অনলাইন ডেস্ক
তিনি বলেন, একটা বড় দল যদি নির্বাচনে না আসে, আরও তিনশ’ দল যদি (আসে) তবু নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে পারবেন না।
শহীদ খান বলেন, আপনারা অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কথা বলছেন। এর সঙ্গে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন যুক্ত হতে পারে। কে অংশগ্রহণ করলো কে করলো না এটা আপনাদের বিষয় না হলেও আপনাদেরকে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলতে হবে। আমরা ১৯৯৬ সালের নির্বাচনও দেখেছি, ২০১৪ ও ১৮ সালের নির্বাচনও দেখেছি। এখন সিদ্ধান্ত নিন আপনি কোন মডেল চান। মুখে বললেও বাস্তবে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কোনো ক্ষমতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, আমরা মুখে শুধু বলি নির্বাচন কমিশন ক্ষমতাবান, কিন্তু বাস্তবে কিছুই নাই। সংকটটা এত কঠিন সব দায় কমিশনের ওপর দিয়েও লাভ নাই। একের পর এক এমন চলতে থাকলে মান-মর্যাদা থাকবে না। তিনি বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সেনাবাহিনীর সংশ্লেষ পরিবেশ তৈরিতে সহায়তা করবে। এই পরিবেশ থেকে উত্তরণে আদালতও ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ কোর্টের রায়ের ফলে এই সংকট তৈরি হয়েছে। ইসির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা সবার থেকে পরামর্শ শুনছেন কিন্তু পরামর্শ বাস্তবায়ন করতে পারেননি। না পারার কারণ আপনাদের ব্যাখ্যা করা দরকার। আপনারা প্রিসাইডিং অফিসারের ক্ষমতার কথা বলছেন যে, সুষ্ঠু পরিবেশ মনে না হলে সব ফেলে তিনি চলে আসবেন। প্রিসাইডিং অফিসারের ঘাড়ে কয়টা মাথা যে তিনি সবকিছু ফেলে চলে আসবেন।
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, দেশের প্রধান বিরোধী দল সহ বেশকিছু দল বলছে যে, বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখে তারা কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। পাশাপাশি সরকারে যারা আসীন আছেন, তারা বলছেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অর্থাৎ তারা ক্ষমতায় থাকবেন এবং যে সংসদ আছে, সেই সংসদও বলবৎ থাকবে। এই অবস্থায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই জিনিসটা অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। এটা রাজনীতিকদের সমাধান করতে হবে।
সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. হুমায়ূন কবীর বলেন, এখন ভীতিকর পরিস্থিতি বিদ্যমান। আগামীতে কী হতে যাচ্ছে তা নিয়ে সবার মধ্যে একটি আশঙ্কা কাজ করছে। তিনি বলেন, মানুষ প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলছে। এরমধ্যে নির্বাচন কমিশনও রয়েছে। আরপিওতে নির্বাচন কমিশন কেন ক্ষমতা কমালো সেটি নিয়েও মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। যেখানে আপনারা নিজেদের ক্ষমতা বাড়াবেন সেখানে আপনারা ক্ষমতা কমিয়েছেন বলে জনগণের ধারণা। মানুষ হতাশ হয়েছে। এছাড়া সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ, ভোটারদের ভোট দেয়ার ব্যবস্থা করা এবং পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে বলে জানান তি
প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, আমরা যদি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে না পারি তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। নির্বাচন জণগণের জন্য। নির্বাচন কমিশন ভোটার ও ভোটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন কীভাবে। ২০০১ সালের নির্বাচন সমালোচনা হওয়ার কারণ ছিল মানুষ ভোট দিতে পারলেও ভোটাররা নিরাপদ থাকেনি। ভোটারদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক হতে হবে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র ভোট কাছাকাছি। ৩৩ বা ৩৭ শতাংশ ভোটারকে বাইরে রেখে নির্বাচন করলে সুষ্ঠু হবে না।
ভোরের কাগজের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, বাস্তবতা নির্বাচন ব্যবস্থা বিশ্বাসহীনতায় রয়েছে। একটা ভালো নির্বাচন হলেই যেসব সমস্যা সমাধান হবে তা নয়। তবে ভালো নির্বাচন সমাধানের সূচনা হতে পারে।
যুগান্তরের সিনিয়র সাংবাদিক ও কলাম লেখক মাহবুব কামাল বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে যে ভালো নির্বাচন হয় না তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো রউফ কমিশন। ওই কমিশন ৯১ সালে চমৎকার একটি নির্বাচন করেছিলেন। একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। এই রউফ কমিশনই একটি উপনির্বাচনে এমন কাণ্ড করেছিলেন যে তিনি নির্বাচন এলাকা মাগুরার উপনির্বাচন থেকে পালিয়ে ঢাকায় চলে এসেছিলেন। তিনি তখন বলেছিলেন, পালিয়ে আসা ছাড়া উপায় ছিল না। তিনি বলেন, এই আরপিও দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। এই আরপিও দিয়ে আপনি ডিসি ও এসপিকে বদলি করতে পারবেন না। আপনাকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারের প্রতি আস্থা রাখতে চান সিইসি
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আইনমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী, যোগাযোগমন্ত্রী; উনারাও সরকার শব্দটা ব্যবহার করেছেন। প্রধানমন্ত্রীও স্পষ্টভাবে কয়েকবার বলেছেন; সরকার আগামী নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করার নিশ্চয়তা দিচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা একটা কঠিন অবস্থায় আছি। এটা বিলেতের নির্বাচন হচ্ছে না। অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচন করতে যাচ্ছে না। আপনারা বলেছেন, সংকট আছে; আমরাও তা অনুধাবন করি। অনেকগুলো সংকট নিরসন করতে হবে রাজনৈতিক নেতৃত্বকে। এ কথাটি বার বার বলেছি, আমাদের জন্য অনুকূল পরিবেশ রাজনীতিবিদরা যদি তৈরি করে না দেন, তাহলে নির্বাচন করাটা কষ্টসাধ্য হবে। পরিবেশ অনুকূল করে দিলে আমাদের জন্য কাজটা সহায়ক হবে।
সিইসি বলেন, নির্বাচনটা ভালো হবে কিনা সেটা নির্ভর করছে ‘পলিটিক্যাল উইল’ এর ওপর। আন্তরিক পলিটিক্যাল উইল থাকতে হবে। এটা আমার থেকে আসবে না। পলিটিক্স থেকে আসতে হবে বা সরকার থেকে আসতে হবে।
সমঝোতা প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা বার বার বলেছি একটা সমঝোতার কথা, আপনারা চায়ের টেবিলে বসেন। কিন্তু পলটিক্যাল কালচার এমন হয়েছে, কেউ কারও সঙ্গে বসতে চাচ্ছেন না। ইসি এ সমস্যার সমাধান করে না। দুঃখজনক হলো, সে ধরনের সিভিল সোসাইটিও দেখতে পাচ্ছি না।
নির্বাচনের বিষয়ে সিইসি বলেন, পলিটিক্যাল উইল ইজ এক্সট্রিমলি ভেরি ইমপর্ট্যান্ট। নির্বাচন ভালো হবে কিনা, সেটার জন্য আন্তরিক পলিটিক্যাল উইল থাকতে হবে। পলিটিক্যাল উইল আমাদের থেকে আসবে না। এটা আসবে রাজনৈতিক দল থেকে, সরকার থেকে। আমরা বার বার আহ্বান করেছি, একসঙ্গে বসার কথা বলেছি। কিন্তু আমাদের দেশের পলিটিক্যাল কালচার এত বেশি সিপ্লটেড হয়ে আছে যে কেউ কারও সঙ্গে বসতে চাচ্ছে না
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা