“সাকিব ম্যাচ ফিক্সিং করে নাই। সে প্রস্তাব পেয়েছিলো, কিন্তু ফিরিয়ে দেয়। আইসিসিকে জানায় নাই!- এটাই তাঁর ভুল!”
“সাকিব ম্যাচ ফিক্সিং করে নাই। সে প্রস্তাব পেয়েছিলো, কিন্তু ফিরিয়ে দেয়। আইসিসিকে জানায় নাই!- এটাই তাঁর ভুল!” — কয়েকদিন আগের স্ট্যাটাসেই বলেছিলাম যে, আমাদের মিডিয়ার শিরোনামগুলো ঠিক করা দরকার। মিডিয়ার শিরোনামে সাধারণ মানুষ মিসলিডেড হয়। আজকে অনেক বুঝদার মানুষও বলছে যে সাকিব ফিক্সিং করছে। কারণ? সমকাল শিরোনাম করেছে,
“জুয়াড়ির প্রস্তাব গোপন করেছে সাকিব!”
অথচ শিরোনামটা হওয়া উচিত ছিল,
“জুয়াড়ির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলেও জানাননি সাকিব!”
সে যে প্রস্তাবটা ফিরিয়ে দিয়েছে সেটাই মানুষ জানে না! শিরোনামটার উপর অনেক কিছু নির্ভর করে।
এইবার বলি, সাকিবের ভুলটা নিয়ে। পুরো ঘটনা যদি সত্যি হয় তাহলে সত্যি কথা বলতে সাকিবকে ডিফেন্ড করার কিছু নাই। আকসু প্রতি সিরিজের আগে ম্যাচ ফিক্সিং সংক্রান্ত ক্লাস নেয়। “কেউ এপ্রোচ করলে সাথে সাথে আইসিসিকে জানাতে হবে”- এই লেখাগুলো দেয়ালে টানানো থাকে! আইসিসি সবচেয়ে বেশি সোচ্চার এইটা নিয়েই! প্রত্যেক খেলোয়াড় জানে। তারপরেও সাকিব কীভাবে ব্যাপারটা ইগ্নোর করে গেলেন?
সাকিব নিজেই সেই ২২ বছর বয়সে ২০১০ সালে আকসুকে জানিয়েছিলেন তাঁকে দেয়া প্রস্তাব সম্পর্কে। আর ১০ বছর পরে এসে তিনি সেটা ভুলে গেলেন? আইসিসিকে জানালেন না? এটা সাকিবের নিজস্ব খামখেয়ালিপনা ছাড়া আর কিছু না।
তবে তিনি একেবারে বিসিবি-আইসিসি কাউকেই কিছু বলেননি, সেটাও আমার বিশ্বাস হয় না! সাধারণ আড্ডাতেও তো বলার কথা যে আমার কাছে অফার আসছিলো। আমি নেই নাই! কেউ জানতোই না, এটা ভাবাও কষ্টকর!
তবে, একটা ব্যাপার পরিষ্কার হলো। “সাকিব টাকার জন্য খেলে না!” তাঁকে কোটি কোটি টাকার ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দিলেও সে ফিরিয়ে দেয়। আশরাফুলের মতো অসৎ হয়ে সে টাকা কামায় নাই! খামখেয়ালিপনার জন্য তাঁর শাস্তি হবে। সেটা আর যাই হোক অসততা বা টাকার লোভ না!
অনেকে বলার চেষ্টা করছেন যে সাকিবকে পাপন সাহেব গত এক সপ্তাহের ঘটনাবলিতে ফাঁসিয়ে দিয়েছেন। ব্যাপারটা এতো সহজ মনে হচ্ছে না। আইসিসি সাধারণত এই ধরনের তদন্ত করতে গেলে নিদেনপক্ষে কয়েক মাস সময় নেয়। এইটা এক সপ্তাহের ব্যাপার না। আপাতত ধর্মঘটের সাথে এই ঘটনার টাইমিং কাকতাল বলেই মনে হচ্ছে!
যাই হোক, বিসিবির অন্য একটা ব্যাপার কিছুতেই বুঝতে পারছি না।
সাকিবের প্র্যাকটিসে আসা যদি আইসিসি থেকেই নিষেধ করা হয়ে থাকে, তাহলে পাপন সাহেব গত ২-৩ দিন ধরে সাকিব ইন্ডিয়া যেতে চায় না- বলে প্রচার করছিলেন কেন? গতকাল প্রথম আলোর সাক্ষাৎকারে বললেন, তামিমও নাকি ইচ্ছে করেই যাচ্ছে না। প্রথমে তাঁর শুধু দ্বিতীয় টেস্ট না খেলার কথা ছিল। পরে হঠাৎ করেই নাকি তামিম পুরো সিরিজ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে। এগুলো নাকি দলের সিনিয়র ২-৩জনের ষড়যন্ত্র।
পাপন সাহেবের গতকালের সাক্ষাৎকারের লিংক ইউটিউবে আছে। সেখানে উনি স্পষ্ট বলছেন, “শেষ মুহূর্তে যদি সাকিব মানা করে দেয় তাহলে স্কোয়াড পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের বিকল্প রেডি রাখতে হবে। ইত্যাদি ইত্যাদি।” পুরো ঘটনা সত্যি ধরে নিলে পাপন সাহেবও তো পুরো ঘটনাই জানতেন। তাহলে গত ২-৩ দিন ধরে সাকিব ইচ্ছে করে ভারত সফর বানচাল করতে চাচ্ছে বলে ধোঁয়াশা তৈরি করা, সাকিবকে মিডিয়ার সামনে যথাসম্ভব ভিলেন বানানোর চেষ্টা করার কারণ কী?
উনি তো পুরো চুপ থাকতে পারতেন। ব্যাপারটা সামনে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারতেন। শুধু শুধু এতোগুলো মিথ্যা বলে সাকিবকে মেন্টাল প্রেশারে রাখার কী দরকার ছিল, সেটাই বুঝতেসি না!
আবার আপাতত বিসিবি যেভাবেই হোক আইসিসিতে দৌড়ঝাঁপ করছে যেন সাকিবের শাস্তি কমে যায়। এপ্রিশিয়েট করার মতো ব্যাপার। তাহলে এতোদিন উনি এগুলো কেন বললেন?
# এইচ এম হাফিজুল ইসলাম, ফেসবুক থেকে।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা