সমন্বিতভাবে শিল্প চর্চার ধারাকে সামনে এগিয়ে নিতে ক্যাম্পের শিল্পীরা কাজ করে চলেছেন।অংশগ্রহণকারীরা ইতোমধ্যে কুষ্টিয়া অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও অঙ্গনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থান (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি, লালনের ছেউড়িয়া, গোপিনাথ-জিউমন্দির, মোহিনি মিল প্রভৃতি) ঘুরে দেখেছেন এবং স্থানীয় বিভিন্ন আর্ট উপকরণ সংগ্রহ করেছেন তাদের শিল্পকর্মের জন্য। এবারের আর্ট ক্যাম্পের কিউরেটরিয়াল থিম “রুটস/শেকড়”-এর আলোকে শিল্পীরা তাদের শিল্পকর্ম নির্মান আরম্ভ করেছেন যা উন্মুক্ত প্রদর্শনীর মাধ্যমে ৩০ ডিসেম্বর দর্শকদের সামনে তুলে ধরা হবে।
সমকালে দাঁড়িয়ে নিজেদের চিন্তাধারা, দর্শন, শিল্পচর্চার ধারাবাহিক অনুশীলনের সাথে বৈশ্বিক চিন্তাধারার সমন্বয় সাধন, যৌথতার ভিত্তিতে শিল্প প্রয়াসের আদান প্রদান আর শিল্পের সামগ্রিক আবহের সাথে সাধারণ মানুষকে অঙ্গীভূত করার প্রচেষ্টার ভেতর দিয়ে তেরোতম ক্র্যাক আন্তর্জাতিক আর্ট ক্যাম্প সমাপ্তির পথে। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে শিল্পচর্চার ধারাবাহিক ইতিহাসে অনেকগুলো বাঁক আছে। প্রতিটি বাঁক এক একটি সময়ের প্রতিনিধিত্ব করে। এক এক ধরনের উত্তরণের কথা বলে। তেরো বছরের সফল প্রচেষ্টার পর ক্র্যাক আন্তর্জাতিক আর্ট ক্যাম্পকে সেই ধারাবাহিক ইতিহাসের অংশ বলা যায়। ক্র্যাক তাদের দীর্ঘ এক যুগের চর্চায় এটি প্রমান করতে সফল হয়েছে যে, বাংলাদেশের চারুশিল্প চর্চার নিজস্ব পথ আছে। সেই পথ কেবল প্রাতিষ্ঠানিকতায় বিকশিত নয়। বরং জনপদের ইতিহাসের সাথে তার রয়েছে গভীর যোগাযোগ।
৩০ ডিসেম্বর দুপুর ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ক্যাম্পের শিল্পকর্ম খোলা থাকবে সকল মানুষের জন্য, চাইলে আলাপ ও করা যাবে দেশ-বিদেশের শিল্পীদের সঙ্গে। এই ক্যাম্প সম্পর্কে আরো জানতে চাইলে দেখতে পারেন ক্র্যাকট্রাস্টের ওয়েবসাইট: http://www.crackbd.org এবং ফেসবুকের এই লিঙ্কটি https://web.facebook.com/CRACKTrust/
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা