ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেন দুর্ঘটনায় গুরুতর আহতদের জীবন রক্ষায় উদ্ধার কাজে হেলিকপ্টার ব্যবহার করে দ্রুত ঢাকায় এনে সিএমএইচ এবং পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবী জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই দাবী জানান ।
বিবৃতিতে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেন দুর্ঘটনায় হতাহতদের দ্রুত উদ্ধার ও বিনামূল্যে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবী জানান। একই সাথে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান।
আরও পড়ুন : আহতদের চিকিৎসায় ১০ হাজার এবং নিহতদের পরিবারকে ১ লাখ টাকা দেবার ঘোষণা রেলমন্ত্রীর
তিনি নিহত প্রত্যেক পরিবারের কাছে রেলওয়ের খরচে লাশ পৌছে দেওয়া এবং হতাহত প্রত্যেক পরিবারের কাছে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবী জানান।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ রেলওয়েতে পদে পদে অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট ও দায়িত্ব পালনে গাফেলতির মহোৎসব চলছে। এখানে দুর্নীতিবাজরা পুরস্কৃত হচ্ছে, সৎ অফিসাররা কোনঠাসা হয়ে পড়ছে। যাত্রী সেবার মান ও ট্রেনের গতি গাণিতিক হারে নিম্নমুখী হচ্ছে।
অথচ সরকার প্রধান তথা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা রেলকে গতিশীল করতে প্রায় অর্ধশত যাত্রীবান্ধব প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্ধ দিয়েছে। সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির বাস্তবায়ন করে এসব প্রকল্পে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য বিবৃতিতে দাবী জানানো হয়।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরো বলেন, এই রেল দুর্ঘটনায় দায়িত্ব পালনে গাফিলতিকারী অথবা ইঞ্জিনিয়ারিং ত্রুটি, ঠিকাদারের দুর্নীতি যারা দায়ী হোক না কেন, জড়িত তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করা হোক।
অন্যথায় বাংলাদেশ রেলওয়ের সামনে আরো বড় বড় বিপদ আসন্ন বলে বিবৃতিতে সতর্ক করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার মন্দবাগ নামক স্থানে দুটি ট্রেনে সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনের ক্রসিংয়ে আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ও তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।এখন ও পর্যন্ত এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ১৬ জন বলে জানা গেছে। তবে, এ সংখ্যা বাড়বে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
নিহতরা হলেন−চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের পশ্চিম রাজারগাঁওয়ের মুজিবুল রহমান (৫৫), হবিগঞ্জের ভোল্লার ইয়াছিন আরাফাত (১২), চুনারুরঘাটের তিরেরগাঁওয়ের সুজন আহমেদ (২৪), মৌলভীবাজারের জাহেদা খাতুন (৩০), চাঁদপুরের কুলসুম বেগম (৩০), হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের আল-আমিন (৩০), হবিগঞ্জের আনোয়ারপুরের আলী মোহাম্মদ ইউসুফ (৩২), হবিগঞ্জের বানিচংয়ের আদিবা (২), ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের ছোয়া মনি (৩), চাঁদপুরের উত্তর বালিয়ার ফারজানা (১৫), চাঁদপুরের হাইমচরের কাকলী (২০), হবিগঞ্জের রিপন মিয়া (২৫), চাঁদপুরের হাইমচরের মরিয়ম (৪), নোয়াখালীর মাইজদির রবি হরিজন (২৩), চাঁদপুর সদরের ফারজানা (১৫), হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের পিয়ারা বেগম (৩২)। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে একজন মুন্না (২৫) কে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।
মরদেহ হস্তান্তরের সময় প্রত্যেকের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার করে টাকা দিচ্ছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শামসুজ্জামান।
ফেসবুক পেজ :
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা