টেবিল সল্ট বা সি সল্ট ——————————— সমুদ্র থেকে পানি উঠিয়ে রৌদ্রে শুকিয়ে সি সল্ট বা কেল্টিক সামুদ্রিক লবণ বানানো হয়। সামুদ্রিক লবণ স্বাস্থ্যের জন্যে ভালো। এই লবণ শরীরে দ্রবীভূত হয় অন্য যেকোনো লবণের চেয়ে দ্রুত। এটি একটি অপরিশুদ্ধ, অপ্রক্রিয়াজাতকৃত লবণ। এর গন্ধও অনন্য। সামুদ্রিক লবণ সমুদ্রের পানিকে বাষ্পীভূত করে উৎপাদন করা হয়। এরপর তা পরিশোধন করে তাতে আয়োডিনযুক্ত করে বাজারজাত করা হয়। রান্নাবান্নায় স্বাদ ও আয়োডিনের ঘাটতি পূরণের জন্যে টেবিল সল্ট ব্যবহার করা হয়। বাজারে এর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। থাইরয়েড বা কণ্ঠনালী সম্পৃক্ত রোগের জন্যে এই লবণটি প্রতিষেধক স্বরূপ।
কোশার সল্ট ——————- সাধারণ লবণ বা টেবিল সল্ট ও কোশারের মধ্যে আকৃতিগত পার্থক্য ছাড়া আর কোনো বিশেষত্ব নেই। কোশার সল্ট আকৃতিতে একটু বড় বিধায় এটি ব্যবহারে সহজ।
রক সল্ট বা সৈন্ধব লবন —————————————— যাদের সাধারণ লবণ খাওয়া বারণ তাদের জন্যে রঙিন চকচকে পাথরের মতো দেখতে রক সল্ট বা সৈন্ধব লবণ বেশ উপকারী। সৈন্ধব লবণটি সোডিয়ামের সাধারণ আকৃতিতে পাওয়া যায় বলে এটি অন্য লবণগুলোর থেকে একদমই আলাদা দেখতে। নীল, গোলাপি, বেগুনি, কমলা, হলুদ বিভিন্ন রঙের সৈন্ধব লবণ বাজারে পাওয়া যায়।
বিট লবণ বা বিট নুন —————————- যার আরেক নাম সুলেমানি লবণ। এটি এক প্রকারের খনিজ লবণ। সাধারণত বিট লবণ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল এর কাছাকাছি হিমালয় লবণ সমৃদ্ধ এলাকায় মাটির নিচ হতে পাথর আকারে উত্তোলন করা হয়।
সোডিয়াম সালফেট সমৃদ্ধ ঔষধী গুণের এই লবণ রূপ চর্চার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বিট লবনের স্বাদ সাধারণ লবনের মতো তবে ক্রিস্টাল গুলো একটু বড় হয়। সাধারণ লবনের মত এইখানেও সোডিয়াম ক্লোরাইড থাকে, এর সাথে আরো যুক্ত হয় আয়রণ সালফাইড যা লবণটির ধুসর রং আনতে সাহায্য করে, এবং আরেকটা হাইড্রোজেন সালফাইড যার কারণে একটা কড়া গন্ধ উৎপন্ন হয়।
ব্যাম্বো সল্ট —————- ব্যাম্বো সল্টটি পাওয়া যায় কোরিয়ায়। সেখানেই এটির সৃষ্টি। বাঁশের তৈরি সিলিন্ডার বা চোঙ্গায় রেখে সামুদ্রিক লবণকে ভেঁজে বিশেষ পদ্ধতিতে এই লবণ বানানো হয়। বাঁশের মধ্যে রাখার ফলে এই লবণে বাঁশের কিছু উপাদান চলে আসে এবং এটি নতুন মাত্রা যুক্ত হয়ে ব্যাম্বো সল্টে রূপান্তরিত হয়।
পাথুরে লবণ বা হিমালয়ের গোলাপি লবণ ———————————————————- ‘কালা নামাক’ নামে অপরিশোধিত লবণ পাওয়া যায় হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে। এই লবণ ব্যবহারে যা কিছুই প্রস্তুত করা হোক না কেন তাতে এক ভিন্ন ধরনের সুগন্ধ যুক্ত হয়।
রসুন বা সেলারি লবণ —————————— এই সুগন্ধি লবণ তৈরি হয় টেবিল, পাথুরে বা সামুদ্রিক লবণের সঙ্গে শুকনো রসুন বা সেলারি নামের বিশেষ সুগন্ধিযুক্ত গাছের পাতার মিশ্রণে। তরকারিতে বিশেষ স্বাদ যুক্ত করতে এর জুড়ি মেলা ভার।
আরও পড়ুন : নুনের সাতকাহন – ২
পরিশোধিত আয়োডিন লবণ —————————————- লবণ এর প্রকারভেদ এ আমরা আরো দেখি আপনি হয়ত ইতিমধ্যেই এই লবণ ব্যবহার করছেন। আপনার খাবার টেবিলে হরহামেশাই আয়োডিনযুক্ত এই লবণের উপস্থিতি থাকে। এই লবণ বুদ্ধিবৃত্তিক এবং দৈহিক উন্নয়নের অক্ষমতাগুলো দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই লবণগুলো একটি আরেকটি থেকে খনিজ উপাদানগত ও স্বাদের দিক থেকে পরস্পর থেকে একটু আলাদা। তবে এদের একটিকে আরেকটির চেয়ে বেশি স্বাস্থ্যকর ভাবাটা ভুল হবে।
# মো. আলী আশরাফ খান , লেখক, মহাব্যবস্থাপক (অবসরপ্রাপ্ত), বিসিক।
ফেসবুক পেজ :
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা