ঢাকাই সিনেমার প্রিয়দর্শিনী’ খ্যাত অভিনেত্রী মৌসুমীর জন্মদিন আজ। পুরো নাম আরিফা জামান মৌসুমী।
সম্প্রতি বেশ আলোচিত ঢালিউডের এই অন্যতম সেরা অভিনেত্রী। প্রথমবারের মতো শিল্পী সমিতির সভাপতি প্রার্থী হয়ে মিশা সওদাগরের কাছে হেরে যান তিনি। হেরে গেলেও জনপ্রিয়তায় এতোটুকুও ভাটা পড়েনি মৌসুমীর।
বিশেষ এই দিনটিকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভক্ত-অনুরাগীদের শুভেচ্ছার বন্যায় ভাসছেন তিনি।
দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ঢাকা থেকে দূরে নরসিংদীর একটি রিসোর্টে রোববার প্রথম প্রহরে জন্মদিনের কেক কেটে দিনটি উদযাপন করেন ওমর সানী ও মৌসুমী। সঙ্গে ছিলেন এই দুই তারকার ফ্যান ক্লাবের সদস্যরা, পরিবারের লোকজন ও ঘনিষ্ঠজনরা।
আজকের দিনটি নিয়ে মৌসুমী বলেন, ‘সবকিছু মিলিয়েই এবার আর বিশেষ কিছু করা হচ্ছে না। কোনো পরিকল্পনাও নেই। তবে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি এবং আমার ভক্ত, দর্শদের কাছে দোয়া চাই যেন সুস্থ থাকি। স্বামী, সন্তানসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে যেন ভালো থাকি। আমার সৌভাগ্য, আমি সুন্দর মনের একজন মানুষকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়েছি। আমার সৌভাগ্য যে, ফারদিন ও ফাইজার মতো আদরের দুটি সন্তান আছে আমার। ওদের মধ্যেই আমি আমার শান্তি খুঁজে পাই। আল্লাহ যেন তাদের মানুষের মতো মানুষ করার তৌফিক দান করেন।’
জন্মদিনের এই বিশেষ দিনে মৌসুমীর কাছে একটি অনুরোধ রাখেন ওমর সানী। বিশেষ এই দিনটিতে তিনি বলেন, ‘মৌসুমী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন’ নামে একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ছিল। কিন্তু বহু বছর হলো সেটির কার্যক্রম বন্ধ আছে। আমি চাই মৌসুমী এর কার্যক্রম আবার চালু করুক।’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এই ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনটির আত্মপ্রকাশ ঘটে আনুমানিক ২২-২৩ বছর আগে। তখন ঘটা করে আমরা অনুষ্ঠান করেছি। ওই সময় আইয়ুব বাচ্চুসহ অনেক শিল্পীদের অংশগ্রহণে মৌসমী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনটির যাত্রা শুরু হয়। কিন্তু কিছুদিন চলার পর এর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। আমি চাই এটি চালু হউক এবং বাংলাদেশের মানুষ এক নামে এটিকে চিনুক। ‘মৌসুমী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন’ সারা দেশের মা ও শিশুদের সেবা করুক এবং তাদের পাশে থাকুক।’’
ওমর সানী আরও জানান, মৌসুমীর জন্মদিন উপলক্ষে আজ বিভিন্ন স্থানে দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।
১৯৭৩ সালে ৩ নভেম্বর খুলনায় জন্মগ্রহণ করেন মৌসুমী। বাবা নাজমুজ্জামান মনি ও মা শামীমা আখতার জামান। মৌসুমী ১৯৯৬ সালের ২ আগস্ট জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ওমর সানীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবন্ধ হন। দাম্পত্য জীবনে তাদের ফারদিন এহসান স্বাধীন (ছেলে) এবং ফাইজা (মেয়ে) নামের দুই সন্তান রয়েছে।
উল্লেখ্য, সোহানুর রহমান সোহানের ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবির মধ্য দিয়ে রূপালি পর্দায় পা রাখেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন ঢাকাই ছবির অমর নায়ক সালমান শাহ। ছবিটি ১৯৯৩ সালে মুক্তি পায়। আর ওমর সানী-মৌসুমী জুটির প্রথম ছবি ‘দোলা’। যা মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে।
‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার মাধ্যমেই মৌসুমী তার প্রতিভার প্রমাণ দেন। এরপর থেকে তাকে আর একবারের জন্যও পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক জনপ্রিয় সিনেমার মাধ্যমে দেশীয় চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রায় তিন দশক ধরে ঢাকাই সিনেমায় নিজের অভিনয় দক্ষতার দ্যুতি ছড়িয়ে আসছেন মৌসুমী। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে কাজ করেছেন দুই শতাধিক সিনেমায়। এর মধ্যে নারগিস আক্তার পরিচালিত ‘মেঘলা আকাশ’ ও চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘দেবদাস’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
সালমান শাহের সঙ্গে জুটি বেঁধে ক্যারিয়ার শুরু করা মৌসুমী সফল হয়েছেন ওমর সানী, রিয়াজ, ফেরদৌস, ইলিয়াস কাঞ্চন ও মান্নার সঙ্গে জুটি বেঁধে।
মৌসুমী অভিনয়ের পাশাপাশি নির্মাতা হিসেবে সাফল্য পেয়েছেন। ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’ মৌসুমী পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র। তারপর তিনি ২০০৬ সালে মেহের নিগার চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন। এরপর নির্মাণ করছেন ‘শূন্য হৃদয়’, ‘ভালোবাসবোই তো’ নামের দুটি সিনেমা।
মৌসুমীনায়িকা-নির্মাতার পাশাপাশি একজন মডেল হিসেবেও তার জনপ্রিয়তা আকাশ ছোঁয়া। লাক্স, তিব্বতসহ বিভিন্ন সময় তাকে দেখা গেছে অসংখ্য পণ্যের বিজ্ঞাপনে। এছাড়া কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শুভেচ্ছাদূত হিসেবেও কাজ করছেন এই নায়িকা।
জাতিসংঘের শিশু তহবিল সংস্থা ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে কাজ করেছেন। এককথায় নানামুখী সামাজিক কর্মকাণ্ডেও নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা