অনলাইন ডেস্ক
এর আগে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৭-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে দারুণভাবে ঘুড়ে দাঁড়াল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। লেবাননের বিপক্ষে লড়াই করলো চোখে চোখ রেখে। আক্রমণ থেকে রক্ষণ কোথাও ছাড় দিয়ে কথা বলেনি বাংলাদেশ। দুই দলের র্যাংকিংয়ে পার্থক্য মাঠের খেলায় ফুটে উঠলো না কখনো। পুরো সময়টাই লেবাননের বিপক্ষে দাপুটে ফুটবল প্রদর্শন করেছে বাংলাদেশ। মাঠের খেলার বিবেচনায় বাংলাদেশের জয়টা প্রাপ্য ছিল। সুযোগও তৈরি করেছিল তারা। তবে জয় না পেলেও সঙ্গী হয়েছে স্বস্তির ড্র।
ম্যাচের শুরুতেই গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল লেবানন। তবে তাদের সেই প্রচেষ্টা গোলে রূপান্তরিত হয়নি। ম্যাচের প্রথম ১০ মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে লেবানিজদের দূরপাল্লার কয়েকটি শট বাংলাদেশের রক্ষণ কাঁপাল। পাল্টা জবাব এল স্বাগতিকদের কাছ থেকেও। বল নিজেদের পায়ে রেখে জামালদের লেবাননকে চাপে রাখার চেষ্টাও কাজে এলো ভালোভাবেই।
গোলমুখে বাংলাদেশের প্রথম আক্রমণ ম্যাচের ২৪তম মিনিটে। অধিনায়ক জামালের কর্নার থেকে বিশ্বনাথ ঘোষের হেড গ্লাভসে নেন গোলরক্ষক মোস্তফা মাতার। পরের মিনিটে আরেকটি গোছানো আক্রমণ স্বাগতিকদের। এবার বাঁ প্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন মোরসালিন, শট নেওয়ার সুযোগ না পেয়ে সোহেল রানার (জুনিয়র) উদ্দেশে বল বাড়ালেও লেবাননের ডিফেন্ডার মোহাম্মদ এল হায়েক এসে ক্লিয়ার করে দেন।
৩৩তম মিনিটে আবারও বাংলাদেশের আক্রমণ। এবার ডান প্রান্ত থেকে ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের নিচু ক্রস, গোল মুখে দাঁড়িয়ে মোরসালিন। ফাহিমের শট তার পায়ে যাওয়ার আগেই সেই শট ফেরান কাসেম আল জেইন। প্রথমার্ধের শেষদিকে আরেকটি গোছাল আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। ডান দিক থেকে ফয়সাল আহমেদে ক্রস জটলার মধ্য থেকে গোলমুখে শট নিয়েছিলেন মোরসালিন কিন্তু তা চলে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে।
গোলশূন্য প্রথমোর্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায় দুই দলই। শুরুতেই নিজেদের গোলরক্ষক মিতুল মারমাকে বদলি করে মেহেদি হাসান শ্রাবণকে নামাতে হয়েছে বাংলাদেশের কোচ কাবরেরাকে। প্রথমার্ধেই অসুস্থ অনুভব করছিলেন তিনি। জাতীয় দলের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে ভুল প্রায় করেই বসেছিলেন শ্রাবণ। ৪৮ মিনিটে হাসান মাতুকের ফ্রি-কিকে সামনে এগিয়ে এসে ফিস্ট করার চেষ্টা ছিল বাংলাদেশ গোলরক্ষকের। ফাঁকা পোস্টে কাসেম আল জেইনের হেডে বল অল্পের জন্য জড়ায়নি জালে।
৫২ মিনিটে মাঠে অনাহুত দর্শকের হানা। বাংলাদেশের পতাকা কাঁধে চাপিয়ে সোহেল রানাকে জড়িয়ে ধরলেন এক দর্শক। পরে নিরাপত্তাকর্মীরা এসে সরান তাকে। এই অর্ধে বাংলাদেশের প্রথম আক্রমণ ৫৯ মিনিটে। প্রতি আক্রমণে লেবাননের বক্সে বিশ্বনাথের জোরের সঙ্গে নেওয়া শট পায়ে গলাতে পারেননি মোরসালিন।
পুরো ম্যাচে দাপুটে খেলা বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ ছুটে যায় ৬৭ মিনিটে। গোলরক্ষক শ্রাবণের মস্ত ভুলে এগিয়ে যায় লেবানন। বদলি হিসেবে মাঠে এসে চার মিনিটের মধ্যে লেবাননকে এগিয়ে নেন মাজেদ ওসমান। ডান দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা লেবাননের দু’টি প্রচেষ্টা রক্ষণে বাধা পেলে শ্রাবণ এগিয়ে এসে বল আয়ত্বে নিতে গিয়েছিলেন। বিশ্বনাথ হেডে বিপদমুক্ত করতে যান, তাই বলটা আয়ত্বে নিতে পারেননি শ্রাবণ। উল্টো তার বুকে লেগে বল চলে যায় ফাঁকায় দাঁড়ানো মাজেদের কাছে। ঠান্ডা মাথায় ফাঁকা পোস্টে বল জমা করেন এই বদলি স্ট্রাইকার।
পিছিয়ে পড়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যে চোখ ধাঁধানো গোলে বাংলাদেশকে সমতায় ফেরান মোরসালিন। মাঝমাঠ থেকে লেবাননের এক খেলোয়াড়ের ব্যাকপাসে বল পান মোরসালিন। একাই চলে যান বক্সের সামনে। ডি-বক্সে সামনের জায়গাটা মোরসালিনের বেশ পছন্দের, সেখান থেকেই নিলেন ডান পায়ে বুলেট গতির এক শট। বলটা বাঁক খেলো, লেবানন গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে জড়ালো বাঁ পোস্ট দিয়ে জালে। মাত্র ৯ ম্যাচে চতুর্থ আন্তর্জাতিক গোল হয়ে গেল মোরসালিনের। গোলের পর উদ্দাম উদযাপনে দেখলেন হলুদ কার্ডও।
৮৯ মিনিটে দারুণ এক গোলের সুযোগ মিস করেন মোরসালিন। রফিকের ক্রস পেয়ে যান ফাঁকায় থাকা মোরসালিন। গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি তিনি। তার শট সাইড নেট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। শেষ দিকে বাংলাদেশের রক্ষণে চাপ সৃষ্টি করলেও গোলের দেখা মেলেনি লেবাননের। এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়লো বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে কিংস অ্যারেনায় অপরাজিত থাকার রেকর্ড আরও লম্বা হলো বাংলাদেশের।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা