অনলাইন ডেস্ক
যে এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছেন, তার বড় অংশই রয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যে। কিন্তু অর্থনৈতিক মন্দার কারণে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর হুমকি দিচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। বিশেষ করে সৌদি থেকে কত শ্রমিক ফেরত আসবে তা ভাবতেও পারছি না।
সৌদি সরকার বাংলাদেশিদের ফেরত আনার বিষয়ে তাগাদা দিচ্ছে। কিন্তু আমরা তাদের বলেছি, এক সঙ্গে এত লোক আনতে পারবো না। আমরা আমাদের নাগরিক অবশ্যই নিয়ে আসব। তবে ধাপে ধাপে আনতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘৭০ শতাংশ নাগরিককে কর্মক্ষেত্রে আনার পরিকল্পনা সৌদি সরকারের অনেক দিনের। এটা তারা প্রতিবছর ৫ শতাংশ করে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে।
কিন্তু সৌদির মানুষতো কাজ করে না, তাদের পাওয়াও যায় না। যদিও বর্তমানে সৌদির কিছু লোক কাজে যোগ দিচ্ছেন। তবে তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় সৌদির অর্থনীতি কিছুটা কঠিন অবস্থায় রয়েছে।
ফলে মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশগুলোতে আগামীতে আমাদের শ্রমিকের চাহিদা কমবে।’
ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো আনডকুমেন্টেটেড ও অবৈধ কর্মীদের নিবন্ধন করতে বলেছে। নিবন্ধন করলে আর কোনো জরিমানা দিতে হবে না। দেশে ফিরতেও খরচ লাগবে না। সংশ্লিষ্ট দেশগুলো তাদের ফেরত পাঠাবে।
এর ফলে বাংলাদেশিরা দলে বেধে নিবন্ধন করছে। নিবন্ধনের পরে তাদের ক্যাম্পে রেখে দিচ্ছে। সেখান থেকে দেশে ফিরতে তারা বাধ্য। এছাড়া ছোটখাটো অপরাধে জেলে থাকা প্রবাসীদের ক্ষমা করে জেল থেকে সোজা বিমানে তুলে দিচ্ছে। ফলে বিরাট সংখ্যক লোক আসছে।’
তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে বলা হয়েছে, জেলে থেকে ফেরত পাঠানোর আগে তাদের তথ্য দিতে হবে। তারা বাংলাদেশের নাগরিক কি না তা যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে গ্রহণ করা হবে।
তবে সৌদি আরব কৃষিতে মনযোগী হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সৌদি সরকার কৃষি ও প্রাণিসম্পদ খাতে সামনের দিনে যথেষ্ট উদ্যোগ নেবে। এগুলোর সঙ্গে মৎস্য খাতে উদ্যোগ যদি নেয় তাহলে বাংলাদেশি শ্রমিকদের এ খাতগুলোতে নিয়োগ করা যেতে পারে।
সূত্র জানায়, ২০১৫ সাল থেকে আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের কারণে দেশটিতে থাকা বৈধ ও অবৈধ অন্য দেশের নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় সৌদি সরকার।
সে হিসেবে ২০১৯ সালের শেষ দিকে সৌদিতে বাংলাদেশ দূতাবাস পাসপোর্টের মেয়াদ উত্তীর্ণ, হুরুব হয়ে যাওয়া, অবৈধ, অনিবন্ধিত বাংলাদেশিদের তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু করে। দূতাবাসের কর্মকর্তাদের ভাগ করে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বাংলাদেশিদের নিবন্ধনের আহ্বান জানানো হয়।
তখন থেকেই সৌদিতে বাংলাদেশ দূতাবাস ও কনস্যুলেট প্রতিনিয়ত এসব বাংলাদেশিদের তালিকা প্রণয়নে কাজ করছে। এখন আবার সাধারণ ক্ষমা করে আবারো বৈধ হওয়ার সুযোগ দিতে যাচ্ছে সৌদি সরকার।
এ প্রেক্ষাপটে সৌদিতে থাকা বাংলাদেশ দূতাবাস আশংকা করছে যে এবার ৫-১০ লাখ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হবে। এ ধরনের তথ্য সৌদিতে থাকা বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, সৌদির মতো কাতার, ইরাক, বাহারাইনসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশি অবৈধ শ্রমিকদের ফিরিয়ে নিতে চাপ দিচ্ছে। কয়েকটি দেশ থেকে ইতিমধ্যে কিছু বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা