অনলাইন ডেস্ক
কিন্তু প্রস্তুতি কতটা হলো এই প্রশ্ন থেকেই যায়। কেন না বিশ্বকাপে খেলতে হবে স্পোর্টিং উইকেটে। যেটা মিরপুরের শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড সিরিজে ছিল অনুপস্থিত।
বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের রুগ্ন চেহারাটা আরও একবার বেরিয়ে পড়ল ‘হোম অব ক্রিকেটে’। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে নিউজিল্যান্ডের ১৬১ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ থেমে গেল ৮ উইকেটে ১৩৪ রানে। ২৭ রানের জয় তুলে নিল নিউজিল্যান্ড। সিরিজ শেষ হলো ৩-২ ব্যবধানে। মাঝপথে মাহমুদউল্লাহ আর আফিফ হোসেন ম্যাচটা জমিয়ে তুলেছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা আর হয়নি। বিশ্বকাপের উইকেট ব্যাটিং সহায়কই হবে। তার আগে এমন ব্যাটিং দৈন্যতার প্রদর্শনী নিশ্চয়ই ভালো কিছু নয়।
তার আগে জয়ের জন্য বাংলাদেশের সামনে ১৬২ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় নিউজিল্যান্ড। টম লাথামের ফিফটিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬১ রানের লড়াকু পুঁজি গড়ে অতিথিরা।
ম্যাচ হারলেও পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে জিতল বাংলাদেশ। আর চমৎকার পারফরম্যান্সে পঞ্চম ও শেষ ম্যাচ জিতে সফরকারী কিউইরা কমাল সিরিজ হারের ব্যবধান।
বর্তমান সময়ে টি-টোয়েন্টিতে ১৬২ রানের লক্ষ্য খুব বেশি চ্যালেঞ্জিং নয়। তবে মিরপুরের মন্থর ও টার্নিং উইকেটে স্কোরটা একটু বড়সড়ই মনে দেখাচ্ছিল। টাইগারদের ছন্নছাড়া ব্যাটিংয়ে তার প্রমাণও মিলল।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল ভালোই। মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও লিটন দাস দেখে শুনে সামনে এগিয়ে যাওয়ার আভাস দেন। তবে দলের সেই সুখস্মৃতিটা খুব বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। দলীয় ২৬ রানেই ভাঙে তাদের জুটি।
লিটন দাস ব্যক্তিগত ১০ রানে ফিরলেও দৃঢ়তার প্রত্যয়ের ছাপ মেলে অন্য উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান নাঈম শেখের ব্যাটিংয়ে। তবে এলোমেলো ব্যাটিংয়ে ভক্ত সমর্থকদের হতাশ করেন সৌম্য সরকার (৪) ও মুশফিকুর রহিম (৩)। ফিরে যান নাঈমও। ২৩ রানের বেশি তুলতে পারেননি তিনি। দলীয় স্কোর তখন ৪ উইকেটে ৪৬।
বিপদের সময় দলের হাল ধরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আফিফ হোসেন। পঞ্চম উইকেটে ৬৩ রানের দাপুটে একটি পার্টনারশিপও গড়েন। কিন্তু জয় ছিনিয়ে নিতে পারেননি। ক্যাপ্টেন মাহমুদউল্লাহ ২৩ রান নিয়ে সাজঘরের পথ ধরলেও ক্রিজের এক প্রান্ত আগলে ব্যাটিং লড়াইটা একাই চালিয়ে যান আফিফ। তবে মাত্র এক রানের জন্য টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি মিস করেন তরুণ এ অলরাউন্ডার। ৩৩ বলে ২ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় ৪৯* রানে অপরাজিত থেকে যান আফিফ।
কিন্তু ক্রিজের অন্য প্রান্তে নিয়মিত উইকেট পড়তে থাকে। ৫ উইকেটে ১০৯ সংগ্রহ করতেই ফিরে যান মাহমুদউল্লাহ। এরপর বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন-আপে ফের মড়ক লাগে ১৮ রান এনে দিতেই পড়ে যায় আরও তিনটি উইকেট। আউট হন নুরুল হাসান সোহান (৪), শামীম হোসেন (২) ও তাসকিন আহমেদ (৯)।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন আজাজ প্যাটেল ও স্কট কুগেলেইজিন।
তার আগে মিরপুরের মন্থর উইকেটের চ্যালেঞ্জ সামলে দুরন্ত ব্যাটিং করেছে নিউজিল্যান্ড। ৩৭ বলে ২ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কা ৫০ রানের অধিনায়কোচিত দুর্দান্ত এক ক্রিকেটীয় ইনিংস খেলেন লাথাম।
ওপেনার ফিন অ্যালেন যোগ করেন ৪১। রাচিন রবীন্দ্র ১৭, হেনরি নিকোলস ২০* ও কোল ম্যাককনকি করেন ১৭ রান।
তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম শিকার করেন দুই উইকেট। একটি করে উইকেট নেন নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ ও আফিফ হোসেন।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পঞ্চম ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে শুরুতে বল হাতে মাঠে নামে টাইগাররা। টস জিতেই ব্যাটিং বেছে নিয়ে বাংলাদেশকে ফিল্ডিংয়ে পাঠিয়ে দেন সফরকারী দলের ক্যাপ্টেন টম লাথাম।
ম্যাচে বাংলাদেশ একাদশে পরিবর্তন আসে চারটি। দলে জায়গা করে নেন সৌম্য সরকার, শামীম হোসেন পাটোয়ারী, শরিফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদ। বিশ্রামে চলে যান ইনজুরিতে থাকা সাকিব আল হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও মেহেদী হাসান।
নিউজিল্যান্ড একাদশে পরিবর্তন আসে তিনটি। দলে ফিরেন স্কট কুগেলেইজন, বেন সিয়ার্স ও জ্যাকব ডাফি। এ কারণে দল থেকে ছিটকে যান হামিশ বেনেট, ব্লেয়ার টিকনার ও ইনজুরিতে থাকা টম ব্লান্ডেল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড : ২০ ওভারে ১৬১/৫ (অ্যালান ৪১, রাচিন ১৭, ল্যাথাম ৫০, ইয়ং ৬, গ্র্যান্ডহোম ৯, নিকোলস ২১, ম্যাকনকি ১৭ ; শরিফুল ৪-০-৪৮-২, তাসকিন ৪-০-৩৪-১, আফিফ ৩-০-১৮-১, নাসুম ৩-০-২৫-১, মাহমুদউল্লাহ ৩-০-১৭-০, শামীম ১-০-৪-০, সৌম্য ২-০-১৪-০) ।
বাংলাদেশ : ২০ ওভারে ১৩৪/৮ (নাঈম ২৩, সৌম্য ৪, লিটন ১০, মুশফিক ৩, মাহমুদউল্লাহ ২৩, সোহান ৪, শামীম ২, তাসকিন ১, নাসুম ৩, আফিফ ৪৯ ; জ্যাকব ৪-০-২৫-১, অ্যাজাজ ৪-০-২১-২, ম্যানকনকি ৩-০-২৫-১, বেন ৩-০-২১-১, স্কট ৩-০-২৩-০, রাচিন ৩-০-১৯-১)।
ফল : ২৭ রানে জয়ী নিউজিল্যান্ড।
সিরিজ : ৩-২ ব্যবধানে জয়ী বাংলাদেশ।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা