হজের জন্য মুমিনরা যখন মক্কার উদ্দেশে রওনা হয়, তখন নির্দিষ্ট স্থান অতিক্রম করার আগে ইহরাম বাঁধা আবশ্যক। ইহরাম হলো সেলাইবিহীন (পুরুষের জন্য) কাপড়। ইহরাম বাঁধার পর ব্যক্তির জন্য সব ধরনের সাজসজ্জা ও বিলাস-ব্যাসন নিষিদ্ধ। কিন্তু ইসলামী শরিয়ত কেন ইহরাম বাঁধার পর সাজসজ্জা নিষিদ্ধ করল? উত্তর হলো, সাজসজ্জা ও বিলাস-ব্যাসন হজের উদ্দেশ্য-পরিপন্থী। হজের উদ্দেশ্য মানুষের অহংকার, আমিত্ব ও আত্মপ্রদর্শন নিঃশেষ করে দিয়ে সব মানুষকে আল্লাহর বান্দা হিসেবে এক কাতারে নিয়ে আসা। ফলে মুমিন সাজসজ্জার পরিবর্তে ধূলিমলিন অবস্থায় আল্লাহর দরবারে হাজির হবে। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসুল, হাজি কে? তিনি উত্তর দেন, যার মাথার চুল অগোছাল ও জামা-কাপড় ধূলিমলিন হয়েছে। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৯৯৮) মুমিনের এই মলিন অবস্থা মহান আল্লাহ পছন্দ করেন। জাবির (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আরাফার দিন মহান আল্লাহ দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন এবং হাজিদের নিয়ে ফেরেশতাদের সামনে গর্ববোধ করে বলেন, তোমরা আমার বান্দাদের দিকে তাকাও, তারা আমার কাছে আসছে এলোমেলো চুলে, ধুলাবালি গায়ে, আহাজারি করতে করতে দূর-দূরান্ত থেকে উপস্থিত হয়েছে। আমি তোমাদের সাক্ষী করে বলছি, আমি তাদের মাফ করে দিলাম। তখন ফেরেশতারা বলেন, হে আমাদের প্রতিপালক, অমুক বান্দাকে তো বড় গুনাহগার বলা হয় এবং অমুক পুরুষ ও নারীকেও। তিনি (সা.) বলেন, আল্লাহ তখন বলেন, আমি তাদেরও ক্ষমা করে দিলাম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আরাফার দিনের চেয়ে এত বেশি জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়ার মতো আর কোনো দিন নেই। (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস : ২৬০১)