ইতালির সিসিলি শহরের লবণের খনি
মো. আলী আশরাফ খান
মানব সমাজে লবণ এলো কী ভাবে
আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে লবণের ব্যবহার। মাঝে মাঝে কারো মনে হয়তো প্রশ্ন জাগতে পারে, কোথা হতে এলো এই লবণ? কবে থেকেই বা মানুষ শিখল এই লবণের ব্যবহার?
প্রশ্নের উত্তর খুজতে গিয়ে দেখা যায়, হাজার হাজার বছর আগে থেকে মানুষ খাওয়ার লবণের ব্যবহার শুরু করে। তবে তখনকার এই লবণ আজকের যুগের সাগরের পানি থেকে পরিশুদ্ধ ও প্রক্রিয়াজতকৃত লবণ নয়। তখন লবণ সংগ্রহ করা হতো খনি থেকে। সেই সময়ের লোকেরা নিজস্ব উপায়ে খনি থেকে লবণ উত্তোলনের প্রক্রিয়া শিখে নিয়েছিল। চীনের সানশি প্রদেশের ইয়ানচুনে এরকম এক খনির কথা জানা যায়। এটাই এখন পর্যন্ত পাওয়া সবচাইতে প্রাচীন খনি যেখান থেকে মানুষ মাটি খুঁড়ে লবণ বের করতে পারতো।
বর্তমানে পোল্যান্ড, তুরস্ক, বলিভিয়াসহ আরও কিছু দেশে এখনও লবণের খনির দেখা মেলে। অস্ট্রিয়ার একটি এলাকার নাম সালজবুর্গ বা সাল্টসবার্গ যার মানে হলো লবণের শহর। এই এলাকাটিতে সতেরো কিলোমিটার জায়গা জুড়ে রয়েছে একটি লবণের খনি। তেমনি সেল্টিক বা স্কটল্যান্ড, গ্রীক এবং মিশরের বিভিন্ন এলাকার নাম হয়েছে এই লবণের কারণে। ইতালির দক্ষিণাঞ্চলে সিসিলিতে অপরূপ ডোরাকাটা লবণের একটি খনি দেখতে পাওয়া যায়। খনিটি প্রায় ২০ কিলোমিটার জায়গা দখল করে আছে। আজ থেকে প্রায় ৫০ লক্ষ বছর আগে ভূমধ্যসাগর আংশিক বা সম্পুর্ণ শুকিয়ে যাওয়ার সময় এই অসাধারণ প্যাটার্নটি তৈরি হয়। পানির বাষ্পীভবনের ফলে পড়ে থাকা লবণই কালক্রমে কালোর মাঝে সাদা ও গোলাকার ডোরা তৈরির মূল কারণ।
ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৩০০ ফুট নীচে ৫ হাজার বছর আগের লবণ খনির খোঁজ পাওয়া গেছে সম্প্রতি তুরস্কে। ধারণা করা হচ্ছে খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০ অব্দে বানানো হয়েছিলো এই লবণ খনি যা আজও ব্যবহারযোগ্য। খনির আসল মালিক ছিলো হিটিসরা, যারা প্রাচীন মধ্যপ্রাচ্যে বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলো, এবং তারা নিজেদের হাতকেই খনি থেকে লবণ তোলার কাজে ব্যবহার করতো। ধারণা করা হচ্ছে এখানে এখনও ১ বিলিয়ন টন লবণ জমা রয়েছে। এখন এখান থেকে প্রতিদিন ৫০০ টন লবণ সংগ্রহ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : নুনের সাতকাহন – পর্ব ১৮
ফেসবুক পেজ :
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা