তাসকিনা ইয়াসমিন
এই বছরের প্রথম ১৪ দিনে সারাদেশে মোট ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন ১৪৮ জন। শীতকাল ডেঙ্গুর মৌসুম না হলেও ডেঙ্গু যেহেতু এখন এনডেমিক হয়ে গেছে তাই সারাবছরই রোগী পাওয়া যাবে বলছেন ডেঙ্গু বিশেষজ্ঞ ড. এ. এস. এম আলমগীর। বলছেন, মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেই ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপাররেশন্স সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার জানান, ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ১০৫ জন।
তিনি জানান, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ভর্তিরোগীর সংখ্যা ৪৩ জন। ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে সর্বমোট ভর্তিরোগীর সংখ্যা ৩৮ জন। অন্যান্য বিভাগে বর্তমানে সর্বমোট ভর্তিরোগীর সংখ্যা ৫ জন। তিনি জানান, গত ২৪ ঘন্টায় (১৩ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে ১৪ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত) নতুন ভর্তিরোগীর সংখ্যা ৩ জন। তিনি জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ঢাকায় নতুন ভর্তিরোগীর সংখ্যা ১ জন। গত ২৪ ঘন্টায় ঢাকার বাইরে নতুন ভর্তিরোগীর সংখ্যা ২ জন।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি প্রসঙ্গে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটে (আইইডিসিআর) এর প্রিন্সিপ্যাল সায়েন্টিফিক অফিসার ড. এ. এস. এম আলমগীর বলেন, ডেঙ্গুর এখন যে পরিসংখ্যান দেখা যাচ্ছে এটা স্বাভাবিক। কারণ ডেঙ্গু এখন এনডেমিক হয়ে গেছে। এখন সমস্যা হলো গত ৩/৪ দিন ছাড়া সকালবেলায় হয়ত ১৩ ডিগ্রি থাকে। দুপুরবেলায় ২৭ ডিগ্রি থাকে। তো এই টেম্পারেচারের একটা নির্দিষ্ট সময়ে মশার লার্ভা তৈরি হয়। এইজন্য কিছু ডেঙ্গু হবেই। কোন কিছুই তো শতভাগ নির্মুল করা সম্ভব হয়না। তাই, কিছু রোগী হতেই পারে।
তিনি বলেন, একবছর ডেঙ্গু হলে নিয়ন্ত্রণে অনেক কাজ হয়। যার কারণে পরের বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কমে। কিন্তু একবছর হলে যে পরের বছর ডেঙ্গু কমবে বিষয়টা এমন না।
তিনি বলেন, এখন জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়েই চিন্তা করতে হচ্ছে। ডেঙ্গুর সিজনে হয়ত ৫০ হাজার কেস হয়েছে কিন্তু সিজন নয় বলে একজন আক্রান্ত হবে না বিষয়টা এমন না।
তিনি বলেন, আমাদের ডেঙ্গু প্রতিরোধে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সবাইকে কাজ করতে হবে। নিজের বাড়িঘর নিজেকে পরিষ্কার করতে হবে। মশামুক্ত থাকার মাধ্যমে নিজেকে ডেঙ্গু থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুম জানায়, ২০১৯ সালে সারাদেশে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৩শ ৫৪ জন। এদেরমধ্যে ১৪৮ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। এদিকে, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটে (আইইডিসিআর) এর কাছে ২০১৯ সালে ডেঙ্গুসন্দেহে ২৬৬ টি মৃত্যুর তথ্য প্রেরিত হয়েছে। এরমধ্যে আইইডিসিআর ২৩৪ টি মৃত্যু পর্যালোচনা সমাপ্ত করে ১৪৮ টি মৃত্যু ডেঙ্গুজনিত বলে নিশ্চিত করেছে।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা