অনলাইন ডেস্ক
সিলেটে পুলিশ হেফাজতে মো. রায়হান আহমদের (৩৪) মৃত্যুর অভিযোগে করা মামলার তদন্ত দুই সপ্তাহের মধ্যে শেষ হচ্ছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।
সোমবার (২ নভেম্বর) রাষ্ট্রপক্ষের এই তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানি মুলতবি করেছেন। ১৬ নভেম্বর রিটের ওপর শুনানির পরবর্তী তারিখ রেখেছেন আদালত।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ রাসেল চৌধুরী। আবেদনের পক্ষে ছিলেন রিট আবেদনকারী আইনজীবী সৈয়দ ফজলে এলাহী।
আদালতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমাকে জানিয়েছেন দুই সপ্তাহের মধ্যে ওনারা (তদন্তকারী কর্মকর্তা) চার্জশিট দিয়ে দেবেন। অ্যাজ আর্লি অ্যাজ পসিবল টাইমের মধ্যে দিয়ে দেবেন। এরপর আদালত মুলতবি করেন। এর আগে ওই ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত এবং ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট করেন আইনজীবী সৈয়দ ফজলে এলাহী।
গত ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে রায়হানকে তুলে নিয়ে সিলেট মহানগরের কোতোয়ালি থানার বন্দরবাজার ফাঁড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরদিন সকালে তিনি মারা যান। নির্যাতনের সময় এক পুলিশের মুঠোফোন থেকে পরিবারকে ফোন করে টাকা চাওয়ার অভিযোগও ওঠে। পরিবারের সদস্যরা সকালে হাসপাতালে গিয়ে রায়হানের লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনার শুরুতে ছিনতাইকারী সন্দেহে নগরীর কাস্টঘর এলাকায় গণপিটুনিতে রায়হান নিহত হয়েছেন বলে প্রচার চালায় ওই ফাঁড়ির পুলিশ। কিন্তু গণপিটুনিস্থল হিসেবে যে স্থানটির কথা বলেছিল পুলিশ, সেখানে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরায় ওই রকম কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি।
পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সিলেট কোতোয়ালি থানাধীন বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনে প্রাণ হারান রায়হান।
এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে সিলেট মহানগর পুলিশের তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পেয়ে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবর ও এএসআই আশেকে এলাহীসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে।
পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম চালাচ্ছে পিবিআই। পরে মরদেহ কবর থেকে তুলে পুনঃময়নাতদন্ত করা হয়। রায়হানের দেহে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন মেলে ফরেনসিক রিপোর্টে।