অনলাইন ডেস্ক
তবে ভুক্তভোগী বয়োবৃদ্ধরা বলছেন, অতীতে এমন পানি সংকট ছিল না। তখন গাছপালা বেশি ছিল। ঝিরি ঝর্ণায় পানি থাকতো। বর্তমানে অবাধে গাছপালা কাটা, পাহাড় কাটা, অবিচারে পাথর উত্তোলনের কারণে ঝিরি ঝর্ণা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এখন আর পানি জমে থাকছে না। দিন দিন বাড়ছে জনসংখ্যা। তাতে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে পাহাড়ে বসবাসরতদের ওপর। তীব্র হচ্ছে সুপেয় পানির সংকট।
একই অবস্থা রাঙামাটি সদর উপজেলার সাপছড়ি ইউনিয়নের যৌথখামার এলকার রূপনা চাকমা জানান, তিনি তার খাবার ও ব্যবহার্য পানি শুষ্ক মৌসুমে সংগ্রহ করেন কুয়া থেকে আর তার বাড়ি থেকে সে কুয়ায় আসতে সময় লাগে প্রায় ১৫-২০ মিনিটি। আর বর্ষায় বৃষ্টির পানিই ভরসা তাদের।
এই পানি সংকট সংকট জুরাছড়ির দুমদুম্যা কিংবা রাঙামাটি সদরের সাপছড়ি ইউয়িনের ধেপ্পাছড়ি, নাড়াইছড়ি, যৌথখামার এলাকার নই সেটি রাঙামাটির জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি, বরকল, কাপ্তাই, বাঘাইছড়ি, লংগদু ও রাঙামাটি সদর উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ি গ্রামগুলোর নিত্য চিত্র এটি।
পবিবেশবাদীরা বলছেন, অপরিকল্পিতভাবে পাহাড়কাটা বৃক্ষনিধন ও পাহাড়ের পাদদেশ থেকে পাথর উত্তোলনের কারণে সুপেয় পানির সংকট দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সংকট নিরসনে পার্বত্যাঞ্চলের জন্য বিশেষ পরিকল্পনা প্রয়োজন। কারণ এই অঞ্চলের গঠন সমতলের চেয়ে ভিন্ন।
রাঙামাটি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সূত্র অনুসারে, রাঙামাটিতে ৬৬ শতাংশ মানুষ সুপেয় পানির আওতায় এসেছে। তবে ২০১১ সালের পর থেকে রাঙামাটিতে কত শতাংশ মানুষ সুপেয় পানির আওতায় এসেছে তার কোনো জরিপ করা হয়নি।
তবে প্রতিষ্ঠানটির দাবি, জেলার সকল মানুষকে সুপ্রিয় পানির আওতায় আনার জন্য কাজ করছেন তারা। পাহাড়ি বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকা ও ডিপ টিউবয়েল বসানো না যাওয়ায় এতে কিছুটা সময় লাগছে। তারা বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে জিএফএস প্রকল্পের মাধ্যমে ঝর্ণার পানি বিশুদ্ধকরণের মাধ্যমে গ্রামে সরবরাহ করণ, যেসব স্থানে সম্ভব সেসব স্থানে প্রতি ১০টি পরিবার নিয়ে নলকূপ স্থাপন প্রকল্প, যেসব স্থানে বিদ্যুৎ নেই সেখানে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে সোলার পাম্প স্থাপন করে পানি সরবরাহ করা। এ ছাড়াও রুলাল ওয়াটার প্ল্যানের মাধ্যমে নিরাপদ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
রাঙামাটির পরিবেশবাদী সংগঠন গ্লোবাল ভিলেজ এর সংগঠক হেফাজত সবুজ জানান, এখানে অপরিকল্পিতভাবে বৃক্ষনিধন ও পাহাড়ের পাদদেশ হতে পাথর উত্তোলনের ফলে পানির প্রাকৃতিক উৎসগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। ফলে ঝিরি ও ঝর্ণাগুলোতে পানি এখন পাওয়া যাচ্ছে না। যে কারণে পাহাড়ি গ্রামগুলোতে পানির সংকট দিন দিন তীব্র হচ্ছে। পাহাড়ের ভৌগোলিক দিক সমতলের চেয়ে ভিন্ন, যে কারণে সমতলের পদ্ধতিতে এখানে সুপেয় পানির সংকট নিরসনের চেষ্টা না করে গবেষণার মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে এই সমস্যা নিরসনে সরকারের উদ্যোগ আশা করছি।
রাঙামাটি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী (সদর) সুব্রত বড়ুয়া জানান, রাঙামাটিতে অনেক এলাকায় পাহাড়ের গঠন পাথরের হওয়ায় আমরা ডিপ টিওবয়েল স্থাপন করতে পারছি না। আবার অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ নাই। যে কারণে সকল মানুষের কাছে সুপ্রিয় বা নিরাপদ পানি নিয়ে আমাদের পৌঁছানো সম্ভব হয়ে ওঠেনি। শতভাগ মানুষের কাছে সুপ্রিয় পানি পৌঁছানোর লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি। সে জন্য জিএফএস, সোলার পাম্পের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, কমিউনিটি ভাগে নলকূপ স্থাপনসহ বেশ কিছু প্রকল্প আমরা গ্রহণ করেছি। পাশাপাশি এই সব প্রকল্পের সুফলও আসতে শুরু করেছে।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা