ভারত রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে গেছে।
দাম আরও বাড়তে পারে, এই আশঙ্কায় বেশি করে পেঁয়াজ কিনে রাখছেন অনেকে। মজুদ বাড়াচ্ছেন মহল্লার খুচরা দোকানিরাও। আর এই হুজুগে পেঁয়াজের বাজার হয়ে উঠেছে নিয়ন্ত্রণহীন।
২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সোমবার বিকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম কেজিতে আরও অন্তত ২০ টাকা বাড়তি দেখা যায়।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজধানীসহ সারা দেশে পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর পিছনে রয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারসাজি।
সোমবার রাজধানীর বড়বাগ, নয়াবাজার, রামপুরা বাজার, শান্তিনগর কাঁচাবাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করতে দেখা গেছে ১২০-১২৫ টাকা কেজি। আমদানি করা পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১১০-১১৫ টাকায়। রফতানি বন্ধের খবরের পর এক দিনের ব্যবধানে রাজধানীর খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩৫ টাকা। দেশি পেঁয়াজের দামই তুলনামূলক বেশি বেড়েছে বলে বিক্রেতারা জানালেন।
বাণিজ্য সচিব মো. জাফর উদ্দিন সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, দেশে পর্যাপ্ত মজুদ আছে। মিয়ানমার, তুরস্ক ও মিসর থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। কেউ অসাধু পন্থায় দাম বাড়ালে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে। বাণিজ্য সচিব বলেন, বছরে দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ২৪ লাখ ১৪ হাজার টন। উৎপাদন হয়েছে ২৩ লাখ ৭৪ হাজার টন। এ উৎপাদন থেকে ৩০ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। সে হিসাবে সাড়ে ৭ লাখ টন পেঁয়াজের ঘাটতি আছে। বর্তমানে দেশে যে পরিমাণে পেঁয়াজ মজুদ আছে, তা দিয়ে আগামী ২ মাস ভালোভাবেই চলবে। এছাড়া দেড় মাস পর দেশি নতুন পেঁয়াজও বাজারে আসবে।
তিনি জানান, সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে পেঁয়াজ উৎপাদনশীল এলাকা পাবনা, ফরিদপুর এবং উত্তরবঙ্গে ১০ জন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে ১০টি দল মাঠে নেমেছে, অসৎ উদ্দেশ্যে পেঁয়াজ মজুতদারির ঠেকাতে দলগুলো তদারক করবে।
কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম অনেক বেড়েছে। যা কখনোই কাম্য না। এটা ব্যবসায়ীদের কারসাজি। তাই এ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে।
ভারত রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর চট্টগ্রামের পাইকারী ও খুচরা বাজারে যে যেমন খুশি দাম নিচ্ছে বলে ক্রেতাদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে। চট্টগ্রামের বৃহত্তম পাইকারী বাজার খাতুনগঞ্জে প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। আর সোমবার সন্ধ্যায় খুচরা বাজার ও পাড়ার দোকানে ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে। অথচ রোববার সকালেও খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ভালো মানের পেঁয়াজ ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছিল।
সোমবার দুপুরে শহরের বৃহৎ পাইকারি কাঁচামালের বাজার রাজাবাজার ও ফতেহআলী বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- দেশি, ভারতীয় ও বার্মিজ (মিয়ানমার) পেঁয়াজ প্রতি কেজিতে ২৫ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। সোমবার দেশি পেঁয়াজের দাম পাইকারি ৮৮ থেকে ৯০ টাকা ও খুচরা ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া সোমবার প্রতি কেজি বার্মার পেঁয়াজ পাইকারি ৫০ থেকে ৫৫ টাকা ও খুচরা ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এ পেঁয়াজ রোববার পাইকারি ও খুচরা বাজারে কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা কম ছিল।
এদিকে রাজধানীতে দাম সহনীয় রাখতে টিসিবির ৩৫টি ট্রাক চক্রাকারে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা