অনলাইন ডেস্ক
৯ উইকেট হারানো আয়ারল্যান্ডের হার নিশ্চিত, উইকেটে থাকা গ্রাহাম হিউম ও বেন হোয়াইট ব্যবধান কমাচ্ছিলেন। ওই সময় ড্রেসিংরুম ছেড়ে ডাগআউটে পায়চারি করছিলেন আইরিশ অধিনায়ক পল স্টার্লিং। ম্যাচ কখন শেষ হবে, কখন আনুষ্ঠানিকতা সারবেন—যেন সে তাড়া আইরিশ অধিনায়কের! তাসকিন আহমেদের করা শেষ বলটি হতেই মাঠে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সৌজন্যতা সারেন স্টার্লিংরা। ৭৭ রানে হেরে এক ম্যাচ বাকি থাকতে সিরিজ হাতছাড়া করেছেন অতিথিরা।
অথচ সিরিজ শুরুর আগে হুঙ্কার ছিল আইরিশদের কণ্ঠে। ভিন্ন কিছুর বার্তা দিয়ে রেখেছিল দলটি। সংস্করণ ছোট হওয়ায় বাংলাদেশকে ভয় না পাওয়ার কথাও বলা হচ্ছিল। কিন্তু কথার লড়াইয়ের চেয়ে মাঠের খেলা যে ঢের কঠিন, দুই ম্যাচে সাকিব আল হাসানরা সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন। গতকাল চট্টগ্রামে ৭৭ রানের জয়ে শুরু থেকেই আধিপত্য দেখালেন সাকিব-লিটনরা। রানের হিসাবে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বড় জয়। আগেরটি ছিল ২০২১ বিশ্বকাপে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে, ৮৪ রানের।
সিরিজ নিশ্চিত করা ম্যাচে বেশ কয়েকটা রেকর্ড গড়েছেন সাকিব-লিটনরা। অপরাজিত ৩৮ রান ও ৫ উইকেটের কীর্তিতে ম্যাচসেরা হয়েছেন সাকিব। এ সংস্করণে সবচেয়ে বেশি (৪ বার) ত্রিশের বেশি রান ও চারের অধিক উইকেট নেওয়া অলরাউন্ডার সাকিব। ১৩৬ আন্তর্জাতিক উইকেট নিয়ে টিম সাউদিকে ছাড়িয়ে এ সংস্করণে সবচেয়ে বেশি উইকেট সংগ্রাহকও বাঁহাতি এ স্পিনার। পঞ্চম ক্রিকেটার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ৪৫০-এর বেশি উইকেটের মালিকও এখন তিনি। আর বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম ফিফটিতে ক্যারিয়ারসেরা ৮৩ রানে ম্যাচে ‘অতি মূল্যবান’ পুরস্কার জেতা লিটন তো নিজেকে ছিনিয়েই যাচ্ছেন বারংবার।
তিনে নাজমুল হোসেন শান্তকে না পাঠিয়ে উইকেটে আসেন সাকিব। একপাশে লিটন যখন আইরিশ বোলারদের ওপর তোপ দাগছেন, অন্যপাশে তখন কিছুটা নিষ্প্রাণ ছিলেন সাকিব। তাদের জুটিটাও ঠিকঠাক হয়নি। ১৪ রানের ব্যবধানে ৪১ বলে ৮৩ করে সাজঘরে ফেরেন লিটন। সেঞ্চুরির যে দারুণ এক সুযোগ হাতছাড়া করেছিলেন লিটন, তার ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে সেটুকু আফসোস ঠোঁটের কোণে লেগেছিল। শেষ দিকে সাকিব ও তাওহীদ হৃদয়ের ৬৭ রানের ঝোড়ো ইনিংসে ২০২ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। দ্রুততম ২০০ রানেও এদিন রেকর্ড গড়ল বাংলাদেশ।
ব্যাটিংয়ের মতো বোলিংয়েও আইরিশদের চেপে ধরেন সাকিব, তাসকিনরা। ইনিংসের প্রথম বলে স্টার্লিংকে লিটনের গ্লাভসবন্দি করে উড়ন্ত উদযাপন তাসকিনের। ঠিক পরের ওভার থেকে শুরু সাকিব ‘শো’। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে লরকান টাকারকে ফেরান। নিজের পরের দুই ওভারে দুটি করে উইকেট নেন সাকিব। সংক্ষিপ্ত সংস্করণে দ্বিতীয়বারের মতো পাঁচ উইকেটের কীর্তি গড়েন বাংলাদেশ অধিনায়ক। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারেই প্রতিপক্ষের ব্যাটিং ধসিয়ে দেন সাকিব। ৪৩ রান তুলতে ৬ উইকেট হারানো আইরিশরা ম্যাচের বাকি অংশে ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করে গেছেন, কার্টিস কাম্ফারের ৩০ বলের ফিফটিও এসেছে সে পথে।