অনলাইন ডেস্ক
তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় গার্মেন্টস কারখানা খোলা রাখার অনুমতি আমরা পেয়েছি। ক্যাবিনেট সেক্রেটারি জানিয়েছেন, কঠোর লকডাউনের মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিল্প কলকারখানা খোলা থাক
সারাদেশে আগামী সোমবার (২৮ জুন) থেকে কঠোর লকডাউন আসছে। জরুরি সেবা ছাড়া বাকি সবই বন্ধ থাকবে এ সময়।
মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘যানবাহন বন্ধ থাকবে এটা মেনেই কারখানা খোলা থাকবে।’ কীভাবে কারখানা খোলা থাকবে তার একটি রূপরেখা দেন মোহাম্মদ হাতেম। তিনি বলেন, ‘যেসব শ্রমিক বা কর্মকর্তা অথবা দায়িত্বশীল কারখানার দূরে বসবাস করেন, এই কয়দিনের জন্য তারা কারখানার আশপাশে থাকবেন, অথবা কারখানার ভেতরে অবস্থান করবেন। লকডাউন চলাকালে আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে সব কারখানার মালিকদের বিষয়টি আজকেই জানিয়ে দেবো।’
হাতেম বলেন, ‘তবে যাদের পক্ষে কারখানার ভেতরে বা কারখানার আশপাশে থাকা সম্ভব না, তাদের জন্য বিশেষ পাশের ব্যবস্থা করা হবে। সরকার বা প্রশাসন যেন সে ব্যাপারে সহযোগিতা করেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, সরকারও চায় কঠোর লকডাউন চলাকালে চলাফেরা বা মুভমেন্ট সংকুচিত করা। জেলা প্রশাসক, পুলিশের এসপি এবং বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ’র সমন্বয়ে আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে যতটা সম্ভব মুভমেন্ট না করে কারখানা সচল রাখবো। এ জন্য সরকার যাতে সীমিত কিছু গাড়ি মুভমেন্টের সুযোগ করে দেয় এই অনুরোধ থাকবে সরকারের কাছে। পাশাপাশি মালিকদের আমরা অনুরোধ করবো, মিড লেভেল কর্মকর্তাদের এই কয়দিন ফ্যাক্টরির ভেতরে অথবা ফ্যাক্টরির আশপাশে থাকার সুযোগ করে দিতে।’
বিকেএমইএ’র সহ-সভাপতি বলেন, ‘করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের যেকোনও সিদ্ধান্তে আমরা সহমত পোষণ করি এবং সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবো।’
এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ হলে শ্রমিকরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে গ্রামে যেতে চাইবে, এ কারণে গার্মেন্টস খোলা রাখতে হবে। কারখানা চালু রাখার জন্য যেসব কর্মকর্তার প্রয়োজন হবে, এই কয়দিন তারা হয় কারখানার আশপাশে থাকবে, অথবা কারখানার ভেতরে অবস্থান করবে। আর যাদের পক্ষে কারখানার ভেতরে বা আশপাশে থাকা সম্ভব হবে না, তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করতে হবে।’
এর আগে শুক্রবার (২৫ জুন) বিজিএমইএ’র সভাপতি বলেন, ‘শাটডাউন বা লকডাউন যেটাই হোক, আমি মনে করি, তৈরি পোশাক কারখানা এই লকডাউনের বাইরে থাকবে। কারণ, তৈরি পোশাক কারখানা যদি বন্ধ করা হয়, তাহলে গার্মেন্টস কর্মীরা গ্রামে যাওয়ার চেষ্টা করবে, বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে।’
তিনি বলেন, ‘এটা সবাই জানে, ছুটি পেলেই শ্রমিকরা গ্রামের দিকে রওনা দেন। এতে করোনার প্রকোপ আরও ছড়িয়ে পড়বে। গ্রাম-শহর একাকার হয়ে যাবে। এছাড়া এই সময় অর্থনীতির চাকা সচল রাখার জন্য গার্মেন্টস কারখানা খোলা রাখা জরুরি।’ তিনি উল্লেখ করেন, সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করলে কারখানা খোলা রাখাই ভালো হবে। এ ছাড়া অধিকাংশ শ্রমিক যেহেতু কারখানার কাছেই থাকেন, ফলে তাদের যানবাহনের প্রয়োজনীয়তা নেই।’
ফারুক হাসান বলেন, ‘কারখানা বন্ধ রেখে যতটা না উপকার, তার চেয়ে খোলা রাখাই বেশি উপকার। বন্ধ হলে অর্ডার বাতিল হবে, বায়াররা চলে যাবে। ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করার সুযোগ কমে যাবে।’
এ পরিস্থিতিতে বিজিএমইএ’র সভাপতি বলেন, ‘গার্মেন্টসগুলোকে লকডাউনের আওতার বাইরে রাখা হলে গার্মেন্টস শ্রমিকরা তুলনামূলক নিরাপদ থাকবে। বিগত দিনে দেখা গেছে, মালিকরা করোনায় আক্রান্ত হলেও শ্রমিকরা হননি।’
এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে আগামী সোমবার (২৮ জুন) থেকে সারাদেশে ৭ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। শুক্রবার (২৫ জুন) সন্ধ্যায় তথ্য অধিদফরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকারের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘এ সময় জরুরি সেবা ব্যতীত সরকারি-বেসরকারি সব অফিস বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া জরুরি পণ্যবাহী ব্যতীত সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে শুধু যানবাহন চলাচল করতে পারবে। জরুরি কারণ ছাড়া বাইরে কেউ বের হতে পারবেন না।’
প্রসঙ্গত, গত বছর করোনা পরিস্থিতিতে কারখানা বন্ধ হওয়ায় গ্রামে ছুটে গিয়েছিলেন হাজার হাজার গার্মেন্টকর্মী। আবার বেতন দেওয়ার খবরে ট্রাকে গাদাগাদি করে ও পায়ে হেঁটে হুড়মুড় করে কর্মস্থলে ফিরে আসেন সবাই। কিন্তু ঢাকায় পৌঁছে তারা জানতে পারেন যে, কারখানা বন্ধ। ফলে ওই সময় হাজার হাজার শ্রমিক অনিশ্চয়তায় পড়েন।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা