বুধবার সকাল ১১টায় মরদেহ নেয়া হবে শহীদ মিনারে
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষক, কবি, স্থপতি এবং দেশের অন্যতম মরণোত্তর দেহ ও অংগদানে সহায়ক সংগঠন ‘মৃত্যুঞ্জয়’ এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা-সংগঠক রবিউল হুসাইন চিরবিদায় নিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। তার চিকিৎসক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিয়ান ও কার্ডিওলজির অধ্যাপক ডা. মো. হারিসুল হক বলেন, তার মৃত্যু একলাস্টিক এনিমিয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি রক্তের প্ল্যাটিলেট কমে যাওয়ার কারণে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
তার বন্ধু স্বজনরা জানিয়েছেন, বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকাল ১১টায় তাঁর মরদেহ সাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্যে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হবে।
১৯৪৩ সালের ৩১ জানুয়ারি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা থানার রতিডাঙ্গা গ্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন রবিউল হুসাইন। কুষ্টিয়ায় মেট্রিক আর ইন্টারমিডিয়েট শেষ করে তিনি ভর্তি হন ইস্ট পাকিস্তান ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজির (বর্তমান বুয়েট) আর্কিটেকচার ফ্যাকাল্টিতে।
মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা এবং কর্ম প্রশ্নাতীত। কৃতি স্থপতি হয়েও তিনি আরেকটি পরিচয়ে খ্যাত। তিনি অত্যন্ত শক্তিমান একজন কবি। ছাত্রজীবনেই তার বেশ কিছু লেখা প্রকাশিত হয় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়। কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস মিলিয়ে দুই ডজনের বেশি বই রয়েছে তার। তাঁর কাব্য সিক্ত করেছে অগণিত পাঠকের হৃদয় কয়েক দশক জুড়ে।
মৃত্যুকালে তিনি স্থপতি, কবি, শিল্প-সমালোচক, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক ও সংস্কৃতিকর্মী, শিল্প সমালোচক হিসেবে তাঁর সাফল্য অসামান্য। তিনি বাংলা একাডেমী, একুশে পদক, বাংলা একাডেমী পুরষ্কারসহ বেশ কিছু সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।
রবিউল হুসাইন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ কেন্দ্রের ট্রাস্টি, শিশু কিশোর সংগঠন কেন্দ্রীয় কচি কাচার মেলার যুগ্ম পরিচালক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ট্রাস্টের নির্বাহী সদস্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের পরিচালনা বোর্ডের সদস্য, বাংলা একাডেমির জীবন সদস্য, সহযোগী সদস্য কলকাতা আন্তর্জাতিক শিল্প- সাহিত্য ও সংস্কৃতি ফাউণ্ডেশন, সভাপতি ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ক্রিটিক অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, সাহিত্য পত্রিকার উপদেষ্টা, সদস্য আই এ বি, সদস্য রাজউক, সাবেক সভাপতি স্থপতি অ্যালামনাই পরিষদ, সাবেক সভাপতি (দু’বার) জাতীয় কবিতা পরিষদ, সাবেক সভাপতি (চারবার) বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট (আইএবি) এবং একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী পরিষদের সদস্যও ছিলেন।
দেশের অন্যতম মরণোত্তর দেহ ও অংগদানে সহায়ক সংগঠন ‘মৃত্যুঞ্জয়’ এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সংগঠক ছিলেন রবিউল হুসাইন।
রবিউল হুসাইনের লেখা উল্লেখযোগ্য বই হলো- ‘কী আছে এই অন্ধকারের গভীরে’, ‘আরও ঊনত্রিশটি চাঁদ’, ‘স্থিরবিন্দুর মোহন সংকট’, ‘কর্পূরের ডানাঅলা পাখি’, ‘আমগ্ন কাটাকুটি খেলা’, ‘বিষুবরেখা’, ‘দুর্দান্ত’, ‘অমনিবাস’, ‘কবিতাপুঞ্জ’, ‘স্বপ্নের সাহসী মানুষেরা’, ‘যে নদী রাত্রির’, ‘এইসব নীল অপমান’, ‘অপ্রয়োজনীয় প্রবন্ধ’, ‘দুরন্ত কিশোর’, ‘বাংলাদেশের স্থাপত্য সংস্কৃতি’, ‘নির্বাচিত কবিতা’, ‘গল্পগাথা’, ‘ছড়িয়ে দিলাম ছড়াগুলি’।
ফেসবুক পেজ :
আরও পড়ুন : মেরিটাইম এক্ট প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা