সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য তিনটি ‘বিশেষ ইনক্রিমেন্ট’ ও ‘নবম বেতন কমিশন’ গঠনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অর্থ সচিবকে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সর্বশেষ জাতীয় বেতনস্কেল ঘোষণা প্রায় ৫ বছর হলেও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বমুখী চাপে নিষ্পেষিত সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বেতন-ভাতা বাড়ানোর কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। এ অবস্থায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য তিনটি ‘বিশেষ ইনক্রিমেন্ট’ ও ‘নবম বেতন কমিশন’ গঠনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ সচিবালয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতি।
গত ১ ডিসেম্বর বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অর্থ সচিবের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। করণীয় ঠিক করতে অর্থ বিভাগ এ বিষয়ে বিশ্লেষণও শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় মন্ত্রীপরিষদ বিভাগে গত ২১ নভেম্বর বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এ আবেদন জানায় বাংলাদেশ সচিবালয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতি।
সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সর্বশেষ জাতীয় বেতনস্কেল ঘোষণার প্রায় ৫ বছর হতে চলছে। এরই মধ্যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বমুখী চাপে নিষ্পেষিত সরকারি চাকরিজীবীরা।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জীবনযাত্রার মান ও ব্যয় বিবেচনায় নিয়ে ২০১৫ সালে জাতীয় বেতনস্কেল ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভবিষ্যৎ বেতন-ভাতা নির্ধারণ-সংক্রান্ত একটি মন্ত্রিসভা কমিটি গঠনের জন্যও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ২০১৭ সালের ৯ মে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবকে (সমন্বয় ও সংস্কার) আহ্বায়ক করে নয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে।
ওই কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়, ভবিষ্যৎ বেতন-ভাতা নির্ধারণে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি তাদের জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রেখে এবং মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয়করণের উপায় নির্ধারণের লক্ষ্যে সার্বিক বিষয় বিচার-বিশ্লেষণ করে একটি সুচিন্তিত সুপারিশমালা প্রণয়ন করবে। এ কমিটি ২০১৮ সালের শেষ দিকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়ানো বিষয়ে একটি সুপারিশমালা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। এ প্রতিবেদনের ওপর কয়েকটি বৈঠকও করে অর্থ বিভাগ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বেতন বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
এ পরিপ্রেক্ষিতে সচিবালয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতি জানায়, জাতীয় বেতনস্কেল, ২০১৫ জারি হওয়ার পর প্রায় ৫ বছর অতিবাহিত হতে চলছে। ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, কল্যাণ ফান্ড, যৌথবীমা, পরিবহন খরচসহ অন্যান্য বিল কয়েকগুণ বেড়েছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেসরকারি বাসাভাড়া, পরিবহন, চিকিৎসা খরচ, ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য অনেক গুণ বেড়েছে। এছাড়া বর্তমান বেতনস্কেলে টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড সুবিধা না থাকায় নিম্ন বেতনভুক্ত কর্মচারীদের সংসার পরিচালনা করতে আরও বেশি হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সরকারি কর্মচারীদের ভবিষ্যৎ বেতন-ভাতা নির্ধারণ ও পরিবর্ধনের বিষয় পর্যালোচনা-সংক্রান্ত কমিটির সুপারিশমালা ও ২০১৫ কার্যকর হওয়ার পর থেকে অদ্যাবধি জীবনযাত্রার ব্যয় ও মুদ্রাস্ফীতি এবং দ্রব্যমূল্যের এ ঊর্ধ্বগতির বিষয়টি বিবেচনা করে আপাতত তিনটি ‘বিশেষ ইনক্রিমেন্ট’ ও ‘নবম বেতন কমিশন’ গঠনের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে সমিতি।
বাংলাদেশ সচিবালয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে সরকার তাদের জীবনযাত্রার মান, আয়-ব্যয়ের সঙ্গতি ও মুদ্রাস্ফীতিসহ অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জাতীয় বেতন কমিশন কার্যকরের এক বা দুই বছর আগে বিভিন্ন সময় মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় অর্থ বিভাগ ১৯৮২, ২০০৩, ২০০৮ ও ২০১৩ সালে সরকারি সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গড়ে ২০ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হয়েছে।
Like & Share our Facebook Page: Facebook
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা