২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে সিশেলস সরকার বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়া সাময়িক বন্ধ রাখে। এরপর উচ্চ অভিবাসন ব্যয় হ্রাসসহ একটি সুশৃংখল ও কাঠামোবদ্ধ প্রক্রিয়ায় সিশেলস এ কর্মী প্রেরণের লক্ষ্যে উভয় দেশ শ্রম সহায়তা চুক্তি সম্পাদনের বিষয়ে আগ্রহ ব্যক্ত করে। তারই ধারাবাহিকতায় চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে সিশেলস এ বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাটি উঠে গেল।
পূর্ব আফ্রিকার দেশ সিশেলসের রাজধানী ভিক্টোরিয়াতে সে দেশে বাংলাদেশী জনশক্তি প্রেরণ বিষয়ে ২১ অক্টোবর একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে বাংলাদেশ পক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইমরান আহমদ। সিশেলস সরকারের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন সিশেলস-এর এমল্পয়মেন্ট, ইমিগ্রেশন ও সিভিল স্ট্যাটাস মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মিজ মারিয়াম তেলেমাক।
রবিবার (২৭ অক্টোবর) এ চুক্তি স্বাক্ষর প্রদান পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানান।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উভয় দেশ আশাবাদ ব্যক্ত করে যে, চুক্তিটি স্বাক্ষরের ফলে দু’দেশের মধ্যে শ্রম বাজারসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সফরকালে সিশেলসে অবস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশীরাও চুক্তিটি স্বাক্ষরের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ পক্ষে শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন/সরকারি রিক্রুটমেন্ট এজেন্ট হিসেবে বাংলাদেশ ওভারসীজ এমপ্লয়মেন্ট এন্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল) এবং জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) সিশেলস-এ কর্মী রিক্রুটমেন্ট প্রক্রিয়া সম্পাদন করবে। তৎপ্রেক্ষিতে সিশেলস গমনেচ্ছু কর্মীগণ অন্য কোনো রিক্রুটমেন্ট এজেন্ট কিংবা কোনো ব্যক্তির মাধ্যমে সিশেলস গমনের চেষ্টা করবেন না এবং কারও সাথে এ সংক্রান্ত কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন করবেন না।
সিশেলস এ প্রায় আড়াই হাজার বাংলাদেশী কর্মী কর্মরত রয়েছেন। নির্মাণ শিল্পে অধিকাংশ কর্মী কাজ করে থাকেন। এছাড়া হোটেল, টুরিজম, স্বাস্থ্য সেবা, হাউজ কিপিং, কুক, ভিলা এটেন্ডডেন্ট, কৃষি খামার, পোল্টি খামার প্রভৃতি খাতেও বাংলাদেশী কর্মীগণ কর্মরত আছেন। ফিশিং ও ফিশ ইন্ডাস্টিজ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং টুরিজম খাতে বাংলাদেশী কর্মীদের কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
বর্তমানে প্রবাসী বাংলাদেশী কর্মীরাই সিশেলসের বৈদেশিক শ্রম বাজারের অন্যতম প্রধান অংশীদার। চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য –
বাংলাদেশ হতে কর্মী প্রেরণের স্থগিতাদেশ (Moratorium) টি প্রত্যাহার করা হয় ;বাংলাদেশের জন্য সিশেলস্ এর সম্ভাবনাময় শ্রমবাজারে একটি সুশৃঙ্খল ও কাঠামোবদ্ধ প্রক্রিয়ায় কর্মী প্রেরণ করা সম্ভব হবে এবং এতে উভয় দেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে; দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সুদৃঢ় ও বিস্তৃত হবে; বাংলাদেশি কর্মীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় ও অধিকারসমূহ সুরক্ষিত হবে; অভিবাসন সংক্রান্ত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সুষ্ঠু, নিরাপদ, নিয়মতান্ত্রিক ও দায়িত্বশীল অভিবাসন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণে Agreement on Labour Cooperation (ALC)-টি গুরুত্বপূর্ণ ও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
মন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামানের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানা যায়, সিশেলস গমনেচ্ছু কর্মীদের প্রয়োজন হবে – চুক্তিপত্র -এ উলিখিত চাকুরির মেয়াদ অনুসারে বৈধ পাসপোর্ট; পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট; বিএমইটি কর্তৃক ইস্যুকৃত ছাড়পত্র/স্মার্ট কার্ড; সিশেলস এর ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক ইস্যুকৃত জিওপি, যা বাংলাদেশে অবস্থিত সিশেলস কনস্যুলেট কর্তৃক এনডোর্স করা হবে; এমপ্লয়মেন্ট কন্ট্রাক্ট, যা সিশেলস এর এমপ্লয়মেন্ট ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক সত্যায়িত; আনুষংগিক অন্যান্য কাগজপত্র
উল্লিখিত চুক্তির আওতায় স্বল্প অভিবাসন ব্যয়ে দক্ষ ও যোগ্য কর্মীগণ সিশেলস যেতে পারবেন।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা